E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জীবন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কালাম খান!

২০১৭ ফেব্রুয়ারি ২৭ ১৩:৩১:২৫
জীবন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে কালাম খান!

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : সরকারের ৬৩ কোটি টাকা একটি সিন্ডিকেটের হাত থেকে রক্ষা করতে জেলা প্রশাসনের কাছে তদন্তের আবেদন করায় মারাত্মক নিরাপত্তাহীনতার মুখে পড়েছে আবেদনকারি কালাম খান ও তার পরিবার। সিন্ডিকেট সদস্যদের ভয়ে গত দুই সপ্তাহ যাবৎ বাড়ি ছেরে জীবন নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন কালাম খান। এদিকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসন কর্তৃক পুন:তদন্তের কাজ শুরু করেছে। যাদের সহায়তায় সরকারের কোটি কোটি টাকা লোপাট হওয়ার উপক্রম হয়েছে সেই গণপূর্ত ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের মাধ্যমেই নতুন করে তদন্ত করানোয় বিষয়টিকে হাস্যকর ও প্রহসন বলে মনে করছেন শরীয়তপুরের সচেতন নাগরিক সমাজ।

পদ্মা বহুমুখি সেতু প্রকল্পের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানকল্পে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড এর স্থায়ী সেনানীবাস নির্মানের জন্য পদ্মা সেতু এলাকার জাজিরা পয়েন্টে একটি স্থায়ী সেনানীবাস নির্মানের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। এ জন্য পদ্মা সেতুর জাজিরা অংশের ল্যান্ডিং পয়েন্টের পূর্ব পাশে ১০১ নং নাওডোবা মৌজায় এল এ ৮ নং কেস এর মাধ্যমে প্রায় ১ শত একর ভূমি অধিগ্রহন করা হয়। অধিগ্রহনকৃত ভূমিতে শত শত অবৈধ ঘর নির্মাণ, গাছপালা লাগানো ও পুকুর খনন করে স্থানীয় একটি চক্র। তারা নামে বেনামে, জমির মালিক না এমন ব্যক্তির নাম দেখিয়ে, দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থায়ীভাবে বসবাস করে এমন আত্মীয় স্বজনদের নামে ঘর তোলেন এবং গাছ পালা রোপন করেন। এতে ৩৬৩ জনের নামে ঘর বাড়ি অবকাঠামো ও ১৮৫ জনের নামে গাছ পালার তালিকা প্রনয়ন করে জেলা গণপূর্ত ও বন বিভাগ। তাতে দুই তালিকায় প্রায় ৬৩ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণের মূল্য নির্ধারণ করা হয়।

সরকারের এই কোটি কোটি টাকা সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি জানতে পেরে গত ১৮ জানুয়ারী স্থানীয় মৃত সরল খানের কনিষ্ট পূত্র আবুল কালাম খান বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ক্ষতিপূরণের ন্যায্য টাকা পরিশোধের অনুরোধ জানিয়ে শরীয়তপুরের জেলা প্রশসাক বরাবরে একটি আবেদন করেন। এরপর শরীয়তপুরের গণমাধ্যম কর্মীরা বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে থাকে। গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর জেলা প্রশাসক গণপূর্ত বিভাগ ও বন বিভাগকেই পুন:তদন্তের দায়িত্ব অর্পণ করেন। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে, ৩৬৩ ব্যক্তির নামে ঘর বাড়ি ও অবকাঠামোর ক্ষতিপূরনের চুড়ান্ত মূল্যায়ন ও প্রতিবেদন যে কর্মকর্তা প্রস্তুত করেছিলেন, গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী সেই এ,এস,এম শাহরিয়ারের মাধ্যমেই গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ৩৬৩ জনের অন্তত এক হাজার স্থাপনার পুন:তদন্ত করানো হয় মাত্র তিন ঘন্টায়। এদিন শরীয়তপুরে কর্মরত কয়েকজন সংবাদ কর্মী সেখানে তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে সিন্ডিকেটের সদস্যরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করে। এমনকি সাংবাদিকদের ব্যবহৃত দুইটি মোটর সাইকেল সিন্ডিকেটের ভাড়াটে সন্ত্রাসীরা ভাংচুর করে।

