E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ছাত্রীকে পাচারের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষক জেল হাজতে

২০১৭ মার্চ ১৩ ১৭:১২:৪৫
ছাত্রীকে পাচারের অভিযোগে মাদরাসা শিক্ষক জেল হাজতে

মাগুরা প্রতিনিধি : মাগুরায় নবম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে ভারতে পাচারের অভিযোগে আবদুল আলিম নামে এক মাদরাসা শিক্ষককে আটক করে রবিবার জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। সে মাগুরার আড়পাড়া দাখিল মাদরাসার শিক্ষক। অপরদিকে পাচারের শিকার মেয়েটিকে ভারতের হাওড়া পুলিশ উদ্ধার করে স্থানীয় একটি শেলটার হোমের কাছে দিয়েছে বলে জানা গেছে।

শালিখা থানা পুলিশ জানায়, এ উপজেলার আড়পাড়া আইডিয়াল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সীমা বিশ্বাস অন্যান্য দিনের মতোই প্রাইভেট পড়ার জন্য গত ৪ মার্চ সকালে মাদরাসা শিক্ষক আবদুল আলিমের বাড়িতে যায়। কিন্তু মেয়েটি দুপুরের পরও বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা খোজখবর শুরু করে। সীমার বাবা স্থানীয় গ্রামপুলিশ সুবাস বিশ্বাস প্রাইভেট শিক্ষক আবদুল আলিমের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার মেয়ে প্রাইভেট পড়ে ফিরে গেছে বলে জানায়।

এদিকে নিখোঁজ হওয়ার ৫দিন পর ভারতের হাওড়া জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট অনামিকা দলপতি সুবাস বিশ্বাসের মোবাইলে ফোন করে সীমাকে হাউড়া স্টেশনে পাওয়ার খবর জানায়। হাওড়া প্রশাসনের পক্ষ থেকে সীমাকে উদ্ধারের পর স্থানীয় এসএমএন নামে একটি শেলটার হোমের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সীমা সেখানেই অবস্থান করছে বলে জানা গেছে।

সীমার বাবা সুবাস বিশ্বাস জানান, ভারতের ম্যাজিস্ট্রেট অনামিকা দলপতি তার মেয়ের সঙ্গে তাকে কথা বলিয়ে দেওয়ায় মেয়েটিকে উদ্ধারের বিষয়ে তিনি নিশ্চিত হয়েছেন।

সীমা ঘটনার দিন প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার পর মাদরাসা মাস্টার আবদুল আলিম তাকে মাগুরা শহরে নিয়ে যায়। এ সময় তাদের সঙ্গে আরো দুটি ছেলে ছিল। তারা মাগুরা শহরের একটি ওষুধের দোকানে নিয়ে পানির সঙ্গে কিছু খাওয়ানোর পর সীমা অচেতন হয়ে পড়ে। দীর্ঘ সময় পরে সম্বিত ফিরে সে নিজেকে হাওড়া স্টেশনে দেখতে পায়। এ সময় বিপ্লব নামে এক যুবকসহ মোট দুইজন তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। কিন্তু বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় সীমা চিৎকার দিলে সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ তাকে উদ্ধার করে বলে সীমার বাবা সুবাস বিশ্বাস হাওড়া প্রশাসনের ওই ম্যাজিস্ট্রেট ও সীমার কাছ থেকে জানতে পেরেছেন বলে তিনি জানান।

হাওড়া প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট অনামিকা ও মেয়ে সীমার কাছ থেকে পাচারের পুরো বিষয়টি জানতে পেরে সুবাস বিশ্বাস ১১ মার্চ শনিবার মাগুরার শালিখা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। যে অভিযোগের প্রেক্ষিতে শালিখা থানা পুলিশ শনিবারই মাদরাসা শিক্ষক আবদুল আলিমকে আটক করে।

এ বিষয়ে শালিখা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল হোসেন জানান, হাওড়া ম্যাজিস্ট্রেট অনামিকা দলপতির সঙ্গে কথা বলে সীমাকে উদ্ধারের বিষয়টি জানা গেছে। তাদের প্রাথমিক বক্তব্য এবং মেয়েটির বাবার অভিযোগের প্রেক্ষিতে মাদরাসা শিক্ষক আবদুল আলিমকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতারের পর রবিবার তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে এই ঘটনার সঙ্গে আলিম প্রকৃত পক্ষে জড়িত কিনা বা সীমাকে কিভাবে পাচার করা হয়েছে সে বিষয়টি সীমা ফিরে আসার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ভারতের হাওড়া প্রশাসনের হেফাজতে থাকা সীমাকে ফিরিয়ে আনার জন্য আইনী প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। অন্যদিকে অভিযুক্ত শিক্ষক আলিমকে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(ডিসি/এএস/মার্চ ১৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test