E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

টাঙ্গাইলের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

২০১৭ জুন ২৯ ১৬:১৮:৩২
টাঙ্গাইলের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি : পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে টাঙ্গাইলের বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি এক অন্য রকম আনন্দের মাত্র যোগ করেছে।

বিনোদন স্পটগুলো ঘুরে দেখা গেছে, টাঙ্গাইলের ডিসি লেক, ঘারিন্দা রেলস্টেশন, সোলপার্কে দর্শনার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। এছাড়া মধুপুর বনাঞ্চল, মধুপুর বিএডিসি বীজ উৎপাদন খামার, ধনবাড়ী নবাব বাড়ি, গোপালপুরে নির্মাণাধীন ২০১ গম্বুজ বিশিষ্ট মসজিদ, হেমনগর জমিদার বাড়ি, ভূঞাপুর যমুনা নদী র্তীরবর্তী এলাকা, বঙ্গবন্ধুসেতু, এলেঙ্গা রিসোর্ট, যমুনা রিসোর্ট, নৌপথে গোবিন্দাসী থেকে গাবসারা চরাঞ্চল, কালিহাতীর চারান বিল, ঘাটাইলের ধলাপাড়া চৌধুরীবাড়ী, অনিক পার্ক, সখীপুর বনাঞ্চল, বাসাইলের বাসুলিয়া, মির্জাপুর মহেড়া জমিদার বাড়ি, দেলদুয়ার জমিদার বাড়ি, আতিয়া জামে মসজিদ, নাগরপুর জমিদার বাড়ি, ধলেশ্বরী সেতু, উপেন্দ্র সরোবর, পাকুটিয়া জমিদার বাড়ি, নাগরপুর ধুবুরিয়া স্বপ্ন বিলাস চিরিয়াখানা বিনোদন কেন্দ্রে এলাকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ আর গ্রুপ ছবি তোলা, সেলফি ও আড্ডায় সময় কাটাচ্ছেন বিনোদন পিপাসু দর্শনার্থীরা। স্পটগুলোর অনেক জায়গায় যোগাযোগ ব্যবস্থা তেমন ভালো না হলেও ব্যক্তিগতভাবে কিংবা পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের নিয়ে দর্শনার্থীরা এসব স্থানে ছুটে আসছেন।

দশনার্থীরা জানান, দর্শনার্থীদের ঈদ আনন্দ বাড়িয়ে দিতে এসব এলাকায় সাজসজ্জা, পর্যাপ্ত যানবাহন, শৌচাগার করা হলে এখানে গড়ে উঠতে পারে বড় পর্যটন কেন্দ্র। এতে সরকারের রাজস্বও বাড়বে। জেলার বাইরেরও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে প্রিয়জনকে নিয়ে ঘুরতে আসছেন এতদাঞ্চলে। প্রতিটি স্পটে বিভিন্ন বয়সের নারী, পুরুষ ও শিশুদের সরব উপস্থিতি লক্ষ করা গেছে। বিনোদন কেন্দ্রের তথ্যমতে, দুপুরের পর থেকেই দর্শনার্থীদের ভিড় জমে ওঠছে। রঙ-বেরঙের পোশাক আর নানা সাজে সজ্জিত দর্শনার্থীরা। শিশু-কিশোররা নাগরদোলায় দোল খেয়ে ঈদ আনন্দ উপভোগ করছে। যে কোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

ঈদের তৃতীয়দিন বুধবার স্বপরিবারে বেড়াতে আসেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী কবির হোসেন, আ. সবুর, লাল মিয়া সহ অনেকেই জানান, সারা বছর ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই পরিবার নিয়ে কোথাও ঘুরতে যাওয়া হয় না। এবার ঈদের এই সুযোগ পেয়ে সবাইকে নিয়ে বেড়াতে এসেছেন। তবে বিভিন্ন স্পটে ভাল শৌচাগার না থাকায় মহিলা দর্শনার্থীদের অস্বস্থিতে পড়তে হচ্ছে।

ঘুরতে আসা অপর দর্শনার্থী খালেদ মিয়া, শাহআলম, সাদিকুল হায়দার জানান, বঙ্গবন্ধু সেতুর আশপাশের এলাকাগুলোকে অর্থনৈতিক জোন এলাকা ঘোষণা করা উচিত। ব্যক্তিগত কিংবা সরকারি উদ্যোগে এখানে হোটেল-মোটেল চালু করা হলে সাধারণ মানুষের আগ্রহ আরো বাড়বে।
এসব বিষয়ে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসলাম খান জানান, ঈদের ছুটিতে টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন বিনোদন স্পটগুলোতে অনেক বেশি দর্শনার্থী এসেছে। তাদের নিরাপত্তায় বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

এদিকে, টাঙ্গাইল জেলার ঐতিহাসিক স্থান, রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, টাঙ্গাইল শাড়ি, শালবন, মধুপুরের আনারস, প্রসিদ্ধ চমচমের জন্য টাঙ্গাইলের পরিচিতি থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে শহরে কোন বিনোদন কেন্দ্র ছিল না। অবশেষে টাঙ্গাইলের সাবেক জেলা প্রশাসক(যুগ্ম-সচিব) মাহবুব হোসেনের উদ্যোগে শহরের প্রাণকেন্দ্রে গড়ে ওঠেছে ডিসি লেক।
দীর্ঘদিন ধরে পরিত্যক্ত এই লেক জেলার জনপ্রিয় বিনোদন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও উপচেপড়া ভিড় ডিসি লেকে। এখানে পরিবারের সবাইকে নিয়ে সময় কাটানোর জন্য রয়েছে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা।

টাঙ্গাইল সার্কিট হাউস ও নতুন বাস টার্মিনালের মধ্যবর্তী স্থানে ডিসি লেক অবস্থিত। স্থানটিকে আরো আকর্ষণীয় করতে টাঙ্গাইল মেডিকেল কলেজের সামনে তৈরি করা হয়েছে শিশু পার্ক। দৃষ্টিনন্দন বিনোদনকেন্দ্র ডিসি লেকে ব্রিজসহ ছাড়াও রয়েছে নজরকাড়া দৃষ্টিনন্দন ঘাট। লেকের জলে ভেসে বেড়ানোর জন্য প্যাডেল বোট, লেকের পাড় ঘেঁষে লাগানো হয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ, বানর, ব্যাঙ, ডাইনোসর, জিরাফসহ বিভিন্ন প্রাণীর প্রতিকৃতি। বড়দের পাশাপাশি ছোটদের আনন্দ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে লেকের পাশের শিশুপার্ক। শিশু পার্কটি শিশুদের আনন্দের মাধ্যমে মাতিয়ে রাখছে। কেউ ট্রেণ ভ্রমণ করছে, কেউ হেলিকপ্টারে ঘুরছে, কেউ দোলনায় দোল খাচ্ছে, আবার কেউ কেউ জাহাজে আনন্দের মুহুর্ত পাড় করছে।

(আরকেপি/এএস/জুন ২৯, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test