E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গৌরীপুরে খালু কতৃক ভাগ্নিকে ধর্ষণের অভিযোগ

২০১৭ মে ০৮ ১৩:১৮:১৮
গৌরীপুরে খালু কতৃক ভাগ্নিকে ধর্ষণের অভিযোগ

গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে খালু কতৃক ভাগ্নিকে ধর্ষণের অভিযোগে উপজেলার বোকাইনগর ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের মেম্বার আশরাফুল হক এমদাদ (৪০) এর নামে শনিবার (৬মে) রাতে গৌরীপুর থানায় মামলা দায়ের করেছে ভিকটিমের চাচা সুমন মিয়া।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার আহম্মদ জানান, রবিবার (৭মে) সকালে ভিকটিমের জবানবন্দী ও ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য পুলিশ প্রহারায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। আসামী গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

মামলা সূত্র ও ভিকটিম ( নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোছাঃ খাদিজা আক্তার, পিতা- মৃত বাচ্চু মিয়া, সাং- ভাদেড়া বেতান্দর) জানায়, তার মেম্বার খালুজী (ছোট খালার জামাই) আশরাফুল হক এমদাদ তার বাড়িতে নিয়ে হত্যা হুমকী দিয়ে ১৪এপ্রিল তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ধর্ষণে অন্তঃস্বত্ত্বা এ মেয়েটিকে বাড়িতে নিয়ে ওষুধ প্রয়োগ করে গর্ভের সন্তানও নষ্ট করে ওই মেম্বার।

ধর্ষণের আলামত নষ্ট ও মামলা না করতে ভিকটিমের মাকে ঈশ্বরগঞ্জের দরিবৃ গ্রামে আটকে রাখে ওই মেম্বার। বিজ্ঞ আদালতে চার্জওয়ারেন্ট নিয়েও ঘটনাস্থল ঈশ্বরগঞ্জে হওয়ায় ভিকটিমের মাকে উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। পুলিশ জানায়, চার্জওয়ারেন্ট বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে ঈশ্বরগঞ্জে প্রেরণের প্রস্তুতি চলছে।

ওই মেম্বার এ ঘটনাটিকে সাজানো মিথ্যা আখ্যায়িত করে বলেন, ভিকটিমকে ধর্ষণ করেছে রামজীবনপুরের সালেক মিয়া (৫৫)। সালেকের সাথে ভিকটিমের ১মিনিট ২৮ সেকেন্ডের অডিও রেকডে জানা যায়, সালেক ভিকটিমকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে বলেছে।

সালেক জানায়, মেম্বার আমাকে বলেছিলো তার সম্মান বাঁচাতে, তার শিখিয়ে দেয়া এসব কথা ভিকটিমকে বলেছিলাম।

ভিকটিম জানায়, মেম্বার খালুজী বলেছিলো গর্ভের সন্তান নষ্ট করে চিরকুমার সালেককে বিয়ে করতে, তাই সালেককে ফোনে বিয়ে প্রস্তাব দিয়েছিলাম।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ দেলোয়ার আহম্মদ জানান, ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।

এলাকায় খোঁজ নিতে গিয়ে জানা যায়, এ মেম্বারের অনেক অনৈতিক ঘটনা। এলাকাবাসীর অভিযোগ অনৈতিক সম্পর্কের জেরধরেই ৯ এপ্রিল আত্মাহত্যা করেছে কাসিমপুরের এক গৃহবধু। স্বামীর হারানো ভোটার আইডি উদ্ধার করতে গিয়ে এ মেম্বারের সাথে পরিচয় হয় এবং অনৈতিক সম্পর্ক হয়। এক পর্যায়ে সে আত্মহত্যা করে। কোন অনৈতিক সম্পর্ক ছিলো না উল্লেখ করে মেম্বার আশরাফুল হক এমদাদ জানান, কেন আত্মাহত্যা করে তা তার জানা নেই।

এলাকাবাসী জানায়, তাঁর প্রথম স্ত্রী মৃত আব্দুল হেকিমের কন্যা সুফিয়া আক্তার হাওয়াকে ২০০৯ সালের ১০ সেপ্টেম্বর শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যার পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে আত্মাহত্যা করেছে বলে প্রচার দেয়।

মেম্বার জানায়, রাতে ১২/১টার পর বাসায় ফেরা তার বদঅভ্যাস, তবে পারিবারিক কলহের জেরধরে সে আত্মাহত্যা করেছে।

এছাড়া তিনি ২য় বিয়ে করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার কাকনহাটি গ্রামের আব্দুর রহমানের কন্যা আমেনা খাতুনকে। স্বামীর নির্মম নির্যাতন সইতে না পেরে স্বামী গৃহ থেকে পালিয়ে সে আত্মহত্যা করে।

৩য় বিয়ে করেন ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সোহাগী ইউনিয়নের দরিবৃ গ্রামের সৈয়দ মজিবুর রহমানের কন্যা হাসিনা বেগম (২৫) কে। আর এই তৃতীয় স্ত্রীর বড়বোনের মেয়েকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে গৌরীপুর থানায়।

তিনি নিজেকে অত্যন্ত মেধাবী দাবি করে বলেন, প্রাথমিক ও জুনিয়রে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি এসএসসিতে স্টারমার্ক (৮২২) পেয়ে পাস করে। কিন্তু অভাবের কারণে উচ্চ শিক্ষা সম্ভব হয়নি। তবে কোন খারাপ কাজ করেন না। ১৮ পারা কুরআন শরীফও মুখস্থ করেছে। ২০০৩ সনে ভোটের মধ্যমে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, বেতান্দর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও বেতান্দর উচ্চ বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক প্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল ষড়যন্ত্র করছে।

(এসআইএম/এসপি/মে ০৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৫ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test