E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গোয়ালন্দে ১৬২৭ জেলের ভাগ্যে জোটেনি নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে সরকারি সহায়তা

২০১৬ নভেম্বর ১৩ ১১:২৯:৪০
গোয়ালন্দে ১৬২৭ জেলের ভাগ্যে জোটেনি নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে সরকারি সহায়তা

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী : মা ইলিশ রক্ষার অভিযান কালীন সময়ে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীর উপর নির্ভরশীল ১৬২৭ জেলের ভাগ্যে জোটেনি সরকারি খাদ্য সহায়তা। গত ২ নভেম্বর পর্যন্ত বিগত ২২ দিন নদীতে মা ইলিশ শিকার বন্ধ ছিল। এ সময় উপকুলীয় ১৪টি জেলার জেলেদের জন্য সরকারি খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম থাকলেও রাজবাড়ীর জেলার জেলেরা এ সহায়তা পায়নি।

গোয়ালন্দ মৎস্য অফিস ও জেলেদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত ২২ দিন নদীতে মা ইলিশ রক্ষার জন্য স্থানীয় প্রশাসন নদীতে ব্যাপক অভিযান চালায়। এতে অনেক জেলেকে গ্রেফতার করে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়া হয়। সেই সাথে তাদের আয়ের উপকরণ বিপুল পরিমাণ জাল উদ্ধার করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। অভিযান শেষ হলেও জাল ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় অনেক জেলে পথে বসে গেছে। মাছ ধরতে না পেরে তারা পরিবাব পরিজন নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার পঙ্কজ ঘোষ জানান, গত ২২ দিনের অভিযানে পদ্মা নদীর শুধু গোয়ালন্দ এলাকা হতেই ৭৬ জন জেলেকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে ৫৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড ও ২৩ জনকে আর্থিক দণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। এছাড়া ৩.৩৯ লক্ষ মিটার জাল উদ্ধার করে পুড়িয়ে ফেলা হয়। মাছ উদ্ধার করা হয় ৬৪৩ কেজি। আটক ও সাজাপ্রাপ্ত জেলেদের মধ্যে গোয়ালন্দ ছাড়াও ফরিদপুরের, মানিকগঞ্জ, পাবনা ও রাজবাড়ীর অন্যান্য উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী অনেক জেলে রয়েছেন।

অভিযানের সময় আটক ফরিদপুরের জেলে লুৎফর তালুকদার (২৯) ও রাজবাড়ীর জেলে ইদ্রিস মোল্লা (৩৫), রেজাউল ইসলাম (৪৫)সহ অনেক জেলে জানান, তারা পেটের দায়ে নদীতে মাছ ধরতে নেমেছিলেন। কোনরূপ সাহায্য সহযোগিতা না দিয়ে এভাবে তাদের আটক করে শাস্তি দেয়া ও জাল পুড়িয়ে দেয়া খুবই অমানবিক বলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

গোয়ালন্দ উপজেলার সিনিয়ন মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) সাইদ আহম্মেদ জানান, গোয়ালন্দ উপজেলাতে ১৬২৭ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এদের অধিকাংশই পদ্মা নদীতে মাছ শিকারের উপর নির্ভরশীল। সরকারিভাবে এদের জন্য এখনো পর্যন্ত কোন সহায়তা বরাদ্দ না থাকলেও তারা সরকারি নির্দেশ মোতাবেক মা ইলিশ রক্ষার জন্য নদীতে অভিযান চালিয়ে নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন।

রাজবাড়ী জেলা মৎস্য অফিসার মজিনুর রহমান জানান, এ জেলাতে ৮ হাজার ৯১২ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছেন। এর মধ্যে পদ্মা নদীতে মাছ ধরার উপর সরাসরি নির্ভরশীল ৪ হাজার ৬৪০ জন জেলে। কিন্তু এরা কেউই সরকারি খাদ্য সহায়তার আওতায় আসেনি।

শরিয়তপুর জেলার পর থেকে উপকুলীয় ১৪টি জেলার জেলেরা এ সহায়তার অন্তর্ভূক্ত রয়েছেন। রাজবাড়ীর জেলেদের সহায়তার জন্য তিনি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আবেদন করেছেন। আশা করছি এ জেলাসহ পদ্মা তীরবর্তী অন্যান্য জেলার জেলেদেরকেও সরকার পর্যায়ক্রমে সহায়তার আওতায় আনবেন।





(ডিবি/এস/নভেম্বর ১৩ ,২০১৬ )

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test