E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

রায়পুর সরকারি হাসপাতালে সুপেয় পানি নেই, রোগীদের চরম দুর্ভোগ

২০১৪ এপ্রিল ১০ ১৮:১৭:৩০
রায়পুর সরকারি হাসপাতালে সুপেয় পানি নেই, রোগীদের চরম দুর্ভোগ

রায়পুর (লক্ষ্মীপুর) প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রায় এক বছর ধরে সুপেয় পানির ব্যবস্থা নেই। এতে করে ভর্তিরত রোগীরা চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী বাড়ি ও দোকান থেকে বোতলজাত পানি পান ও ব্যবহার করছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা এবং আবাসিক এলকার ভিতরের মলমূত্র ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও প্রতিকার পাচ্ছেনা।

বৃহস্পতিবার সকালে সরজমিনে উপজেলার ৫০ শয্যার সরকারি এ হাসপাতালে গেলে চিকিৎসারত পুরুষ, মহিলা ও শিশু ওয়ার্ডের রোগীরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের ভিতরে রোগীদের জন্য ৯টি পানির লাইন ও ১২টি টয়লেট রয়েছে। পানির লাইনগুলো গত এক বছর ধরে বন্ধ এবং টয়লেটগুলো অপরিস্কার থাকায় রোগীরা চরম দুর্ভোগের মধ্যে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। তারা হাসপাতালের পার্শ্ববর্তী কয়েকটি বাড়ি থেকে এনে কেউ কেউ পানি পান করছে আবার কেউ বাহিরের দোকানগুলো থেকে বতলজাতক পানি কিনে এনে তা ব্যবসার করছেন। দিনের বেলায় হাসপাতালের বাহিরে মলমূত্র ত্যাগ করলেও রাতের বেলায় আবাসিক এলাকার বিভিন্ন স্থানে তা ত্যাগ করতে বাধ্য হচ্ছেন।
দক্ষিণ চরবংশী গ্রাম থেকে আসা ভর্তি রোগী হাসিনা বেগম বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে তিনি তার নবজাতককে নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসা সেবা পেলেও খাবার পানি পাচ্ছেন না। পুরুষ রোগীরা বাহিরে গিয়ে গোসল করতে পারে। কিন্তু আমরা রাতে পুকুরে গিয়ে গোসলসহ অন্য কাজ করতে হয়। পুরুষ ওয়ার্ডের বৃদ্ধ লোকমান মিয়া বলেন, ৫ দিন হয়েছে তিনি মারামারি ঘটনায় আহত হয়ে ভর্তি রয়েছেন। তার ছেলেকে দিয়ে হাসপাতালের পাশের বাড়ি ও দোকান থেকে পানি কিনে এনে ব্যবহার করলেও মলমূত্র ত্যাগ করতে হচ্ছে বাহিরে গিয়ে। এতে অনেক টাকা খরচ হয়ে যায়। কিন্তু এ পানির জন্য সিজার ও ভর্তিরত রোগীদের কষ্ট হলেও দেখার যেন কেউ নেই।
হাসপাতালের পাশের বাড়ি মহিব উল্যা মুন্সি বলেন, সরকার এ হাসপাতালের জন্য লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ দিচ্ছে। এক বছর ধরে এ হাসাতালে পানি ও টয়লেটের ব্যবস্থা নেই। রাত দিন রোগিরা আমাদের বাড়ি ও দোকান থেকে পানি নিচ্ছেন ও টয়লেটের কাজ করছেন। কিন্তু রোগিরা কষ্ট পাচ্ছে বিষয়টি কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেনা।
হাসপাতালের পারভিন আক্তার নামের এক সেবিকা বলেন, পানির জন্য শুধু রোগিরা কষ্ট পাচ্ছে না। আমরা যারা ডাক্তার নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারী আবাসিক ভবনে বসবাস করতেও কষ্ট হচ্ছে। সকালে হাসপাতালের পাশের বাড়ি থেকে সারাদিনের জন্য পানি এনে রাখতে হয়। গোসলসহ আসবাবপত্র ধোয়া মোছার কাজ করতে হচ্ছে পুকুরে গিয়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোস্তফা খালেদ বলেন, প্রায় ৫ মাস আগে এ হাসপাতালে যোগদান করেই দেখি পানির সমস্যা। এ নিয়ে কর্তৃপক্ষকে লিখিত আকারে জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎতের লোডশেডিংয়ের কারণে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ পানি সরবরাহ করতে না পারায় সিজার করা প্রসূতি ও ভর্তিরত রোগিদের সমস্যা হচ্ছে।
রায়পুর পৌরসভার মেয়র এ বি এম জিলানী বলেন, হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারের (ওটি) ব্যবহার করার জন্য পৌরসভা থেকে পানি সরবরাহের লাইন দেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন জলধারায় পানি উত্তোলন সম্ভব হচ্ছেনা।

(পিকেআর/এএস/এপ্রিল ১০, ২০১৪)






পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test