E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

ঠিকাদারের গাফিলতিতে সড়ক বেহাল, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

২০১৭ মার্চ ২৭ ১৬:৩০:৪৪
ঠিকাদারের গাফিলতিতে সড়ক বেহাল, দুর্ভোগে লক্ষাধিক মানুষ

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : ছয় মাস আগে সংস্কারের জন্য পিচ ঢালাই তুলে ফেলেছেন ঠিকাদার, কিন্তু কাজ করছেন না। এতে ১১ কিলোমিটার জুড়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে পানি জমে থাকে। এ কারণে ওই সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ভোগে পড়েছে লক্ষাধিক মানুষ।

ঠিকাদারের গাফিলতির কারণে এ দুরবস্থা রায়পুর-হায়দারগঞ্জ নামের এ সড়কের। নিয়মানুযায়ী এক-দেড় কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং তুলে সংস্কারকাজ শেষ করে আবার নতুন করে এক-দেড় কিলোমিটারের কার্পেটিং তুলবেন ঠিকাদার। কিন্তু ওই নিয়ম না মেনে ঠিকাদার পুরো ১১ কিলোমিটারের কার্পেটিং একবারে তুলে ফেলেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে সড়কে এখন যানবাহন চলছে হেলেদুলে। গাড়ি হেলেদুলে চলার কারণে প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়ক অতিক্রম করতে সময় লাগে এক ঘণ্টার বেশি। অনেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার ঘুরে বাবুরহাট সড়ক হয়ে হায়দারগঞ্জ বাজারে যাচ্ছেন।

স্থানীয় পাঁচজন জনপ্রতিনিধি বলেন, দেশে উৎপাদিত সয়াবিনের ৯০ শতাংশ হায়দারগঞ্জ বাজার থেকে বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হয়। বাজারেই গড়ে উঠেছে সয়াবিনের আটটি চাতাল। দেশের খ্যাতনামা সয়াবিন তেল ও পোলট্রি খাদ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখান থেকে সয়াবিন সংগ্রহ করে। অথচ ঠিকাদার গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার করছেন ধীরগতিতে। সড়কের কার্পেটিং উঠিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু কাজ করছেন না। এতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এ বাজারে সয়াবিন নিতে আসা ব্যবসায়ীরাও বিপাকে পড়েছেন।

গত বছরের ৭ সেপ্টেম্বর কাজ শুরু করলেও প্রায় সাত মাসে ১০ শতাংশ কাজও করতে পারেননি ঠিকাদার। ১০ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ। এতে বাড়ছে জনদুর্ভোগ।
রায়পুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিউল আজম সুমন চৌধুরী বলেন, জনদুর্ভোগের কথা চিন্তা না করে ঠিকাদার নিজের ইচ্ছামতো কাজ করছেন। ওই সড়কে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন লক্ষাধিক মানুষ নাজেহাল হচ্ছে। সড়কের হায়দারগঞ্জ এলাকায় কিছু খোয়া দেওয়া হয় নিম্নমানের। রোলার দেওয়ার পর ওই খোয়াগুলো পাউডার হয়ে গেছে।

ঠিকাদার মো. ফরহাদ হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘কার্পেটিং তোলাতে মানুষের দুর্ভোগ হচ্ছে সত্য। কাজটি দ্রুত শেষ করতে মেশিন এনে একবারেই কার্পেটিং তুলে ফেলা হয়েছে। আমরা শ্রমিক বেশি লাগিয়ে কাজটি দ্রুত শেষ করে ফেলব। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই রাস্তার কাজ শেষ হবে। নিম্নমানের কোনো নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হবে না।’
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রায়পুর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের শুরুতে রায়পুর-হায়দারগঞ্জ সড়কটি মেরামতের জন্য আরটিআইপি-২ প্রকল্পের আওতায় এলজিইডি লক্ষ্মীপুর কার্যালয় থেকে দরপত্র আহ্বান করে। ৪ কোটি ১৭ লাখ ৫৫ হাজার ৫৮৯ টাকায় মো. ফরহাদ হোসেনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাছান রুপালী জেবি কাজটি পায়। গত বছরের ১ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এ কাজটি চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার ১০ শতাংশ কাজও করেননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলজিইডি লক্ষ্মীপুর কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, নিয়মানুযায়ী ঠিকাদার এক-দেড় কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং তুলবেন। এক-দেড় কিলোমিটার কাজ শেষ করে আবার নতুন করে এক-দেড় কিলোমিটার কার্পেটিং তুলবেন। এতে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ কম হবে। পুরো সড়কের কার্পেটিং একবারে তুলে ফেললে মানুষের ভোগান্তি বাড়বে।

গত বৃহস্পতিবার ওই সড়কে গিয়ে দেখা গেছে, ১১ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগ অংশই খানাখন্দে ভরা। সংস্কারকাজের জন্য আনা রোলারটি সড়কের এক পাশে পড়ে আছে। কোনো শ্রমিককে কাজ করতে দেখা যায়নি। সড়কের হায়দারগঞ্জ এলাকায় কিছু খোয়া রোলার দেওয়ার পর পাউডার হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রায়পুর উপজেলা প্রকৌশলী মো. আক্তার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, রোলার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ঠিকাদার এক সপ্তাহ ধরে কাজটি বন্ধ রেখেছেন। নিম্নমানের কিছু খোয়া ফেরত দেওয়া হয়েছে।

(পিকেআর/এএস/মার্চ ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test