E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ঘাটাইলে ৪ প্রতিবন্ধীর পরিবার দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত

২০১৭ মে ০৮ ১৫:৩২:৩৩
ঘাটাইলে ৪ প্রতিবন্ধীর পরিবার দারিদ্রের কষাঘাতে জর্জরিত

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : টাঙ্গাইলের ঘাটাইল পৌর শহরের পশ্চিমপাড়ার এক দরিদ্র পরিবারে পাঁচ সদস্যের মধ্যে চার জনই প্রতিবন্ধী থাকলেও সরকারি ভাতা পান মাত্র একজন। এতে, চরম খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপনে বাধ্য হচ্ছে প্রতিবন্ধী এ পরিবারটি। তাচ্ছিল্য আর দারিদ্রের নির্মম কষাঘাতে জর্জরিত হয়ে জীবন-জীবিকা চালাচ্ছে ওই পরিবার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঘাটাইল উপজেলা সদরে পৌরশহরের দেড় কিলোমিটার উত্তরে পশ্চিম পাড়া গ্রামের দিন মজুর জাহাঙ্গীর ও স্ত্রী বিনা বেগম দম্পতির তিন সন্তান মিলে পাঁচ সদস্যের পরিবারের চার সদস্যই প্রতিবন্ধী। বিনা বেগমের যখন ১০ বছর তখন প্রতিবন্ধী জাহাঙ্গীরের সাথে বিয়ে হয়।

২০ বছর ধরে তিনি সংসার করছেন। বিয়ের ১০ বছর পর তাদের প্রথম কন্যা সন্তান হয়। তাদের সংসারে জন্ম নেয়া তিন সন্তানের প্রত্যেকেই প্রতিবন্ধী। বড় সন্তান জাহানারা (১৪), মেজো সন্তান বিজয় (১০) ও ছোট সন্তান তানিয়া (৭) জন্ম থেকেই কথা বলতে পারে না।

তারা তিনজনই বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। তিন ভাই বোনের মধ্যে জাহানারা স্থানীয় ঘাটাইল এসই বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণির ছাত্রী, ছোট ভাই বিজয় উপজেলার চাঁন্দশী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র এবং ছোট বোন তানিয়া একই বিদ্যালয়ে ২য় শ্রেণির শিক্ষার্থী। প্রতিবন্ধী হওয়া সত্বেও থেমে নেই পরিবারের প্রধান জাহাঙ্গীর, দিন মঞ্জুরের কাজ করেন। যা পান তা দিয়ে কোন রকম চলে সংসার।

পরিবারের একমাত্র স্বাভাবিক সদস্য সন্তানদের মা বিনা বেগম (৩০) বলেন, ছেলেমেয়েদের বাবা নিজে একজন বাক প্রতিবন্ধী হওয়ায় স্বাভাবিক কাজ কর্ম পেতে অনেক বিড়ম্ভনা পোহাতে হয়। আমার তিন সন্তানের সবাই ওর বাবার মতো বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী।

তিনি বলেন, পুরো সংসারটাই চলে টেনে-টুনে। মাঝে মধ্যে পরিবারে এক মুঠো ভাতও জুটেনা। আমার স্বামী একটি প্রতিবন্ধী কার্ড পেয়েছে। তার মধ্যে বছরে মাত্র ৩ হাজার টাকা পায়। কিন্তু এই তিন হাজার টাকা দিয়ে কি এক বছর চলে? তাই ঋণের টাকায় চলছে আমাদের সংসার। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে অনেক কষ্টে খেয়ে, না খেয়ে কোনো মতে সংসার চলছে।

এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা অফিসার সানজিদা সুলতানা বলেন, ইতিমধ্যেই আমরা বিষয়টি জেনেছি। আমারা ওই পরিবারের সাথে কথা বলেছি। আশা করছি এই অর্থ বছরের মধ্যেই তাদের জন্য কোন একটি ব্যবস্থা করতে পারবো। তিনজন শিক্ষার্থী প্রতিবন্ধীর মধ্যে এক জনকে ভাতা অথবা একজনকে প্রতিবন্ধী উপবৃত্তি দেওয়া হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কাশেম মুহাম্মদ শাহীন জানান, সরকারের পক্ষ থেকে ওই পরিবারকে যতপ্রকার সেবা দেওয়া যায় তাদেরকে সব দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে তারা আর অসহায় থাকবে না। এ ব্যাপারে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


(আরকেপি/এসপি/মে ০৮, ২০১৭)




পাঠকের মতামত:

৩০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test