সেদিন সিন্ডিকেট সদস্যরা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদনকারি আবুল কালাম খানের বাড়ির দিকে লাঠি সোটা নিয়ে হামলা করতে উদ্যত হয়। একই দিন তারা কালাম খান সহ তার অপর চার ভাই ও ভাতিজাদের নামে জাজিরা থানায় একটি মিথ্যা চাঁদাবাজির মামলার জন্য অভিযোগ দায়ের করে। থানা তাৎক্ষনিকভাবে মামলা গ্রহন না করলে সিন্ডিকেট সদস্যরা কালাম খানকে জীবন নাশের হুমকি দিতে থাকে। এরপর গত ২ সপ্তাহ থেকে কালাম খান পরিবার পরিজনকে ছেরে জীবনের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।

অপর দিকে ফরিদপুর বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে জেলা প্রশাসক গাছ পালার পূন:তদন্তের দায়িত্ব অর্পণ করেন। ফরিদপুর অঞ্চলের বিভিন্ন জেলার বন বিভাগের ৫ জন লোক তদন্ত করছেন বলে জানা গেছে। ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে বন বিভাগের লোকেরা নাম মাত্র লোক দেখানো পুন:তদন্ত শুরু করেন। ওই দিন রাত ৯ টা থেকে ভোর পর্যন্ত তালিকার ১২৯ নং সিরিয়ালের নাজমূল মোল্যা তার ৬৪ লক্ষ ২০ হাজার টাকা জায়েজ করতে নতুন করে ২ শতাধিক গাছের চারা রোপন করেন। ফলে সুষ্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয়েছে যে, জেলা প্রশাসন তাদের নিজস্ব কোন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বা প্রশাসনের উর্ধ্বতন কোন কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত না করিয়ে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের মাধ্যমেই তদন্ত করিয়ে তদন্তের নামে প্রহসন চালাচ্ছেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ১০ থেকে ১৫ সদস্যের একটি সিন্ডিকেট রয়েছে এই প্রকল্প ঘিরে। তাতে স্থানীয় ঢালী পরিবারের সদস্য সংখ্যাই বেশি। তারা জানান, ঢালী পরিবারের এক প্রভাবশালী সদস্যের ছত্রছায়ায় চালানো হচ্ছে এই সিন্ডিকেট বাণিজ্য। ওই সদস্যর স্বজন মতিউর রহমান চন্নু ঢালী, ছাত্তার মিয়া ঢালী, নুর মোহাম্মদ ঢালী, গোলাম মুর্তজা ফারুখ ঢালী, আবুল কালাম আজাদ রুবেল ঢালী, হিরণ ঢালী, দাদন ঢালী, দেলোয়ার ঢালীই হচ্ছে সিন্ডিকেটের মূল চালিকা শক্তি ।

ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা বিশ্লেষন করে দেখা গেছে, ঘর বাড়ি অবকাঠামোর তালিকার ৩৬৩ জনের মধ্যে প্রায় অর্ধেক লোকই ঢালী বংশীয় এবং তাদের আত্মীয় স্বজন। ঘর বাড়ির তালিকায় একজন উর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তার স্ত্রীর নামে ১২ লক্ষ ২৯ হাজার ৭৭২ টাকার একটি ঘর এবং ৭৫টি মেহগনি, ৬৫টি আম গাছ, ৩৫টি পেয়ারা গাছ, ৮টি নারকেল গাছ ও ১২টি লেবু গাছ দেখিয়ে ৯ লক্ষ ২৩ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। অথচ, এলাকার লোকেরা জানিয়েছেন, ওই কর্মকর্তা নাওডোবা এলাকায় বসবাস করেন না। তারা স্বপরিবারে অন্তত ৪৫ বছর যাবৎ শিবচরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

