E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের চাষের ধান কাটার সিন্ধান্ত প্রশাসনের

২০১৬ নভেম্বর ২২ ২০:০৬:০৮
গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের চাষের ধান কাটার সিন্ধান্ত প্রশাসনের

গোবিন্দগঞ্জ(গাইবান্ধা) প্রতিনিধি :গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে রংপুর চিনিকলের মালিকানাধীন সাহেবগঞ্জ ইক্ষু খামারের বিরোধপূর্ণ জমিতে সাঁওতালদের চাষকৃত ধান উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী কর্তন শুরুর লক্ষে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসন ও চিনিকল কর্তৃপক্ষ যৌথ ভাবে ধানক্ষেত এলাকা পরিদর্শন করে আজ বুধবার থেকে ধান কাটার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।

এসময় গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদ জানান, সাঁওতালরা ইক্ষু খামারের ৪৫ দশমিক ৫ একর জমিতে ধান রোপন করেছিল। এর মধ্যে ৩০ একর জমির ধান কর্তন করার উপযোগী হওয়ায় এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকায় ধান কর্তন শুরু হবে।

তিনি আরো বলেন, মহামান্য হাইর্কোট বিভাগ তার আদেশে সুযোগ রেখেছেন, আসলে তারা যদি নিজেরা ধান কেটে নিতে না চায় তাহলে চিনিকল কর্তৃপক্ষ ধান কাটবে এবং তাদের বুঝিয়ে দেবে।

এখন আমরা ধান বুঝিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে যদি উপযুক্ত কাউকে না পাই তাহলে আমরা চাইবো কোন সমিতির মাধ্যমে যদি চাষ হয়ে থাকে আমরা চাইবো সমিতিকে বুঝিয়ে দিতে, সমিতি না চাইলে, যারা পৃথক পৃথক ভাবে চাষ করেছে তাদের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের বুঝিয়ে দিতে, সেটিও যদি সম্ভব না হয় তাহলে স্থানীয় যারা ওয়ার্ড পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি আছে তাদের দায়িত্বে দিয়ে ধানের নিরাপত্তা বিধান করতে।

এপর্যায়েও যদি নিষ্পত্তি না হয় প্রয়োজনে সরকারী খাদ্য বিভাগের মাধ্যমে ধান শুকিয়ে সংরক্ষণ করা হবে। আর উপযুক্ত আদালত এবিষয়ে যে নিদ্দের্শনা দিবেন তা পরবর্তীতে বাস্তবায়ন করা হবে।

আমরা প্রথমত চাইবো চাষকৃত ধান যেন কোন ভাবেই ক্ষতি না হয়। অর্থাৎ কাঁচা ধান কাটার যেন আমাদের অভিযোগ না আসে অথবা দিনের পর দিন ধান পড়ে আছে আমরা কাটার সুযোগ দেইনি তেমন অভিযোগও যেন না আসে, আদালতের আদেশ যেটি আছে সেটি বাস্তবায়ন হবে।

গাইবান্ধা পুলিশ সুপার আশরাফুল ইসলাম বলেন, ধান কর্তনের সময় যাতে কোন ধরনের আইন শৃংখলার অবনতি না ঘটে তার সকল প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে ।

এসময় অন্যন্যের উপস্থিত ছিলেন, রংপুর চিনিকিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল আউয়াল, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিট্রেট মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আব্দুল হান্নান, থানা ভারপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা সুব্রত কুমার সরকার সহ জেলা, উপজেলা ও চিনিকল প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ। তবে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত সাওতালরা তাদের লাগানো ধান কাটার ব্যাপারে সম্মত হয়নি।

সাঁওতাল পল্লীতে বিচারপতি(অবঃ) মানিকের নেতৃত্বে ’৭১র ঘাতকদালাল নির্মূল কমিটির গণ শুনানী

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাপমারা ইউনিয়নের মাদারপুর ও জয়পুরপাড়া সাঁওতাল পল্লীতে ’৭১ এর ঘাতকদালাল নির্মূল কমিটির উপদেষ্ঠা বিচারপতি শামস উদ্দীন চৌধুরী মানিকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল পরিদর্শন ও গণশুনানী করেন । গণ শুনানীতে ক্ষতিগ্রস্থ বাঙ্গালী ও সাঁওতালরা গত ৬নভেম্বর তাদের উপর বিভিন্ন নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন প্রতিনিধি দলের কাছে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিচারপতি সোবহান, মুক্তিযুদ্ধকালীণ সময়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মাহাবুবুর রশিদ, ’৭১ এর ঘাতকদালাল নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল, ব্যারিষ্টার নাদিয়া মানিক চৌধূরী ও ব্যারিষ্টার বায়োজিদ প্রমুখ।

শেষে সাওতালদের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের নিকট ৩শ’ পিচ কম্বল ও নগদ দেড় লক্ষ টাকা হস্তান্তর করা হয়।

১জন আটক

এদিকে গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জ ইক্ষুখামার এলাকায় সাঁওতালদের ওপর হামালা, লুটপাট ও ঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গত সোমবার রাতে রতন নামে আরো ১জনকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক সোহেল রানা রতন (২৫) মাদার পুর গ্রামের অজিজার রহমানের পুত্র । রতন স্থানীয় ছাত্রদলের নেতা বলে তার পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে।

ক্ষতিগ্রস্থ সাঁওতালদের পক্ষে মামলা দায়েরের পরপরই থানা পুলিশ অভিযান শুরু করে এখন পর্যন্ত ঘটনার সাথে জড়িত অভিযোগে মোট ১৭ জনকে গ্রেফতার করা হলো। গোবন্দগঞ্জ থানার এআ্ই আব্দুল গফুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।



(এসআরডি/এস/নভেম্বর ২২, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test