E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

সাদুল্যাপুরে হাসপাতালেও পুলিশি আতঙ্কে আলিফ!

২০১৭ এপ্রিল ২৩ ১২:৩৫:৩২
সাদুল্যাপুরে হাসপাতালেও পুলিশি আতঙ্কে আলিফ!

গাইবান্ধার প্রতিনিধি : ১৩ বছরের শিশু আহনাফ শাহরিয়ার আলিফ। পুলিশের মারধরে আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। তার চোখে মুখে আতঙ্কের ছাপ। হাসপাতালেও নিরাপদ নয় শিশুটি। পুলিশের প থেকে বিভিন্ন হুমকি দেয়া হচ্ছে।

কনিবার সাংবাদিককে ছবি তুলতে দেখে সে কান্নায় ভেঙে পড়ে। আলিফ গাইবান্ধা সাদুল্যাপুর উপজেলার কিশামত খেজুর গ্রামের সাজু মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় সাদুল্যাপুর মডেল পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র।

আলিফ বলেন, ‘পুলিশ আমার বাবাকে ধরতে এসেছিল। বাড়ির গেটটা একটু দেরিতে খুলে দেয়ার কারণেই তারা আমাকে মারপিট করে। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে আমার মাকে। এখন আবার হাসপাতাল ছাড়তে হুমকি দিচ্ছে এএসআই আরিফ। তিনিই আমার বুকে-পিঠে ও মাথায় আঘাত করেছে। আমি এখন স্কুলে যাইতে পারছিনা।’

স্থানীয়রা জানান, উপজেলার কিশামত খেজুর গ্রামের নজরুল ইসলামের সাথে প্রতিবেশী সোলাইমানের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধ চলে আসছিল। এক পর্যায়ে নজরুল ইসলামসহ চারজনকে আসামি করে সোলাইমান আদালতে মামলা দায়ের করেন। সেই মামলায় আদালত আসামিদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

শুক্রবার মধ্যরাতে সাদুল্যাপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহাবুব আলমের নেতৃত্বে পরোয়ানাভুক্ত আসামি সাজু মিয়াকে ধরতে বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। বাড়ির মূলগেট খুলে দিতে দেরি হওয়ায় সাজু মিয়ার শিশু সন্তানকে বেধরক পিটিয়ে গুরুতর আহত করে পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আরিফ। তারা সাজু মিয়াকে না পেয়ে তার স্ত্রী ও ছেলেকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে মারধর শুরু করে। এতে গুরুতর আহত হয় আলিফ। পরে তাকে সাদুল্যাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে আলিফের মা আশা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘গত শক্রবার গভীর রাতে একদল পুলিশ আমার বাড়িতে আসে। তারা আমার স্বামীকে না পেয়ে আমাকে গালিগালাজ করে। একপর্যায়ে আমার ছেলে আলিফকে এসআই মাহাবুব আলমের নির্দেশে এএসআই আরিফ বেধড়ক মারপিট করে। পরে এই ঘটনা কাউকে না জানাতে নানা ধরণের ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে চলে যায় তারা। এখন এএসআই আরিফ হাসপাতাল ছেড়ে অন্যত্র কোন আত্মীয়ের বাড়িতে চলে যাবার হুমকি দিচ্ছে। কথা না শুনলে আমার স্বামী ও ছেলেকে জেলে পাঠাবে। এখন আমাদের পুলিশি আতঙ্কে দিন কাটছে।’

সাদুল্যাপুর পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক এনশাদ আলী বলেন, ‘আলিফ পুলিশের মারধরে আহত হয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানেও পুলিশ তাদের চিকিৎসায় বাধা দিচ্ছে। এমনকি হাসপাতাল ছাড়তে হুমকি দিচ্ছে।’

সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরহাদ ইমরুল কায়েস ছুটিতে থাকায় কথা হয় ওই অভিযানে নেতৃত্বে থাকা উপ-পরিদর্শক মাহাবুব আলমের সাথে। তিনি ব্রেকিংনিউজকে বলেন, ওই বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ঠিক। তবে সেখানে আলিফকে মারধরের ঘটনা সঠিক নয়।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই আরিফ কথা বলতে রাজি হননি।

গাইবান্ধার পুলিশ সুপার মাশরুকুর রহমান খালেদ বিপিএম বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এখনই সার্কেল এএসপিকে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করতে বলছি। প্রতিবেদন পেলেই এএসআই আরিফসহ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(এসআইআর/এসপি/এপ্রিল ২৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test