E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

যৌন হয়রানির অভিযোগে শরীয়তপুরে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত

২০১৭ এপ্রিল ১৮ ১৭:৫৭:৫২
যৌন হয়রানির অভিযোগে শরীয়তপুরে প্রধান শিক্ষককে বরখাস্ত

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সদর উপজেলার ৬৩ নং নিবনোদপুর ঢালীকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম কাওসারের বিরুদ্ধে ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে বরখাস্ত করা হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলে এর তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত হওয়ায় তাকে বরখাস্তের এ সিদ্ধান্ত গ্রহন করে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর উপজেলার এক নিভৃত পল্লী এলাকায় অবস্থিত ৬৩ নং বিনোদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ বদ্যিালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম কাওসার মিলন দীর্ঘ ৫ বছর যাবৎ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে শুরু থেকেই রয়েছে ৪ র্থ ও ৫ম শ্রেণীর ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ। এর আগে ২০১৬ সালে এক শিক্ষার্থীর সাথে আপত্তিকর আচরণ নিয়ে অভিযোগ উঠলে তাকে সামাজিক বিচারে জুতো পেটা করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন এলাকাবাসী। কিন্ত, তার পরে সংশোধন হননি প্রধান শিক্ষক এস এম কাওসার মিলন। প্রধান শিক্ষক চলতি বছরের গত সাড়ে তিন মাসে পঞ্চম শ্রেণীর অন্তত ১০ জন মেয়ে শিক্ষার্থীর সাথে আপত্তিকর আচরণ করেছে বলে জানিয়েছে শিক্ষাথী ও অভিভাবকেরা। প্রধান শিক্ষক মিলন ছাত্রীদের স্কুলের ছাদে ডেকে নিয়ে মোবাইল ফোনে বিভিন্ন পর্ণ ভিডিও দেখিয়ে তাদের সাথে যৌন হয়রানি মূলক আচরণ করে আসছে বলে জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

প্রধান শিক্ষক কর্তৃক যৌন হয়রানির শিকার এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক হাবিবুর রহমান সরদার বলেন, প্রধান শিক্ষক এস এম কাউসার বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের যৌন হয়রানী করে। আমার মেয়ের সাথেও সে আপত্তিকর আচরণ করেছে। এই বিষয়ে আমি বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করি। আমি এই প্রধান শিক্ষকের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার দাবি করি।

অভিভাবক শাহনাজ বেগম, রুনা আক্তার ও আব্দুর রশিদ বলেন, প্রধান শিক্ষক কাওসার আমাদের সন্তানদের সাথে পশুর মত আচরণ করে আসছে। ইতিপূর্বে তার তাকে সামাজিকভাবে বিচার করে সতর্ক করেও দেয়া হয়েছিল। কিন্ত সে তার চরিত্রের পরিবর্তন করেনি। সে ছাত্রীদের সাথে খারাপ আচরণ করে আবার হুমকি দিয়ে বলে, এ ঘটনা কাউকে জানালে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিবে। আমাদের সন্তানেরা এতদিন ভয় লজ্জায় আমাদের কিছু জানায়নি। আমরা এই নর পশুর বিচার চাই।

স্থানীয় ইউপি সদস্য এমদাদ মাদবর বলেন, অভিভাবকেরা তাদের সন্তানকে একজন শিক্ষকের কাছে জিম্মায় রেখে নিশ্চিন্তে থাকতে চান। কিন্তু সেই শিক্ষকের হাতেই যদি শিশু বয়সে একটা মেয়েকে মম্ভ্রম হারাতে হয় তাহলে আমরা নিরাপত্তা পাব কোথায় । প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ যদি সত্যি প্রমানতি হয় তাহলে তাকে এমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে যাতে কোন শিক্ষক ভবিষ্যতে এমন আচরণ করতে সাহস না পায়।

শরীয়তপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা ৬৩ নং বিনোদপুর ঢালী কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ পেয়ে সদর উপজেলার একজন সহকারি শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে সরেজমিন তদন্ত করি। তদন্তে ঘটনার সত্যতা প্রমানিত হওয়ায় ওই প্রধান শিক্ষক এস এম কাওসারকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।

(কেএনআই/এএস/এপ্রিল ১৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test