E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়পুরে অস্বাভাবিক লোডশেডিং, জনমনে ক্ষোভ

২০১৭ এপ্রিল ০২ ১৪:৩২:৩১
রায়পুরে অস্বাভাবিক লোডশেডিং, জনমনে ক্ষোভ

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায় গত এক সাপ্তহ ধরে গরমের শুরুতে বিদ্যুতের অস্বাভাবিক লোডশেডিং চলছে। বিদ্যুৎ গেলে যেন আর ফেরার খবর থাকে না। এতে ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে লোকসানের পাশাপাশি স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দিনরাত সমানতালে লোডশেডিং বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে বাড়ছে চরম ক্ষোভ আর অসন্তোস।

গত ২০ মার্চ থেকে বিদ্যুৎ এক ঘন্টার জন্য বিদ্যুৎ আসলেও ৮ থেকে ১০ বার মিসকল দেওয়া ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ীর বিভিন্ন আসবপত্র নষ্ট হচ্ছে। এদিকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবিতে জানিয়ে আসলেও কোনো সুফল আসেনি। তাই দ্রুত এর অবস্থার উন্নতি না হলে ফের গ্রাহকরা বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নামতে পারে রাস্তায়।

এদিকে ২০১৪ সালের ৯ অক্টোবর নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের দাবিতে বিক্ষুব্ধ লোকজন রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয় ভাংচুর করে সামনের সাতটি গাড়িতে আগুন দেয়। এতে কয়েক লাখ টাকার বৈদ্যুতিক মালামালও পুড়ে যায়।

এ সময় লক্ষ্মীপুর-রায়পুর আঞ্চলিক মহাসড়ক, বাসাবাড়ি এবং রাখালিয়া এলাকায় গাছের গুড়ি, ইট ফেলে এবং টায়ার জ্বালিয়ে কয়েক ঘণ্টা অবরোধ করে এলকাবাসী। অবরোধ ও বিক্ষব্ধ গ্রাহকদের নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে। এতে গুলিতে আব্দুল জলিল নামের এক পুলিশ নিহত হয়। এঘটনায় প্রায় ৩ শতাধিক লোকজনের বিরুদ্ধে থানায় পৃথক দুই মামলা হয়।

উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয় সূত্র জানায়, উপজেলায় প্রায় ৪৫ হাজার পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে। পিক আওয়ারে প্রায় ১৯ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু পানপাড়া ও রায়পুরের বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে (সাব স্টেশন) বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে ১২ থেকে ৮ মেগাওয়াট। এতে তেমন বেশি লোডশেডিং হচ্ছে না। তবে বাতাসের কারণে অনেক সমস্য হচ্ছে। তাই লাইনের পাশের গাছগুলোর ডাল কাটা হচ্ছে। এতে কল-কারখানা, ব্যবসা-বাণিজ্য, ব্যাংক-বিমা ও অফিসপাড়াসহ সর্বত্র স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যুৎ সরবরাহে কর্তৃপক্ষ সুষম বন্টন না করে বৈষম্য করছেন। এ জন্য জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং হচ্ছে রায়পুর উপজেলায়। এক ঘণ্টা পরপর দুই ঘণ্টা লোডশেডিং। সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত এটা এখন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিনেও লোডশেডিং থেকে রেহাই নেই। যে এক ঘন্টা দিচ্ছে তাও ওই ঘন্টায় ৮ থেকে ১০ বার মিসকল দেয় কর্তৃপক্ষ।

রায়পুর উপজেলার আলী হয়দর এন্টারপ্রাইজের মালিক সাইফুল ইসলাম মুরাদ বলেন, গরম শুরু না হতেই শহরে বিদ্যুতের লোডশেডিং ভয়াবহ। একবার বিদ্যুৎ গেলে আসার খবর থাকে না। আসলেও ঘন্টায় ১০ থেকে ১২ বার আসা চাওয়া করে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমে আসছে। এ অবস্থার উত্তরণ না হলে গ্রাহকরা বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নামবে।

রায়পুর পৌরসভার মেয়র ইসমাইল খোকন বলেন, বিদ্যুতের অস্বাভাবিক আসা-যাওয়ার কারণে মানুষের ঘুমও হারাম হয়ে গেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা মাসিক সমন্বয় কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। কোনো সুফল মিলছে না। তাই বাধ্য হয়ে পৌরসভার সকল কক্ষে আইপিএস বসানো হচ্ছে।

রায়পুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) সুদাস চন্দ্র রক্ষিত বলেন, অতিরিক্ত বাতাসের কারণে লাইনের পাশে থাকা গাছের ডাল বাড়ি লেগে লাইন বন্ধ হয়ে যায়। তাই একটি ফিডার বন্ধ হলে আবার চালু করা ছাড়া উপায় থাকে না। ঘুরে ঘুরে বন্ধ ফিডারে আবার সংযোগ দিতে কিছু সময় লেগে যায়। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। গাছের ডালগুলো কাটা হচ্ছে। তাই শিগগির সংকট কেটে যাবে বলে আশা করেন তিনি।


(এমআরএস/এসপি/এপ্রিল ২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test