E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

নড়িয়ায় আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০

২০১৭ এপ্রিল ১৬ ১৯:৩৯:৫৮
নড়িয়ায় আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ২০

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ায় অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের ১০টি বসত বাড়ি ও ৫টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় উভয় পক্ষের লোকজন দুই শতাধিক ককটেল বোমার বিষ্ফোরণ ঘটায়। এতে পুরো এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পরে। ঘটনার পর থেকে রাজনগর আন্ধারমানিক বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়।

ঘটনাস্থল থেকে ৬জনকে আটক করেছে নড়িয়া থানা পুলিশ । এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি শান্ত রাখতে এলকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। রবিবার সকালে নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক বাজর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। হামলার ব্যাপারে এক পক্ষ অপর পক্ষের উপর দায় চাপাচ্ছে।

নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার রাজনগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগ নেতা জাকির হোসেন গাজীর সঙ্গে রাজনগর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেম্বার আবু সিদ্দিক খা এবং একই ইউনিয়নের আওয়ামীলীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আবু আলম মাদবর গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে শনিবার বিকালে দুই গ্রুপের লোকজনই রাজনগর আন্ধার মানিক বাজারে মহড়া দেয়। রবিবার সকাল ৭টার দিকে উভয় পক্ষ দেশীয় অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পরে। এক পক্ষ অপর পক্ষের ঘরবাড়িতে ককটেল বোমার বিষ্ফোরণ ঘটিয়ে হামলা চালায়। এর পর দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও শত শত ককটেল বোমার বিষ্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় আন্ধার মানিক বাজার এলাকাসহ আশে পাশ্বের কয়েকটি গ্রামে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। ককটেল বোমার আঘাতে ও হামলায় উভয় পক্ষের আলী আকবর কাজী, রিনা বেগম, রওশনারা বেগম, সম্রাট, সাগর মাদবর, আক্তার হোসেন মীর বহর, শাহিন সরদার, শরিফ মাদবরসহ অন্তত ২০জন আহত হয়েছে।

আহতদেরকে ঢাকা ও শরীয়তপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হয়। হামলাকারীরা আলী আকবর কাজী, সেলিম মালত, শাহিদ মালত, মফিজল মাদবর, দেলোয়ার মীর বহর ও সাত্তার মাদবরের বাড়ীঘরসহ ১০টি ঘরবাড়ী ভাংচুর করে। সংঘর্ষের সময় রাজনগর আন্ধার মানিক বাজারের খলিল মোল্যার তিনটি, মুনসুর মোল্যার একটি ও জমির উদ্দিন মোল্যার একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করা হয়। এতে করে আন্ধার মানিক বাজারের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থাল থেকে ৬জনকে আটক করে নড়িয়া থানা পুলিশ। তবে আটককৃতদের নাম জানা যায়নি। এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত এখনো কোন মামলা হয়নি। এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। নতুন করে সংঘাত এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, খুব সকালে ঘুমে থাকা অবস্থায় ককটেল বোমার শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে আমরা আতংকিত হয়ে পরি। বের হয়ে দেখি শত শত লোকজন লাঠিসোটা ও বালতি ভর্তি ককটেল নিয়ে রাস্তায় ও বিভিন্ন স্থানে তা ফাটিয়ে আতংক সৃষ্টি করছে। বাজারের লোকজন তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে যে যেভাবে পারছে পালিয়ে যায়।

রাজনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ও আওয়ামীলীগ নেতা আবু আলম মাদবর বলেন, ঘটনার সময় আমি এলাকায় ছিলাম না। চেয়ারম্যান আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। চেয়ারম্যানের লোকজনই আমাদের সমর্থকদের বাড়ী ঘরে ককটেল ফাটিয়ে হামলা চালায় এবং ভাংচুর ও মারধর করে।

রাজনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ জাকির হোসেন গাজী বলেন, আমরা ঘুমে থাকা অবস্থায় গোলাম মাওলা মীর বহর, আবু সিদ্দিক খান ও আবু আলম মাদবরের নেতৃত্বে আমার বাড়িতে হামলা করে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এ সময় তারা আমার বাড়িতে গুলি ও ককটেল বোমার বিষ্ফোরণ ঘটায়।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ ইকরাম আলী মিয়া বলেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয় পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় তারা ককটেলের বিষ্ফোরণ ঘটিয়েছে বলে জানতে পেরেছি। হামলাকারীরা কয়েকটি ঘর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের ঘটনা ঘটিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে ৬জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখনো থানায় কোন পক্ষ মামলা দায়ের করেনি।

(কেএনআই/এএস/এপ্রিল ১৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test