সরেজমিন অনুসন্ধান ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তথ্য সংগ্রহ পূর্বক জানা গেছে, ঘর বাড়ি অবকাঠামোর তালিকায় বিভিন্ন স্থাপনা কিছুটা দৃশ্যমান স্থাপনা থাকলেও গাছ পালার তালিকা করা হয়েছে সম্পূর্ন ভৌতিক ও কাল্পনিক। তালিকায় দেখা যায়, ১৮৫ জনের মধ্যে যাদের নামে বেশীরভাগ টাকা হাতিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে তারা হলেন, আব্দুল হক মোল্যার ছেলে মো. বাচ্চু মিয়ার নামে ৩৩ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা, কাদির মলঙ্গীর স্ত্রী বানেছা বেগমের নামে ২৩ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা, ইউনুছ শেখের ছেলে ইশ্রাফিল শেখের নামে ২৫ লক্ষ ৪৬ হাজার টাকা, আনিছ মোড়লের ছেলে দেলোয়ার মোড়লের নামে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, হাজী রহমান মোড়লের ছেলে আবিড় মোড়লের নামে ৪৪ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা, মো. ইউছুফ হোসেন ঢালীর ছেলে আবুল কালাম আজাদ রুবেলের নামে ২৭ লক্ষ ৪৫ হাজার টাকা, সালাম মোল্যার ছেলে মাহিন মোল্যার নামে ১১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, খালেক ঢালীর ছেলে লতিফ ঢালীর নামে ২৮ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা, রজ্জব আলী ঢালীর ছেলে রাজ্জাক ঢালীর নামে ৬২ লক্ষ ৭ হাজার টাকা, রাজ্জাক ঢালীর ছেলে হারুন অর রশিদ ঢালীর নামে ১১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা, হাজী মোমিন ঢালীর ছেলে মসজিদ কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন ঢালীর নামে ১৩ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকা, হাজী আমজাদ ঢালীর ছেলে তোফাজ্জেল হোসেন ঢালীর নামে ৭০ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, নান্দু ঢালীর ছেলে ছাত্তার ও হিরণ মিয়া ঢালীর নামে ৫২ লক্ষ টাকা, আব্দুল মজিদ হাওলাদারের স্ত্রী জবেদা বেগমের নামে ১৫ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, মজিদ হাওলাদারের ছেলে ইউছুব হাওলাদারের নামে ২০ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা, আরেফ ঢালীর ছেলে বাবুল ঢালীর নামে ৯ লক্ষ টাকা, আমজাদ ঢালীর স্ত্রী তছিরন বেগমের নামে ৭ লক্ষ ২ হাজার ৫ শত টাকা, খালেক মাদবরের ছেলে দিল ইসলামের নামে ৮ লক্ষ ৮৭ হাজার টাকা, মোজাফ্ফর মাদবরের ছেলে আইউব আলী মাদবরের নামে ৫৪ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা তার স্ত্রী ফাহিমা বেগমের নামে ৪০ লক্ষ হাজার টাকা, লালমিয়া হাওলাদারের ছেলে বাবুল হাওলাদারের নামে ১০ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা, আলম খানের ছেলে আবুল হাশেম খানের নামে ৮ লক্ষ টাকা, মজিদ মোড়লের ছেলে দুদু মিয়া মোড়লের নামে ১২ লক্ষ ১০ হাজার টাকা, সাত্তার মোল্যার ছেলে নাজমুল মোল্যার নামে ৪২ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা, সামসুল হক মৃধার ছেলে আলমগীর মৃধার নামে ২৬ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা, নুর মোহাম্মদ খানের ছেলে বাবুল খানের নামে ৯৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, মাসুদ মিয়ার স্ত্রী ইসমত পারভিনের নামে ৯ লক্ষ ২৩ হাজার টাকা, হাজী নান্দু ঢালীর ছেলে সাত্তার ঢালীর নামে ২৪ লক্ষ টাকা, আব্দুল খালেক ঢালীর ছেলে নুর মোহাম্মদ ঢালীর নামে ২৪ লক্ষ টাকা, আব্দুল মালেকের স্ত্রী হালিমা বেগমের নামে ৮ লক্ষ ৬৭ হাজার টাকা, আমজাদ ঢালীর ছেলে মনির ঢালীর নামে ১৪ লক্ষ ৪২ হাজার ৫ শত টাকা, আমজাদ ঢালীর আরেক ছেলে দাদন ঢালীর নামে ২০ লক্ষ টাকা, আদমালী ঢালীর ছেলে ইউছুব হোসেন ঢালীর নামে ৪০ লক্ষ টাকা, মাইনদ্দিন ঢালীর ছেলে মেজবাউর রহমানের নামে ১৬ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা, মান্নান ঢালীর ছেলে মোশারফ হোসেন ঢালীর নামে ৩৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, কাশেম মাদবরের ছেলে মালেক মাদবরের নামে ২৮ লক্ষ টাকা, মান্নান ঢালীর ছেলে গোলাম মুর্তজা ঢালীর নামে ৩৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, আবুল হোসেন হাওলাদারের ছেলে সালাম হাওলাদারের নামে ৭০ লক্ষ টাকা, মোশারফ হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগমের নামে ১০ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা, মোতালেব ফকিরের স্ত্রী জাহানারা বিবির নামে ৯ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা, ইমারত মুন্সির স্ত্রী শিরিয়া বেগমের নামে ১২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা, মনোরুদ্দিন শেখের ছেলে হাজী মজিদ শেখের নামে ১০ লক্ষ ৩ হাজার টাকা, হাসমত ঢালীর স্ত্রী ইয়ারুন নেছার নামে ৮ লক্ষ টাকা, ইদ্রিস সরদারের স্ত্রী হালিমা বেগমের নামে ১৪ লক্ষ ৮১ হাজার টাকা, হাজী আদম আলী ঢালীর ছেলে হাজী আমজেদ ঢালীর নামে ২৭ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা তার ছেলে দাদান ঢালীর নামে ৩৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, ফজলুর রহমানের স্ত্রী মেরিনা বেগমের নামে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, হালিম হাওলাদারের ছেলে এ্যাডবোকেট আলমগীর হোসেন হাওলাদারের নামে ৪২ লক্ষ টাকা, মাে. শফিউদ্দিনের ছেলে মো. মেজবা উদ্দিনের নামে ২০ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা, শহর আলীর ছেলে আবুল শেখের নামে ১৭ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা, হামেদ শেখের ছেলে লুৎফর রহমানের নামে ১৭ লক্ষ ৬৫ হাজার টাকা এবং রশিদ মুন্সির ছেলে ইউছুব হোসেনরে নামে ৩৩ লক্ষ টাকার গাছ তালিকাভূক্ত করা হয়েছে। এখানে একই ব্যক্তির নাম একাধিক বার এবং স্বামী-স্ত্রীর নামেও ভূয়া গাছ দেখিয়ে কোটি কোটি টাকার তালিকা করা হয়েছে। এই তালিকার বাবুল খান ও আলমগীর মৃধার জমিতে ২ থেকে ৩ বছর বয়সের কিছু মেহগনি গাছের চারা রয়েছে। যে গুলো শুধুমাত্র জ্বালানীর কাজে ব্যহার করা ছারা অন্য কোন কাজে আসবে না। বাকি ১৮৩ জনের তালিকায় সব মিলে ১ লক্ষ টাকার গাছও খুঁজে পাওয়া যাবেনা।

