E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সমাজসেবার অনুমোদন নিয়ে ব্যাংকিং কার্যক্রম

গৌরীপুরে কোটি টাকা নিয়ে এনজিও কর্মকর্তারা উধাও!

২০১৬ ডিসেম্বর ২৯ ২২:১০:২৮
গৌরীপুরে কোটি টাকা নিয়ে এনজিও কর্মকর্তারা উধাও!

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি :‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার’ অনুমোদিত লিখে সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধিত ডৌহাখলা সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা (রেজিঃ নং- ম-০১৬৭৭) নামের একটি এনজিও ময়মনসিংহের গৌরীপুরের সহসাধিক গ্রাহকের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে কর্মকর্তারা উধাও হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর/১৬) টাকা ফেরতের দাবিতে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকরা বিক্ষোভ মিছিল ও এনজিও’র কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করে। তবে এখনও টনক নড়েনি সমাজসেবা দপ্তরের অনুমোদনকারী কর্মকর্তাদের!

ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহক ও এলাকাবাসী জানায়, সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে সমাজ উন্নয়নের নামে এ সংগঠনটি গ্রাহকদের অধিক মুনাফার প্রলোভন দিয়ে প্রতি মাসে ১হাজার, ২হাজার ও ৫শ টাকা জামানত নেয়। যা ১০বছর, ১৫বছর ও ২০বছর মেয়াদী আমানত। এ প্রকল্প খাতে ৩৪জনের নিকট থেকে প্রায় ২৬লক্ষ টাকা জামানত সংগ্রহ করে। সঞ্চয় ও ঋণদান কর্মসূচীর অধিনে ৩৪টি ক্ষুদ্র সমিতির মাধ্যমে ৮৪০জন গ্রাহকের নিকট থেকে গড়ে ৪হাজার ৫শ টাকা করে ৩৭লক্ষ ৮০হাজার টাকা সঞ্চয় সংগ্রহ করেছে।

দৈনিক ও সাপ্তাহিক ভিত্তিতে ১হাজার ২৭০জন গ্রাহকের নিকট থেকে প্রায় ২২লক্ষ টাকা সঞ্চয় সংগ্রহ করেছে। ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকদের বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর/১৬) টাকা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও কোন কর্মকর্তাই এনজিও’র কার্যালয়ে আসেনি। ফলে বিক্ষুব্দ গ্রাহকরা ডৌহাখলা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল ও এনজিও কার্যালয়ের সামনে সঞ্চিত অর্থ অবিলম্বে ফেরতের দাবিতে সমাবেশ করে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন ছাড়া এ ধরনের সঞ্চয় সংগ্রহ সম্পূর্ণ অবৈধ উল্লেখ করে বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন গৌরীপুর শাখার সাধারণ সম্পাদক মোঃ রইছ উদ্দিন জানান, দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থদের টাকা ফেরত দিতে অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ ও সংস্থা ব্যর্থ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

সংবাদপত্রের এজেন্ট মোঃ সাইদুর রহমান জানান, তিনিসহ তার এলাকার প্রায় ২শ গ্রাহক এ সংস্থার টাকা জমিয়ে আজ নিঃস্ব।

সমাবেশে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকরা জানান, ৭/৮মাস যাবত এনজিও’র দরজা তালা ঝুলছে। কর্মকর্তারা টাকা ফেরতের তারিখ দেয়, কেউ অফিসে আসে না। ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহক সভায় জানান রোমেলা আক্তারের ৪হাজার টাকা, খোকন সরকারের ২৮হাজার ৫শ টাকা, পলাশের ১৫৯৫ টাকা, লিটনের ৫১০০টাকা, স্বপ্নার ১২হাজার, রিমা রানীর ৩৬শ টাকা, শামসুন্নাহারের ১৬৩৮ টাকা, আব্দুল মান্নানের ২৩০৭টাকা, নজরুল ইসলামের ৫০হাজার টাকা জমা রয়েছে।

সংস্থার কার্যালয়টি ৩/৪যাবত বন্ধ উল্লেখ করে সংস্থার চেয়ারম্যান পানাটী গ্রামের মোঃ জিন্নত আলীর পুত্র মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, ঋণদান কর্মসূচীর অধিনে গ্রাহকদের নিকটও অর্থ রয়েছে, জামানতকারী অর্থ দ্রুত ফেরত দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোঃ মাজহারুল ইসলাম জানান, সমাজসেবার নিবন্ধন নিয়ে সঞ্চয় ও ঋণদান কার্যক্রম অবৈধ। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এনজিও ফোরামের সভাপতি ইউএনও মর্জিনা আক্তার বলেন, ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকের টাকা ফেরতের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। সমাজসেবার নামে দরিদ্র মানুষের অর্থলুট বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ফকির।




(এসআইএম/এস/ডিসেম্বর ২৯, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test