E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মাগুরায় দেশি মাছ শুকানোর ধুম

২০১৭ মার্চ ০৬ ১৫:১৩:৩৬
মাগুরায় দেশি মাছ শুকানোর ধুম

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরার গ্রামে গ্রামে এখন চলছে দেশি মাছ শুকানোর ধুম। অধিকাংশ বাড়িতে শীতের শেষে মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করে রাখেন। খাওয়া চলে বছর জুড়ে। অনেকে আবার শুকনো মাছ বিক্রি করে আয় করেন।

মাঘ-ফাল্গুন মাসে নদী বাঁওড় খাল বিল পুকুর শুকিয়ে যায়। মাগুরা সদর, শ্রীপুর, শালিখা ও মহম্মদপুর উপজেলার সর্বত্র দেশীয় জাতের সুস্বাদু মাছ ধরার ধুম পড়ে। প্রাকৃতিকভাবে প্রজননক্ষম নানা আকার আকৃতি, স্বাদ ও বৈচিত্র্যের দেশীয় জাতের মাছ ধরাকে কেন্দ্র করে চলে উৎসবের আমেজ।

এসময় অনেকে হাতে মাছ ধরেন। আমদানির কারণে বাজারেও দামও কমে যায়। কৃষক পরিবারের গৃহবধুরা ঘরের চালে বা উঠোনে মাচা পেতে মাছ শুকান। দাম বেড়ে গেলে তখন শুকনো মাছ খাওয়া হয়।

চড়া দাম ও ব্যাপক চাহিদা থাকায় এখান থেকে মাছ চালান হচ্ছে রাজধানিসহ বিভিন্ন জেলায়। মাছ ধরা, শুকিয়ে ও বিক্রিকে ঘিরে অনেক পরিবার বাড়তি উপার্জন করেন।
জানা গেছে, এলাকার নদী বাঁওড় খাল বিল পুকুর বর্ষায় প্লাবিত হয়। আষাঢ় মাসে নানা জাতের দেশীয় মাছ ডিম ছেড়ে বংশ বিস্তার করে। এসব মাছের মধ্যে পুটি, স্বরপুটি, কৈ, শিং, শৈল, গজার, টাকি, টেংরা, বাইন, চিংড়ি, বেতরঙ্গি, বাতাসি, বোয়াল ও খৈয়া অন্যতম।

বর্ষায় পানি বাড়ার সাথে সাথে মাছ দ্রুত বড় হয়। এসব মাছের কৃত্রিম প্রজননের প্রয়োজন হয় না। ঔষুধিগুণসম্পন্ন দেশীয় জাতের সুস্বাদু মাছের রয়েছে রোগ নিরাময় ও পুষ্টির ঘাটতি পূরণের ক্ষমতা। নানা প্রজাতির দেশীয় মাছের স্বাদ-গন্ধ ও বৈচিত্র্য ভোলার নয়।

দেখা গেছে, জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের নদী বাঁওড় খাল বিল পুকুর শুকিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে এখন মাছ ধরা চলছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব মাছ বিভিন্ন জায়গায় চালান হচ্ছে। পেশায় জেলে নয় এমন লোকজনও মাছ ধরে ও বিক্রি করে বাড়তি টাকা আয় করেন।

গৃহস্তের বাড়িতে ঢুকলেই নাকে এসে লাগে শুকনো মাছের ঘ্রাণ। চিনের চালে, বাড়ির ছাদে মাচা পেতে মাছ শুকানো হচ্ছে। কেউ আমার দড়িতে গেঁথে সারি করে ঝুলিয়ে মাছ শোকাচ্ছেন। শৈল, টাকি পুটি, বাইন, চিংড়ি ও শিং মাছ বেশি শুকানো হচ্ছে।

মহম্মদপুর উপজেলা সদরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, এক সময় এ এলাকায় মিঠা পানির দেশীয় মাছের প্রাচুর্য ছিল। এখন আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তার পরও গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই মাছ শুকানোর রেওয়াজ আছে।

শালিখার আড়পাড়া বাজারের ব্যবসায়ি পরিমল কুমার সাহা বলেন, ‘বাজারে মাছের আমদানি হলে দাম কমে যায়। দাম বেড়ে গেলে গ্রামের লোকজন শুকিয়ে রাখা মাছ খান।’

সদরের পাইকেল এলাকার গৃহবধু নাজনিন নাহার বলেন, ‘উচ্ছে দিয়ে দেশি শুকনো মাছের ঝোল-এর স্বাদ-ঘ্রাণ ভোলার নয়। নিজেদেও, শহর-প্রবাসের স্বজনদের জন্য তারা প্রতি বছর মাছ শুকিয়ে সংরক্ষণ করেন বলে জানান।’

মাগুরা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র দাস জানান, ‘গ্রামে মাছ শুকানোর রেওয়াজ অনেক পুরনো। শুকনো মাছ অত্যন্ত পুষ্টিগুণ সম্পন্ন।’

(ডিসি/এএস/মার্চ ০৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test