E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

এবার ঈদে ঠাকুরগাঁওয়ে চলছে পাকিস্থানি পোষাক

২০১৭ জুন ০৪ ১৪:৪২:৫৮
এবার ঈদে ঠাকুরগাঁওয়ে চলছে পাকিস্থানি পোষাক

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের প্রায় দোকানীরা জানিয়েছেন, এবার ঈদ উপলক্ষে বাজারে ভারতীয় পোশাকের আধিক্য নেই বললেই চলে। তবে এবার ভারতীয় নায়িকা ও সিরিয়ালের নামে তেমন কোনো পোশাক আসেনি। এর বিপরীতে বাজার দখল করেছে কিছু পাকিস্তানি পোশাক। আর শাড়ীর বাজারে দেশি শাড়ীই বিক্রি হচ্ছে বেশি। সব পোশাকের দাম এখন পর্যন্ত সহনশীল আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

এগিয়ে আসছে মুসলিম সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ ও প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। ঠাকুরগাঁওয়ে এবার ঈদের কেনা-কাটা শুরু হয়েছে রমজানের আগে থেকেই। ঈদের প্রধান আকর্ষণ নতুন পোশাক। তাই রোজার শুরুতেই ঠাকুরগাঁওয়ের বিভিন্ন কাপড়ের মার্কেটগুলোতে ভিড় বাড়ছে ক্রেতাদের।

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, কয়েকদিন আগে থেকেই ঈদ বাজার শুরু হয়ে গেছে। পরে অতিরিক্ত ভিড়ের চাপ এড়াতে এবার আগেভাগেই কেনাকাটা শুরু করেছেন ক্রেতারা।

রবিবার বিভিন্ন মার্কেট এর বিপণিবিতানে গিয়ে দেখা যায়, নানা ডিজাইনের নতুন নতুন ঈদ পোশাকে ক্রেতা আকর্ষণের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে দোকানগুলোতে। কেনাকাটা করেছেন অনেকে। বিশেষ করে মেয়েদের কেনাকাটা চলছে বেশ জোরেশোরেই। বিক্রেতারাও আশায় বুক বেধে ঈদের নতুন পোশাক সাজিয়ে রেখেছেন দোকানে।

ঠাকুরগাঁও সন্তোষ বস্ত্রালয়ের মালিক সন্তোষ আগরওয়াল বলেন, রোজার প্রথম দিন থেকে ঈদ বাজার ধরে তারা এর ১৫ দিন আগেই নতুন পোষাক তুলেছেন। এবার ঠিক রোজার শুরু থেকেই বাজারে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। এরই মধ্যে নতুন মাস পড়লো। চাকরিজীবীরা মে মাসের বেতন পেলে বাজারে ভিড় আরও বাড়বে।

বিক্রেতা আরমান জানান, এবার ঈদে মেয়েদের পোশাকের ক্ষেত্রে ভারতীয় ‘ওয়ান পিস’ এসেছে। এটি বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে চার হাজার টাকা পর্যন্ত। থ্রি-পিস ‘ফ্লোর টাচ’ বিক্রি হচ্ছে আড়াই হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। মেয়েদের পৱাজো পাজামা বিক্রি হচ্ছে দেড় হাজার থেকে আট হাজার টাকায়। এছাড়া পাকিস্তানি লোন ৮০০ থেকে দুই হাজার ২০০ এবং দেশি থ্রি-পিস ৬৫০ টাকা থেকে আড়াই হাজার টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

নিজের জন্য পোশাক কিনতে গিয়ে কলেজ ছাত্রী আইরিন বলেন, ‘সামনে ভিড় আরও বাড়বে, তখন দেখা যাবে একটা পোশাক ভালো করে দেখেও কেনার সুযোগ থাকবে না। তাই চাপ বাড়ার আগেই কেনাকাটা করতে আসলাম। অনেকগুলো দোকান ঘুরে কিছু কিনেছি, আরও কিছু কিনব।’

তৈরী পোশাক ব্যবসায়ী লালন জানান, তার দোকানে মেয়েদের ভারতীয় ঝিপসি আড়াই হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা, বাচ্চাদের ফ্রক ও টপস এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা, লং থ্রি-পিস এক হাজার থেকে সাত হাজার টাকা, ভারতীয় গ্রাউন্ড আট হাজার থেকে ১৬ হাজার টাকা এবং ছোট মেয়েদের বাহুবালি-২ বিক্রি হচ্ছে দেড় থেকে তিন হাজার টাকায়।

নজরুল ইসলাম নামে এক শাড়ী দোকানি জানান, ঈদে এবার কাতান শাড়ি এসেছে। শাড়িটি দেড় হাজার থেকে পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টিস্যু সিল্ক নামে ভারত থেকে একটি শাড়ি এসেছে। এটি দেড় হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মুসলিন জামদানি ও টাঙাইলের সিল্ক বিক্রি হচ্ছে সাড়ে চার থেকে ছয় হাজার টাকায়। এছাড়াও দেশি বিভিন্ন শাড়ি পাওয়া যাচ্ছে সর্বনিম্ন ৬৫০ টাকা থেকে দেড় হাজার টাকায়। তবে এবার সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে সুতির শাড়ি। এগুলো দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

বিক্রয়কর্মী রানা রহমান জানান, দোকানে ছোট মেয়েদের সারারা, পার্টি ফ্রক, স্কার্ট ও ডিভাইডার ও জিপসি এক হাজার ৮০০ থেকে চার হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ছেলেদের জিনসের প্যান্ট, শার্ট ও টি-শার্ট বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ টাকা থেকে এক হাজার টাকায়। তর্বণদের জন্য নতুন কিছু গ্যাবাডিং প্যান্ট ও শার্টও বাজারে এসেছে। এগুলো সুলভমূল্যে বিক্রি হচ্ছে বলেই জানান তিনি।

পাঞ্জাবী ব্যবাসায়ী মাসুম জানান, ঈদ উপলক্ষে এবার তার দোকানে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পাঞ্জাবি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকায়। এরমধ্যে পেঁয়াজ কটন দেড় হাজার, গৌরি আড়াই হাজার ও সুজন কুমার বিক্রি হচ্ছে তিন হাজার টাকায়। এরই মধ্যে বেচাকেনা জমে উঠেছে। ঈদ যত ঘনিয়ে আসবে, বিক্রি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।মাসুম বলেন, ৫-৬ জুন থেকেই পুরোদমে শুরু হবে ঈদের কেনাকাটা। তখন হাঁটার জায়গাও পাওয়া যাবে না। বছরের এই একটা মাসই তো ধুমিয়ে বিক্রি করতে পারি, তাই ভালো কিছুর প্রত্যাশা করছি।

তার দোকানে আসা ক্রেতা সারোয়ার জাহান বলন, একটু আগেভাগেই কেনাকাটা করে ফেলছি এবার। শেষদিকে দাম থাকে বেশি, কাপড়ের মানও ভালো পাওয়া যায় না। তাই কিনে ফেললাম।

(এফআইআর/এসপি/জুন ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৬ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test