E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের তিন বছর

২০১৭ এপ্রিল ২৭ ১৩:৪৪:৩৩
নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের তিন বছর

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি : নারায়ণগঞ্জের আলোচিত সাত খুনের ঘটনার ৩ বছর পূর্ণ হচ্ছে আজ ২৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার)। তবে এখনও থামেনি নিহতের পরিবারের কান্না। মামলায় খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির রায় ঘোষণা হলেও দ্রুত সেই রায় কার্যকরের দাবি নিহতের পরিবারের।

২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল দেশব্যাপী আলোড়িত এ সাত খুনের ঘটনার মামলায় নিহতের পরিবার নিম্ন আদালত থেকে সন্তোষজনক মামলার রায় পেলেও সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

আজকের এই দিনটি নারায়ণগঞ্জের জন্য একটি কলঙ্কের দিন হিসেবে ইতিহাসে লেখা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসী নুর হোসেন অবৈধভাবে অর্থ উপার্জন করে সেই কালো টাকার বিনিময়ে তার স্বামীসহ সাতটি লোককে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। নরঘাতক নুর হোসেনের কারণে আজকে কত লোক স্বামী-সন্তান হারিয়েছে। এতিম হয়েছে তাদের সন্তান। যাদের কারণে সাতটি পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে তাদের যত দ্রুত সম্ভব ফাঁসির দাবি জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আকুল আবেদন করে তিনি বলেন, বাংলার মাটিতে আর যেন কোনো নরঘাতক নুর হোসেন তৈরি না হয়।

নিহত ৭ পরিবারের মধ্যে ড্রাইভার জাহাঙ্গীর, ইব্রাহিম ও নজরুলের সহযোগী তাজুল ইসলামের পরিবার অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছে। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে তাদের। সরকারের কাছে সহযোগিতার দাবি করেছেন তারা।

নিহত কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারের পরিবারের দাবি নিম্ন আদালতের রায় যেন উচ্চ আদালতে বহাল থাকে। রায়টি দ্রুত কার্যকর করে নিহতদের আত্মার শান্তি দেবে এমনটাই দাবি তাদের।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন বলেন, প্রত্যেক আসামির সর্বোচ্চ সাজাসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির রায় হয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা এই রায় দ্রুত কার্যকর করে সর্বোচ্চ আদালত দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন। তাছাড়া হত্যাকাণ্ডের শিকার কয়েকটি অসহায় পরিবার অত্যান্ত মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদেরকে সরকার সহযোগিতা করবেন বলে আমাদের প্রত্যাশা।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী খোকন জানান, সাক্ষ্য প্রমাণ ও যুক্তিতর্ক সম্পন্ন করে আদালত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দিয়েছেন। এই রায় উচ্চ আদালতে বহাল থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। যত দ্রুত সম্ভব রায় কার্যকর করে সরকার নজির স্থাপন করবে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ আদালতে একটি মামলায় হাজিরা দিয়ে ফেরার পথে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের লামাপাড়া এলাকা থেকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। অপহরণের তিনদিন পর শীতলক্ষ্যা নদীর বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া শান্তিরচর এলাকায় অপহৃত সাতজনের মরদেহ ভেসে ওঠে।

এই ঘটনায় নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটি ও আইনজীবী চন্দন সরকারের জামাতা বিজয় কুমার পাল বাদী হয়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ৩৩ মাস পর উক্ত রায় দেন আদালত।

নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ১৬ জানুয়ারি নারায়ণগঞ্জের জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২৬ জনকে মৃত্যুদণ্ড ও অপহরণের ঘটনার জড়িত থাকার অভিযোগে ৯ জনকে ১০ বছর এবং আলামত নষ্ট ও ধ্বংস করার চেষ্টার অভিযোগে ৭ বছর করে কারাদণ্ড প্রদান করেন। বর্তমানে রায়টি আপিল বিভাগে চূড়ান্ত নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

(ওএস/এসপি/এপ্রিল ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test