E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বান্দরবানের প্রথম কোন জেলা প্রশাসক দুর্গম খুমি পাড়ার উৎসবে

২০১৭ এপ্রিল ১৭ ১৪:০৯:৪৬
বান্দরবানের প্রথম কোন জেলা প্রশাসক দুর্গম খুমি পাড়ার উৎসবে

বান্দরবান প্রতিনিধি : বান্দরবানের প্রথম কোন জেলা প্রশাসক রোয়াংছড়ির দুর্গম সাংকিং খুমি পাড়ার সাংক্রাইং উৎসবে উপস্থিত হয়ে স্বাক্ষী হলেন ইতিহাসের। জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক সাংকিং পাড়ায় আসবেন এই খবরে আশেপাশের আরো ৫টি খুমি গ্রামের লোকজন তাকে দেখার জন্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন।

প্রতিটি ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠির মতো খুমি সম্প্রদায়েরও নিজস্ব সংস্কৃতি রয়েছে। তারা প্রতিবছর এই মাহেন্দ্রক্ষণে সাংক্রাইং উৎসব পালন করে থাকেন খুমিরা। সাংকিং পাড়ার খুমি ছেলে-মেয়েরা সকাল হতে তাদের নিজস্ব পোষাক পরে অনুষ্ঠান স্থলে উপস্থিত হন। লাঠি খেলা, শক্তি প্রদর্শন, সুতা তৈরি, ঘিলা খেলাসহ নানা প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় শিশু কিশোররা। উক্ত সাংক্রাইং অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বান্দরবান জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক। সাংকিং খুমি কারবারীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উৎসবে অন্যান্যের মধ্যে জেলা পরিষদের সদস্য সিং ইয়ং ম্রো, অনলাইন নিউজ পোষ্টাল পাহাড়বার্তা’র সম্পাদক সাদেক হোসেন চৌধুরী, বাংলাভিশন প্রতিনিধি আল ফয়সাল বিকাশ, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি’র ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মোঃ রেজাউল হক, খুমি সম্প্রদায় নেতা সি ইয়ং খুমিসহ স্থানীয় খুমি সম্প্রদায়ের পাড়া প্রধানরা বক্তব্য রাখেন।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, অন্যান্য সম্প্রদায়ের মতো খুমি সম্প্রদায়ের যে সংস্কৃতি আছে তা এ ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে টিকিয়ে রাখতে হবে। পাহাড়ীদের বৈচিত্রময় কৃষ্টি সংস্কৃতি ভাষা আলাধা। তিনি বলেন, পাহাড়ীদের বড় সমস্যা হলো তারা সীমিত পরিবার নিয়ে এক একটি পাড়া তৈরী করে বসবাস করে। ফলে নাগরিক সুবিধা ঠিক মতো পায় না। কয়েকটি পাড়া একত্রিত হলে বড় একটি গ্রামে পরিণত হবে। এই গ্রামে স্কুল প্রতিষ্ঠাসহ পানি সমস্যা সমাধান করা সহজতর হবে। তিনি খুমি পাড়াগুলোর সর্বাত্মক সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন।

জেলা পরিষদ সদস্য সিং ইয়ং ম্রো বলেন, পার্বত্য প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর এমপি পাহাড়ের এমন কোন জায়গা বাকী রাখেন নাই যেখানে উন্নয়ন হয় নাই। এই খুমি পাড়ার যাতায়াত সহজ করার জন্য ৫ কোটি টাকা ব্যয়ে রাস্তা করে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বীর বাহাদুরের উন্নয়ন যে পরিমান হয়েছে তাতে তাকে কারো কাছে ভোট চাইতে হবে না।

পাহাড় বার্তা ডট কম’র সম্পাদক সাদেক হোসেন চৌধুরী বলেন, বীর বাহাদুর এমপি শিক্ষানুরাগী এবং তিনি এই জাতিকে শিক্ষিত করার জন্য পাড়ায় মহল্লায় বিদ্যালয় করে দিয়েছেন, যেখানে হোষ্টেল লাগে সেখানে হোষ্টেল তৈরী করে দিচ্ছেন । আরো উন্নয়নের ধারা অব্যহত রাখার জন্য তিনি আগামী ২০১৯ সালের নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে বীর বাহাদুরকে ভোট দেয়ার আহবান জানান।

আল ফয়সাল বিকাশ বলেন, খুমি পাড়ায় পানি ও বিদ্যালয় সংকট নিত্যনতুন নয়। বিদ্যালয় সংকট নিরসনে হয়তো আগামীতে স্কুলভবন হবে। কিন্তু পানি সংকট নিরসন কঠিন হয়ে দাড়িয়েছে। সামান্য অর্থের লোভে পাথর আর কাঠ বিক্রির কারণে পানির উৎস ধ্বংস হয়ে গেছে। যার কারণে ছড়া বা ঝরনা থেকে পানি পাওয়া যাচ্ছে না। পানির উৎসস্থল নষ্ট না করার জন্য তিনি উপস্থিত সকলের কাছে অনুরোধ জানান।

আলোচনা শেষে খুমি শিল্পীরা মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন এবং বিভিন্ন খেলায় অংশগ্রহনকারী খেলোয়াড়দের পুরস্কার বিতরণ করেন।

উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালে বান্দরবান জেলা ঘোষনা হওয়ার পর থেকে দুর্গমত্তার কারণে কোন জেলা প্রশাসক খুমি পাড়া পরিদর্শনে যান নি।

(এএফবি/এএস/এপ্রিল ১৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test