জেলা প্রশাসকের আবেদনকারি কালাম খানের বড় ভাই সালাম খান বলেন, আমাদের এলাকার একটি অপরাধি চক্র সরকারের প্রায় ৬৩ কোটি টাকা ভূয়া ঘর দরজা ও গাছ পালা দেখিয়ে আত্মসাৎ করার চেষ্টা করছে। এ জন্য আমার ছোট ভাই কালাম খান বিষয়টি পূনরায় তদন্তের জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে একটি আবেদন করে। জেলা প্রশাসক পূন:তদন্ত টিম পাঠানোর পর সিন্ডিকেটের লোকেরা আমাদের বাড়িতে হামলা করতে যায়। থানায় আমাদের নামে মিথ্যা মামলা দিতে যায়। আমার ভাইকে পেলে তারা মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। গত ২ সপ্তাহ থেকে আমার ভাই কালাম বাড়ি থেকে তা মা হারা শিশু সন্তানদের ছেরে পালিয়ে বেরাচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে নিরাপত্তা চাই।

শরীয়তপুরের স্থানীয় সাংবাদিক মো. বেলাল হোসেন বলেন, ১৩ ফেব্রুয়ারি আমরা তদন্ত কাজের তথ্য সংগ্রহ করলে সেখানে সিন্ডিকেটের লোকেরা আমাদের উপর হামলা করে। তারা আমাদের পেশাগত কাজে বাধা প্রদান করে। আমাদের দুইটি মোটর বাইক ভাংচুর করে।

শরীয়তপুর জজ কোর্টের বিজ্ঞ আইনজীবী আসাদুজ্জামান জুয়েল বলেন, এতবড় দুর্নীতির তদন্ত যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তাদের দ্বারা করানোটা একটা প্রহসন। এখানে উচিৎ ছিল জেলা প্রশাসনের কোন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট বা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দিয়ে করানো। আসলে লোক দেখানো এই তদন্তে কোন ভাল ফলাফল আশা করা যায়না।

শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক মো. মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, এক ব্যক্তি আমার কাছে একটি আবেদন করেছেন। আমি বিষয়টি গণপূর্ত বিভাগ ও বন বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেছি। তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমানিত হলে ঘর বাড়ি ও গাছ পালার মূল্য নতুন করে নির্ধারণ করা হবে।

(কেএনআই/এএস/ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test