E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এবার মাংসভোজী হিংস্র প্রাণির পেটে কুমিরের ১৯ বাচ্চা

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ০৬ ১৬:০৬:৫৭
এবার মাংসভোজী হিংস্র প্রাণির পেটে কুমিরের ১৯ বাচ্চা

বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র থেকে আবারো মারা পড়েছে ১৯টি কুমিরের বাচ্চা। শনিবার ও রবিবার দিবাগত রাতে প্রজনন কেন্দ্রের প্যানে (কৃত্রিম পুকুর) হানা দিয়ে এসব কুমির বাচ্চা খেয়ে ফেলে সুন্দরবনের মাংসভোজী কোন হিংস্র প্রাণী। গত দু’দিনে কুমিরের এই ১৯টি বাচ্চার খন্ডিত দেহাবশেষ উদ্ধার করেছে প্রজনন কেন্দ্রের কর্মকর্তা- কর্মচারিরা।

তবে শনিবার দিবাগত রাতে ১৯টি কুমিরের বাচ্চা খেয়ে ফেলে পার পেয়ে গেলেও রবিবার দিবাগত রাতে আরারো প্যানে কুমিরের বাচ্চা খেতে এসে এবার ক্যামেরা ট্রাপিং’এ ধরা পড়ে গুলিতে মারা গেলো মাংশভোজী এক হিংস্র প্রাণী চিতা বিড়াল (লেপার্ট ক্যাট)। এ নিয়ে গত ৫ দিনের ব্যবধানে ৪৩টি কুমিরের বাচ্চা চুরি ও মাংশভোজী কোন হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে মারা গেলো আরো ১৯টি কুমিরের বাচ্চা। সুন্দরবন বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সুন্দরবনের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি রাতে প্রজনন কেন্দ্রের দুটি প্যান থেকে ৪৩ কুমিরের বাচ্চা পাচার বা চুরির ঘটনা ঘটে। এ সময়ে পাচারকারিরা ৪৩টি কুমিরের বাচ্চার মধ্যে ৯টি কুমিরের বাচ্চা মেরে পরিকল্পিত ভাবে ফেলে রেখে যায়। ওই চুরির ঘটনায় জড়িত থাকায় করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রে বনকর্মী (লস্কর) মাহাবুব হোসেনকে সাময়িক বরখান্ত ও জাকির হোসেন নামের এক অস্থায়ী কর্মচারীকে চাকুরীচ্যুত করা হয়। প্রজনন কেন্দ্রে এই দুই জনের নাম উল্লেখসহ আরো অজ্ঞান পাচারকারীদের নামে ডাকোপ থানায় মামলা করা হয়। কুমিরের বাচ্চা পাচারের ঘটনার রেশ কাটতেনা কাটতেই করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রর কুমিরের বাচ্চাগুলোর প্যানে শনিবার দিবাগত রাতে হানা দেয় মাংশভোজী হিংস্র প্রাণী। মেরে ফেলে ১৯টি কুমিরের বাচ্চা। আবারো কুমিরের বাচ্চা মারা যাবার খবর পেয়ে করমজলে ছুটে আসেন, সুুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. সাইদুল ইসলাম। সাধারণ ডায়রি করা হয় ডাকোপ থানায়। এই ১৯টি কুমিরের বাচ্চা মারা যাবার বিষয়টি নাশকতা বা অন্য কিছু তা জানতে প্যানগুলোর নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি ক্যামেরা ট্রাপিং’ করা হয়। রবিবার দিবাগত রাতে ক্যামেরা ট্রাপিং’এ ধরা পড়ে মাংশভোজী এক হিংস্র প্রাণী চিতা বিড়াল (লেপার্ট ক্যাট)। সাথে-সাথেই গুলি করে মেরে ফেলা হয় চিতা বিড়ালটিকে।

সুন্দরবনের কুমিরের বিলুপ্তপ্রায় লবণ পানির প্রজাতির কুমিরের প্রজনন বৃদ্ধি ও সংরক্ষণের জন্য ২০০২ সালে পূর্ব সুন্দরবনের চাদপাই রেঞ্জের করমজলে প্রায় ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে গড়ে তোলা হয় দেশের একমাত্র এই বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রটি। ৪৩টি কুমিরের বাচ্চা পাচার বা চুরির এবং সর্বশেষ শনিবার দিবাগত রাতে ১৯টি কুমিরের বাচ্চা মাংশভোজী হিংস্র প্রাণীর আক্রমণে মারা যাবার পর বর্তমানে করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্রে রোমিও নামে ১টি পুরুষ, জুলিয়েট ও পিলপিল নামের ২টি মা কুমির ও ২১৫টি বাচ্চা কুমির রয়েছে।

(একে/এএস/ফেব্রুয়ারি ০৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test