E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মৌলভীবাজারে ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

২০১৭ মে ৩০ ২৩:৫০:৪৫
মৌলভীবাজারে ঝুকিপূর্ণ ভবনে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে ১৫ কিলোমিটার দক্ষিণে সদর উপজেলার নাজিরাবাদ ইউনিয়নের মৌলভীবাজার-শমসেরগঞ্জ সড়ক দিয়ে পিচঢালা পথে যাবার পথে ডান দিক থেকে বিশাল আয়তনের হাওর আর বামদিকে রয়েছে সবুজ শ্যামল ছায়াঘেরা হুসেনপুর গ্রাম। সড়কের ঠিক ১৫গজ দুরত্বে হুসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নামের প্রতিষ্ঠানটির অবস্থান। যেখানে বর্তমান সরকার দেশের প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে বিভিন্ন যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিচ্ছেন, সেখানে এই প্রতিষ্ঠানটির দিকে তাকালে মনে হবেনা এটি বর্তমান সময়ের কোন সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।

মান্দাতার আমলের পুরাতন টিনসেড দিয়ে তৈরি ৩টি কক্ষ বিশিষ্ট ঘরটিতেই ১৩০জন শিশু নিয়ে চলছে হুসেনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম। জরাজির্ণ টিনসেডের ঘরে সম্পূর্ণ ঝুকি পূর্ণ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে ক্লাস করছে। স্কুলটিতে কোন পুরুষ শিক্ষক নেই তবে একজন সহকারী শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্ত্ব দেয়া হয়েছে। তিনি সহ অন্য ৩ জন সহকারী শিক্ষক দিয়েই ১৩০জন শিশুর পাঠদান পরিচালনা করেন। সরেজমিনে গিয়ে ক্লাস চলাকালিন সময়ে দেখা যায় স্কুলের শিক্ষার্থীরা খয়েরি রঙের স্কুল ড্রেস পরে কেউ কেউ বাহিরে খেলাধুলা করছেন আবার কেউ কেউ শিক্ষকদের সেবায় নিয়েজিত রয়েছেন। ৩টি শ্রেণীকক্ষ আর ষ্টোর রুমের আদলে তৈরি একটি কক্ষে শিক্ষকদের বসার স্থান। স্কুলটিতে প্রধান শিক্ষকের বসার জন্য আলাদা কোন কক্ষ নেই। সহকারী শিক্ষকদেরও বসার নির্দিষ্ট কোন কক্ষ নেই।

শিক্ষকরা জানান, প্রতিটি কক্ষেই বৃষ্টি আসলে অঝর ধারায় শ্রেনী কক্ষে বৃষ্টির পানি পরে ব্যহত হয় ক্লাস কার্যক্রম। স্কুলের বিভিন্ন কক্ষে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি কক্ষের টিনের ফাঁক দিয়ে ছোট ছোট ছিদ্র , বৃষ্টি আসলে এসব ছিদ্র দিয়ে পানি পরে ক্লাস রুম ভিজে যায়,যার কারনে শিক্ষকরা চাঁদা তুলে কাপর ক্রয় করে তা টিনের নিচে ঝুলিয়ে রেখেছেন, যাতে করে প্রাথমিকভাবে পানি আটকিয়ে রাখা যায়। স্কুলের সামনে স্থাপিত টিনের সাইনবোর্ডটি দেখে জানা যায়, এ প্রতিষ্ঠানটি এলাকার দানশীল ও শিক্ষানুরাগী ব্যাক্তিদের উদ্যেগে ১৯৯৬ সালে স্থাপন করা হয়। শুরু থেকে স্কুলটি একটি রেজিষ্টারর্ড স্কুল হিসেবে পরিচালিত হলেও ২০১৩ সালে স্কুলটি জাতীয়করণ করা হয়। জাতীয় করনের ৪ বছর কেটে গেলেও এখনো স্খুলটিতে নতুন ভবন নির্মান সহ সামগ্রীক ভাবে উন্নয়নের কোন ছোঁয়া লাগেনি। গত ২০১৬ সালে স্কুলটি কালবৈশাখীর ছুবলে পরে লন্ডভন্ড হয়ে যায়, বন্ধ হয়ে পরে স্কুলের ক্লাসসহ সাভাবিক কার্যক্রম। এরপর সামান্য সরকার অনুদান আর এলাকাবাসীর কাছ থেকে চাঁদা তুলে জরাজির্ণ টিনসেডের ঘরটি পূর্ণনির্মাণ করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে স্কুলের বিভিন্ন কার্যক্রম ঘুরে শিক্ষকদের কাছ থেকে জানা যায় এসব তথ্য। স্কুলের প্রধান শিক্ষক জরিনা বেগম মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান, মাত্র ১৫ শতক জায়গা নিয়ে স্কুলের অবস্থান, দীর্ঘদিন যাবত স্কুলের অবকাটামোগত কোন উন্নয়ন হয়নি, সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে স্কুলের নতুন বিল্ডিং নির্মাণের জন্য যোগাযোগ করা হলে প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে একটি পত্র এসেছে স্কুলে, সেটি আমরা পুরন করে পাঠালে তাঁরা স্কুল নির্মাণের ব্যাপারে প্রদক্ষেপ নেবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তিনি বলেন, বর্তমানে শ্রেনী কক্ষে উন্নত পাঠদান আর পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট এর জন্য স্কুলের শিক্ষকরা অনেক পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

(একে/এএস/মে ৩০, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test