E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ভৈরব-জারিয়া-মোহনগঞ্জ ট্রেনের যাত্রীদের চরম নিরাপত্তাহীনতা

২০১৬ নভেম্বর ১১ ১৪:২০:০৭
ভৈরব-জারিয়া-মোহনগঞ্জ ট্রেনের যাত্রীদের চরম নিরাপত্তাহীনতা

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন থেকে চার রেলপথে যাতায়তকারী ২৮টি ট্রেনের বগিতেই লাইট না থাকায় রাতের অন্ধকারে চরম নিরাপত্তাহীনতায় যাত্রীরা যাতায়াত করছে। বাল্ব, তার থাকলেও নেই বিদ্যুৎ সংযোগ। হকারের কুপিবাতি আর যাত্রীদের মোবাইলের আলোই একমাত্র ভরসা। অন্ধকারে এসব ট্রেনে চলে ছিনতাই, চুরি-ডাকাতি এমকি নারীদের সম্ভ্রমহানির ঘটনাও ঘটছে। জারিয়া-মোহনগঞ্জ ও নাসিরাবাদ ট্রেনে মাদক চোরাচালানের সঙ্গে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের একটি চক্র সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকায়, বিদ্যুৎ সংযোগ থাকলেও লাইন কেটে দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

ময়মনসিংহ রেলওয়ে জংশন থেকে ৫ নভেম্বর/১৬ রাত ১০টায় জারিয়া-ঝাঞ্জাইলের উদ্দেশে ৬টি বগি নিয়ে ছেড়ে আসে জারিয়া লোকাল ট্রেন। ট্রেনের পরিচালকের কক্ষসহ সবকয়টি বগিই ছিলো অন্ধকারে। ট্রেনটি বিপরীতমুখ থেকে ছেড়ে আসা ট্রেনের ক্রসিং করতে গিয়ে অন্ধকালে শম্ভুগঞ্জ স্টেশনে যাত্রীদের অপেক্ষা করতে হয়। হঠাৎ করে ৬নং বগিতে যাত্রীরা চিৎকার করে উঠেন মোবাইল নিয়ে গেছে। এভাবেই অন্ধকারে ছিনতাই করে অন্ধকারেই মিলিয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। ট্রেনটি গৌরীপুর জংশনের আউটার সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকে। জনশ্রুতি রয়েছে, এসব জায়গায় মাদক চোরাচালান চক্র নিরাপদ তাদের মালামাল লোড-আনলোড করে থাকেন।

গৌরীপুর রেলওয়ে জংশন থেকে ৩ নভেম্বর/১৬ রাত ৮টায় ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া মোহনগঞ্জ ট্রেনে বাতি ছিল না। ট্রেনটিতে প্রায় দেড় হাজার যাত্রী ছিল। যাদের অধিকাংশ ছিলো মহিলা। ঠেশাঠেশি মহিলারা অন্ধকারে সম্ভ্রম হারাচ্ছে। সন্ধ্যা ৭টা ১৫মিনিটে ময়মনসিংহের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাওয়া জারিয়া ট্রেনেরও বাতি নেই। একই সময়ে গৌরীপুর থেকে মোহনগঞ্জগামী ট্রেনটিতেও বাতি ছিল না।

জারিয়া ট্রেনের পরিচালক এ প্রতিনিধিকে জানান, একদিনে ময়মনসিংহ থেকে জারিয়ায় এট্রেনটি ৪বার করে আসা-যাওয়া করে। যাত্রী সংখ্যা প্রায় ২২হাজার হবে। সিংহভাগ যাত্রীই টিকেট করে ভ্রমণ করছে। মোহনগঞ্জগামী ট্রেনটিতেও প্রায় ৩হাজার যাত্রী ছিল। একটি কোচেও বাতি ছিল না। অন্ধকারে মহিলা যাত্রীদের সম্ভ্রমহানি আশংকা থাকলেও নিরুপায় যাত্রী বেহাল দশায় ভ্রমণে বাধ্য হচ্ছেন। সম্প্রতি মোহনগঞ্জ থেকে ময়মনসিংহগামী ট্রেনে কয়েক দফা ডাকাতি সংঘটিত ও বিক্ষুব্ধ জনতা শম্ভুগঞ্জে ট্রেনের বগিতে আগুন ধরিয়ে দিলেও আজ পর্যন্ত নেয়া হয়নি নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

গৌরীপুর রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মির্জা মোঃ শামছুল আলম জানান, গৌরীপুর জংশনে প্রতিদিন ভৈবর, চট্টগ্রাম, জারিয়া ও মোহনগঞ্জের ২৮টি ট্রেনের যাত্রী উঠা-নামা করে। চট্টগ্রামগামী নাসিরাবাদ এক্সপ্রেস ও ভৈরব ট্রেনেও বাতি নেই ফলে যাত্রীরা চরম নিরাপত্তাহীনতা চলাচল করতে হচ্ছে। শুধুমাত্র রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনার জন্যই সন্ধ্যার পর অন্ধকার নেমে আসে বলে দাবি করেন গৌরীপুর রেলওয়ে জংশনের ফল ব্যবসায়ী মোঃ নজরুল ইসলাম। গৌরীপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয়ের মুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর বিল্লাল হোসেন জানান, মাঝে মধ্যে অবশ্য বাতি জ্বলে।

গৌরীপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ কাওসার আহমেদ জানান, বাতি না থাকায় অপরাধী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে। পুলিশ টর্চলাইট নিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হয়। মাদক চোরাচালান সিন্ডিকেটের একটি চক্র প্রায়শঃ তার কেটে নিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে ময়মনসিংহ উধ্বর্তন উপসহকারী প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ) মোঃ আসাদুজ্জামান জানান, ট্রেনের তার প্রতিদিনই চুরি হচ্ছে। তারপরেও প্রতিটি ট্রেন যেন বাতি জ্বলে সে ব্যবস্থা করা হবে।

(এসআইএম/এএস/নভেম্বর ১১, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test