E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুয়াকাটায় দু’দিনব্যাপি জল ও জনতন্ত্র সম্মেলন শুরু

২০১৭ জানুয়ারি ২৫ ১৮:৫১:৩৪
কুয়াকাটায় দু’দিনব্যাপি জল ও জনতন্ত্র সম্মেলন শুরু


কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : নদী ও পানির অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশে এখনও জনঅংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি। আইনের সীমাবদ্ধতা, সাধারণ মানুষের চিন্তা ও মতামতকে কম গুরুত্ব দেয়ার কারণে এই পরিস্থিতি। ফলে দেশের ভেতরে পানির জন্য হাহাকার, দখল ও দূষণ। আঞ্চলিকভাবে পানি অধিকার বঞ্চিত বাংলাদেশ।

বুধবার পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় দু’দিনব্যাপি ‘জল ও জনতন্ত্র’ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন পানি ও নদী বিশেষজ্ঞরা।উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘জল ও জনতন্ত্র’-এর ধারণাপত্র এবং সাম্প্রতিক একটি গবেষণার চিত্র তুলে ধরেন একশনএইড বাংলাদেশের ম্যানেজার শমসের আলী।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘নদীর অধিকার না থাকা মানে নদীকে মেরে ফেলা। ভোট দেয়ার মতো পানি পাবার অধিকার মানুষের রয়েছে। তাই পানি বিষয়ে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’ নদীর পরিস্থিতির উন্নতিতে আমাদের দেশের রাজনীতি একটি বড় বিষয়। সেখানেই পানির অধিকার রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে।

অনুষ্ঠানের সঞ্চালক একশনএইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘বাংলাদেশে যত উন্নয়ন বা উন্নয়ন চিন্তা হয়েছে, তার পুরাটাই জমিকেন্দ্রিক। উন্নয়ন ভাবনায় পানি কিংবা নদীর গুরুত্ব দেয়া হয়নি। ফলে নদী মরে যাচ্ছে, ভাঙছে, হারিয়ে যাচ্ছে। সমস্যায় পড়ছেন নদীপাড়ের মানুষ। প্রভাব পড়ছে গ্রাম থেকে শহরে। তবে দেশের ভেতরে বা আঞ্চলিক কারণে নদীর বিষয়ে সাধারণ মানুষদের সম্পৃক্ত করা হয় না। যে আলোচনাটি হয় তা বিক্ষিপ্ত ও ধারণা প্রসূত।’

একশনএইড ভারত, পাকিস্তান, নেপাল এবং বাংলাদেশ-এর ‘মানুষ ও পানির অধিকার’ নিয়ে একটি গবেষণা করেছে। সেই গবেষণায়ও বলা হয়েছে বাংলাদেশের নদী পাড়ের অধিকাংশ মানুষ মনে করেন, এদেশের পানি ও নদী নিয়ে সমস্যার মূল কারণ ভারত। এই ধারণার কারণ, দু’পাড়ের সাধারণ মানুষের কাছে নদী ও পানি বিষয়ে পরিস্কার ধারণা নেই।

এই প্রেক্ষাপটে দক্ষিণ এশিয়ার পানির সুশাসন বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস্-এর শিক্ষক মেহেরুন্নেসা বলেন, ‘আমরা সব সময় সরকার ও ভারতের দোষ দেই। কিন্তু নদী ও পানি পরিস্থিতি সম্পর্কে আমরা সঠিকভাবে জানি না। নদীদূষণের জন্য আমরা কতটুকু দায়ী তা বুঝতে চাই না। তৃণমূল পর্যায়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে।’

নদীর জনতন্ত্র বিষয়ে ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আইনুন নিশাত বলেন, ‘সমস্যার সমাধানের জন্য যদি সঠিক তথ্য-উপাত্ত নিয়ে উপস্থাপন করতে না পারি তাহলে নীতি-নির্ধারকদের কাছে গুরুত্ব পাওয়া যাবে না। সমস্যার সমাধান আসা উচিত প্রান্তিক মানুষের কাছ থেকেই। কারণ তারাই নদী ও পানি নিয়ে সবচেয়ে বেশি জানে।

তিনি বলেন, ‘পানি ব্যবস্থাপনায় নারীদের ভূমিকা বিশেষভাবে বিবেচনা করতে হবে। কারণ, নারীদের কাছে পানি নিয়ে অনেক চিন্তাশীল ও বাস্তব জ্ঞান আছে। স্থানীয় পর্যায়ের জ্ঞান সঠিক পর্যায়ে কাজে লাগাতে পারলে আমরা ভালো ফল পাবো’।

পানির অধিকার নিয়ে নেপালের মহিলা অধিকার মঞ্চ-এর উপদেষ্টা সাবিত্রি পোখারেল বলেন, অধিকারের বিষয়টি খুবই গভীর একটি বিষয়। পানি অধিকারের বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার আন্তঃদেশীয় সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করার মাধ্যমে সাধারণ মানুষদের সম্পৃক্ত করতে হবে’। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন পানির অধিকার রক্ষায় একটি ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে।

(এমকেআর/এএস/জানুয়ারি ২৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test