E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না ঈশ্বরদী বিমান বন্দর চালুর

২০১৭ মার্চ ৩১ ১৮:৩৩:৫০
উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না ঈশ্বরদী বিমান বন্দর চালুর

ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : প্রায়ই নির্মাণাধীন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে হেলিকপ্টার উঠানামা করছে। এখানে রাশিয়ানসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিমান বন্দর চালু না থাকায় পদস্থ কর্মকর্তারা জরুরী প্রয়োজনে বেশী টাকা খরচ করে হেলিকপটার ভাড়া করে বাধ্য হয়ে আসছেন আবার মিটিং বা পরিদর্শন শেষ করে চলে যাচ্ছেন। একই অবস্থা ইপিজেড-এর বিদেশী বিনিয়োগকারীদের। বিমান বন্দর থাকা সত্বেও বিমান উঠানামা না করায় সকলেই তিক্ত ও বিরক্ত হলেও করার কিছুই নেই। অর্থাৎ ঈশ্বরদী বিমান বন্দর চালু অতীব গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু হওয়া সত্বেও চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে না।

লোকসানের অজুহাতে দেড় যুগ বন্ধ থাকার পর দ্বিতীয় দফায় ২০১৩ সালের অক্টোবর চালু হয় পাবনার ঈশ্বরদী বিমানবন্দর। এর সাত মাসের মাথায় একই অজুহাতে ২০১৪ সালের মে মাসে তৃতীয় দফায় বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এর আগে ১৯৬৬ সালে বিমানবন্দরটি চালু করা হয়। এরপর লোকসানসহ নানা অজুহাতে ১৯৮৭ সালে প্রথম দফায় বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেয়া হয়। তৃতীয় দফায় ২৭ মাস বন্ধ থাকার পর বিমানবন্দরটি আবার চালু হবে কিনা সে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এদিকে বিমানবন্দরটি বন্ধ থাকায় ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্প, ইপিজেড, ইক্ষু গবেষণা ইনস্টিটিউট, ডাল গবেষণা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত আসা দেশি-বিদেশি কর্মকর্তারা যাতায়াত সমস্যায় পড়েছেন।

ঈশ্বরদী বিমানবন্দর সূত্র জানায়, ১৯৬০ সালে ৪১২ একর জমির ওপর ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়। ১৯৬৬ সালে কংক্রিটের রানওয়ে তৈরির পর ডিসি-৩ ও এফ-২৭ বিমান উঠা-নামা শুরু হয়। ওই সময় উত্তরবঙ্গে জরুরি অবস্থা মোকাবিলায় আমেরিকান সি-১৩০ বিমানও এ বিমানবন্দরে উঠা-নামা করত। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিমানবন্দরটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ১৯৭২ সালে মেরামতের পর ঈশ্বরদী-ঢাকা-ঈশ্বরদী রুটে বিমান চালু করা হয়। ১৯৮৭ সালে লোকসানসহ নানা অজুহাতে বিমানবন্দরটি বন্ধ করে দেয়া হয়। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কার করে ১৯৯৪ সালের ১৭ জুলাই বিমানবন্দরটি আবার চালু করা হয়। প্রায় তিন বছর বিমান চলাচল অব্যাহত থাকার পর একই অজুহাতে ১৯৯৬ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর পর ২০১৩ সালের ৩০ অক্টোবর তৃতীয় দফায় ঈশ্বরদী-ঢাকা রুটে বিমান চলাচল শুরু হয়। ওই বছরের ১৮ নভেম্বর থেকে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের একটি এয়ারক্রাফট সপ্তাহে দু’দিন ঈশ্বরদী বিমানবন্দরে চলাচল শুরু করে। এর ৭ মাসের মাথায় ২০১৪ সালের ২২ মে ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ কর্তৃপক্ষ প্রথম দিকে বিমানের ত্রুটি সারানো ও পরে রানওয়ের সমস্যার কথা বলে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়।

ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের জনসংযোগ কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, তাদের বিমান চলাচলের জন্য রানওয়ের প্রস্থ একশ’ ফুট হওয়া দরকার, সেখানে রয়েছে ৭৫ ফুট। রানওয়ের প্রশ্বস্ত করার কথা কর্তৃপক্ষকে জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

ঈশ্বরদী বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার জানান, এখানকার রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৪ হাজার ৭শ’ ফুট ও প্রস্থ ৭৫ ফুট। খুব সহসা রানওয়ে সম্প্রসারণের কোনো পরিকল্পনা নেই। ইউনাইটেড এয়ার এ রুটে ড্যাস-৮ বিমান ব্যবহার করত। এ ধরনের বিমান ওঠা-নামা করানোর মতো সক্ষমতা এ বিমানবন্দরের আছে। ঈশ্বরদী বিমানবন্দর অতিস্বত্তর চালুর বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন, ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীফ ।

তিনি জানান, সরকার ইতিমধ্যে ঠাকুরগাঁও, শমশেরনগর ও ঈশ্বরদী বিমানবন্দর চালুর ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছে। কমিটির প্রতিবেদন পেলে এগুলো চালুর উদ্যোগ নেয়া হতে পারে। তিনি আরো জানান, দেশে এখন যে জেট বিমান রয়েছে, এই বিমান উঠানামার জন্য রানওয়ে প্রশস্থ ও বড় করা দরকার। ইতোমধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষা হয়ে গেছে। কাজ অচিরেই শুরু হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(এসকেকে/এএস/মার্চ ৩১, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test