লোহাগড়ায় চেয়ারম্যান, ইউএনও, প্রকৌশলীসহ ৬ জনের নামে মামলা, প্রকৌশলী আটক

লোহাগড়া (নড়াইল) প্রতিনিধি : কাজ না করে সরকারী প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা ও প্রকৌশলীসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ২ টি মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমদ কমিশন (দুদক)। তাদের বিরুদ্ধে ২৭ টি প্রকল্পের বিপরীতে ৫৪ লাখ ৪৬৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করা হয়েছে। দুনীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ আলী আকবর বাদী হয়ে শুক্রবার বিকালে লোহাগড়া থানায়  পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং ৬ ও ৭, তারিখ ৭.৭.২০১৭ ইং, ধারা  দন্ডবিধি ৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুনীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারা। পুলিশ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ওসমান গনি(৫৫) আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে।

আসামীরা হলেন- উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক সৈয়দ ফয়জুল আমীর লিটু, তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা মোঃ সেলিম রেজা, উপজেলা প্রকৌশলী ওসমান গনি, তিনজন ঠিকাদার যথাক্রমে পরিমল কুমার ঘোষ, মোঃ আরাফাত আজম এবং সাফিয়া মোরশেদ। দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয় স্থানীয় সরকার বিভাগ, উপজেলা -২ স্মারক নং ৪৬.০৪৫.০২২.১০.২৩.০২৩.২০১৫.১৫,তাং ০৩/০১/২০১৬ খ্রীঃ মূলে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে অনগ্রসর উপজেলার জন্য বিশেষ থোক বরাদ্দ উপখাত হতে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলায় বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজের জন্য ১ কোটি ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়।

উক্ত বরাদ্দকৃত টাকা হতে ২৪ টি প্রকল্পের মধ্যে নদী ভাঙ্গন কবলিত ক্ষতি গ্রস্থদের মাঝে টিন বিতরণ, বাল্যবিবাহ নিরোধে গ্রামীন মহিলাদের মাঝে শাড়ী ও ইমাম - কাজীদের মধ্যে পোষাক বিতরন,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্রীড়া সামগ্রী, আসবাবপত্র , জার্সি ও বাদ্যযন্ত্র বিতরন,কমিউনিটি ক্লিনিকে সিলিং ফ্যান বিতরণ, কলেজ ,মাদ্রাসা ও ক্লাবে জার্সি বিতরণ, লাহুড়িয়া ও নলদী বাজারে ল্যাট্রিন নির্মাণ, ভূমি অফিসের ফাইল বাধাই, যৌতুক, নারী নির্যাতন এবং মাদক নিরোধে জনসচেতনামুলক র্মশালা, প্রতিবন্ধিদের মাঝে হুইল চেয়ার বিতরন, হাট বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্টানে টিউবয়েল স্থাপন, শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ নির্নয়, নিহার রঞ্জন গুপ্তের বাড়ীর রাস্তা প্রশস্থকরন, সরকারের উন্নয়ন প্রচারে র‌্যালি, দেবী বাজারে ইটের সোলিং, স্কীম জরিপ, আমাদা দাখিল মাদ্রাসার শ্রেনী কক্ষ নির্মানসহ ২৪ টি প্রকল্পে কোন কাজ না করে উল্লেখিত ব্যক্তিগণ পরস্পর যোগসাজসে মোট ৪৩ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

এছাড়া চাচই ওয়াপদা হতে কালনা সিএন্ডবি রাস্তা পর্যন্ত ইটের সোলিং নির্মানে পৃথক ৩ টি প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ১ কোটি ৩৭ লাখ ৯৯হাজার ৯৯৮ টাকার কাজের মধ্যে আংশিক কাজ করে ১১ লাখ ৪৬৮ টাকা পরস্পর যোগসাজসে আত্মসাত করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।

থানায় মামলা দায়েরের পর পরই বাদীর উপস্থিতিতে লোহাগড়া থানা পুলিশ উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ ওসমান গনিকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করেছে। গ্রেফতার এড়াতে অপর আসামীরা পলাতক রয়েছে। লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

(আরএম/এএস/জুলাই ০৭, ২০১৭)