E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নির্যাতিত মেয়েটি শুনবেনা আর মা ডাক, অবশেষে মামলা

২০১৭ মে ০৩ ১৩:২৬:১৩
নির্যাতিত মেয়েটি শুনবেনা আর মা ডাক, অবশেষে মামলা

হালুয়াঘাট (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : নিজের পছন্দে বিয়ে না করানোই বিয়ের রাতেই অঘটন ঘটালেন পাষন্ড স্বামী। প্রথমে খাওয়ালেন ঘুমের বড়ি, তারপর অচেতন অবস্থায় চালান মধ্যযোগীয় কায়দায় নির্যাতন। নিজ স্ত্রীর গোপনাঙ্গে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ক্ষতবিক্ষত করে পাঠালেন হাসপাতালে।

মুমূর্ষ অবস্থায় ৮ দিন হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে কোনরকম সুস্থ হয়ে নিজ পিত্রালয়ে ফিরলে প্রকাশ ঘটে আসল ঘটনার। শেষ পর্যন্ত গড়ালো মামলায়।

৩০ এপ্রিল রবিবার নির্যাতিতা মেয়ে ছালমা আক্তার(২৩) বাদী হয়ে বখাটে সোহাগকে একমাত্র আসামী করে ময়মনসিংহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলা দায়ের করেন যার নং ১১৪/১৭।

সরেজমিনে হালুয়াঘাট উপজেলার আমতৈল গ্রামের ছাইদুল ইসলামের নির্যাতিতা কন্যা সালমা আক্তারের (২৩) সাথে কথা বললে তিনি জানান, গত ১৩ এপ্রিল বৃহঃপতিবার উভয় পরিবারের সম্মতিক্রমে বিয়ে হয় ফুলপুর উপজেলার ইমাদপুর গ্রামের আব্দুল হেকিমের পুত্র সোহাগের(২৩) সাথে।

সালমা তার স্বামী সোহাগের বরাত দিয়ে জানান, সোহাগ তার পিতামাতার পছন্দে বিয়ে করেছেন। তার বউ পছন্দ হয়নি। তাই ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার বিয়ের প্রথম দিন থেকেই সোহাগ উল্টা-পাল্টা শুরু করে। বউকে তালাক দেওয়ার ঘোষণা দেন। একপর্যায়ে বউকে ফেলে রেখে ঢাকায় চলে যাবে বিধায় বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে যান। অতঃপর সোহাগের মামা ও পিতা মিলে খোঁজাখোজি করে ফুলপুর বাস টার্মিনাল থেকে সোহাগকে ধরে এনে মারধর করেন। একপর্যায়ে সোহাগকে সংসার করাতে রাজী করান। কিন্তু চোরে শুনেনা ধর্মের কাহিনী।

ছালমা আরো জানান, ঐ দিন রাত আনুমানিক ৩ টার সময় সোহাগ বাহির থেকে দুটি বড়ি নিয়ে ঘরে প্রবেশ করে ফুসলিয়ে জোর করে ছালমাকে বড়ি খাওয়ান। কিছুক্ষন পরেই অচেতন হয়ে পড়েন কনে ছালমা আক্তার। তারপর ঘটান বাকী ঘটনা। সকাল বেলায় ছালমার জ্ঞান ফিরলে দেখেন পুরো ঘরে রক্ত ছড়িয়ে রয়েছে। তা দেখে চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে ফুলপুর উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হলে ১৫ এপ্রিল শনিবার কর্তব্যরত চিকিৎসক ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

কনের পিতা ছাইদুল ইসলাম বলেন, মেয়েকে সুস্থ করে তুলতে অস্রোপাচার করতে হয়েছে। শরীরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়াই বাহির থেকে রক্তও দিতে হয়েছে।

কর্তব্যরত ডাক্তারের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ছালমার অবস্থা এতই বেগতিক ছিলো যে ডাক্তারকে ছালমার ইনজুরির স্থলে চারটি সেলাই করতে হয়েছে। ভবিষ্যতে কেন ছালমা আর কোনদিন মাতৃত্বের স্বাধ গ্রহণ করতে পারবেনা এমনটিই জানিয়েছেন নির্যাতিতা ছালমার পরিবার।

তাদের দাবি সোহাগ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিপক্ষ সোহাগ, তার মাতা ও সোহাগের মামা রোবেলের সাথে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ইনজুরির বিষয়টি ইচ্ছাকৃতভাবে করেননি বলে জানান।

তবে ডাক্তার ছালমাকে তিনটি সেলাই ও তার শরীরে রক্ত ভরা হয়েছে তা স্বীকার করেন। তারা জানান, সোহাগের পরিবারের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ঘটনাটি নিস্পত্তি করার জন্য।


(জেসিজি/এসপি/মে ০২, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test