E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচন

আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের লবিং- গ্রুপিং, আগ্রহ নেই বিএনপি’র

২০১৬ নভেম্বর ১২ ১৪:৩৫:৫৮
আওয়ামীলীগ প্রার্থীদের লবিং- গ্রুপিং, আগ্রহ নেই বিএনপি’র

রূপক মুখার্জি, লোহাগড়া(নড়াইল) থেকে :রাজনৈতিক লড়াই, সংগ্রাম আর আন্দোলনের সূতিকাগার নড়াইল জেলা। চিত্রা, মধুমতি, নবগঙ্গা ও বানকানা নদী বিধৌত নড়াইল ইতিহাস-ঐতিহ্যের অন্যতম ধারক। আওয়ামীলীগের ‘ঘাঁটি’ হিসেবে এ জেলার পরিচিতি রয়েছে।


আসন্ন নড়াইল জেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সর্বত্র আলাপ-আলোচনা শুরু হয়েছে। নড়াইল জেলা পরিষদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন কে পাচ্ছেন ? তা নিয়ে চলছে জোর জল্পনা-কল্পনা। অফিস পাড়া থেকে শুরু করে চায়ের দোকান সব জায়গায় একই আলোচনা।

এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস প্রায় ৫ বছর দায়িত্ব পালন করছেন, তাকেই আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হবে নাকি মনোনয়ন পরিবর্তন হচ্ছে ? আর এই মনোনয়ন পরিবর্তন হলে কে পাচ্ছেন ? তা নিয়ে যেন সাধারণের আলোচনার শেষ নেই।

অপরদিকে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে জানা গেছে, আগামী ২৮ ডিসেম্বর ২০১৬ বুধবার বাংলাদেশের ৬১টি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে যারা চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করতে ইচ্ছুক তাদেরকে আগামী ১৮ নভেম্বর ২০১৬ তারিখের মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা এমপি’র ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে (বাড়ি-৫১/এ, সড়ক-৩/এ, ধানমন্ডি আ/এ, ঢাকা-১২০৯) আবেদনপত্র, সদ্য তোলা ২ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিসহ জীবন বৃত্তান্ত পাঠানোর জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

জানাগেছে, জেলা পরিষদের নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ ঘোষণা করায় নড়েচড়ে বসছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। এ নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দেওয়া না হলেও থাকবে দলীয় মনোনয়ন আর দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার জন্য ইতোমধ্যে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থীরা। বসে নেই সদস্য এবং সংরক্ষিত সদস্যরাও। তবে বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর নির্বাচন নিয়ে তেমন কোন আগ্রহ নেই বললেই চলে। আগামী ২৮ ডিসেম্বরে নির্বাচনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে নির্বাচন পিছিয়ে আগামী বছরের জানুয়ারি মাসে জেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্টিত হতে পারে।

জেলা পরিষদের নির্বাচনে জনপ্রতিনিধিদের প্রত্যক্ষ ভোটে একজন চেয়ারম্যান, ১৫ জন সাধারণ সদস্য ও ৫ জন সংরক্ষিত সদস্য নির্বাচিত হবেন। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা না হলেও চলছে জোর আলাপ-আলোচনা। কে হচ্ছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আর কাকে করা হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রাথী ?

২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবাস চন্দ্র বোস দায়িত্ব পালন করছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।

এছাড়া দলীয় মনোনয়নের জন্য জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এ্যাডভোকেট সৈয়দ আইয়ুব আলী, নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু, , সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সাঈফ হাফিজুর রহমান খোকন, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক, সাবেক মেয়র ও জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান এডভোকেট গোলাম নবী, লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু।

বর্তমান জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস বলেন, ‘আমি প্রায় ৫ বছর যাবৎ জেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করে আসছি। জেলা পরিষদের পক্ষ থেকে সড়ক উন্নয়ন, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দির, স্কুল, কলেজের উন্নয়ন করা হয়েছে । দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহন করব। দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে আমি আশাবাদী।’

নড়াইল জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি এ্যাডভোকেট সৈয়দ আইয়ুব আলী বলেন, ‘ দলীয় সভানেত্রীর কাছে মনোনয়ন চাইবো। মনোনয়ন পেলে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহন করবো। মনোনয়নের ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান নিলু বলেন, ‘জেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান, সদস্য বিশেষ করে যারা ভোটার তাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে যাচ্ছেন। দলীয় মনোনয়ন চাইবেন। মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন। দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে আমি আশাবাদী বলেও তিনি জানান।’

সাবেক সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট সাঈফ হাফিজুর রহমান খোকন বলেন, ‘দলের কাছে মনোনয়ন চাইব মনোনয়ন দিলে ভাল, না দিলেও নির্বাচনে অংশগ্রহন করব। আমি জেলার প্রতিটি ইউনিয়নে গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছি। ভোটারদের সাড়া পাচ্ছি । আশা করছি নির্বাচনে আমি জয়ী হতে পারব।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক, সাবেক পৌরমেয়র এ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন চাইব মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহন করব।’
লোহাগড়া উপজেলা চেয়ারম্যন ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু বলেন, ‘দলীয় মনোনয়নের ব্যাপারে আশাবাদী। বিভিন্নস্থানে গণ সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক চেয়ারম্যান ও মেম্বররা আমার সাথে রয়েছেন। দলীয় মনোনয়ন পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহন করব।’

সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আওয়ামীলীগ নেতা এডভোকেট গোলাম নবীও প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন । দলীয় সম্মতি পেলে নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন বলে জানা গেছে।
জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি শরীফ মুনির হোসেন বলেন, ‘দলীয়ভাবে আমাদের কাছে এখন পর্যন্তু নির্বাচনের ব্যাপারে কোন নির্দেশনা আসেনি। তবে সদস্য পদে আমাদের দলের প্রার্থীরা গণ সংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের সিকদার বলেন, ‘আগামী জেলা পরিষদ নির্বাচনের বিষয়ে এখন পর্যন্তু কোন দলীয় নির্দেশনা আমাদের কাছে আসে নাই। নির্দেশনা পেলে সে মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। জেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করতে আগ্রহী এমন কোন প্রার্থীও আমাদের সাথে যোগাযোগ করেনি।’ বিএনপি থেকে এ্যাডভোকেট ইকবাল হোসেন শিকদার মনোনয়ন পেতে পারেন বলে দলীয় নেতাকর্মী সূত্রে জানা গেছে। সবকিছু মিলে, জেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে মুখরিত হয়ে পড়েছে সমগ্র নড়াইল জনপদ।


(আরএম/এস/নভেম্বর ১২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

২৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test