E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নড়াইলে মুক্তিযোদ্ধাকে ভুয়া হিসেবে অপপ্রচার

২০১৭ জুলাই ১৪ ১৪:০৩:৪২
নড়াইলে মুক্তিযোদ্ধাকে ভুয়া হিসেবে অপপ্রচার

নড়াইল প্রতিনিধি : গ্রাম্য কোন্দলের জের ধরে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার মহিষাপাড়ার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা আতিয়ার রহমানের (৬৬) বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ উঠেছে।

কোন্দলের কারণে প্রতিপক্ষের লোকজন তাকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা আখ্যা দিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে আসছেন বলে অভিযোগ আতিয়ারের। এতে সামাজিকভাবে তাকে হেয় করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামের সাধারণ মানুষ।

আতিয়ার রহমান জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে স্বাস্থ্য সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে চাকরি ফেলে এলাকায় চলে আসেন। ২৫ মার্চ থেকেই তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। স্বাধীনতার পর ফের কর্মস্থলে ফিরে যান। পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পান।

কিন্তু লোহাগড়ার মহিষাপাড়ার মোশারেফ হোসেন মন্টু (৬৫) ও মনিরুল ইসলামসহ (৬৬) প্রতিপক্ষের লোকজন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আতিয়ার রহমানেকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা দাবি করে অভিযোগ করেছেন। স্থানীয়ভাবেও তাকে হেয় করা হচ্ছে।

এরআগেও ২০১১ সালে তারা আতিয়ারের বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার অভিযোগ তোলেন। পরে তা মিথ্যা প্রমাণিত হয়।

এ ব্যাপারে মুজিব বাহিনীর তৎকালীন লোহাগড়া থানা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা শরীফ খসরুজ্জামান বলেন, আতিয়ার রহমান ১৯৭১ সালে লোহাগড়া, ভাটিয়াপাড়া, কালনাসহ নড়াইলের বিভিন্ন স্থানে যুদ্ধ করেছেন। মল্লিকপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা জাহিদুল হোসেন বলেন, আতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছে। একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে এ ধরনের অপপ্রচার দুঃখজনক।

এদিকে, লোহাগড়ার মুক্তিযোদ্ধা এসএম মাহফুজুর রহমান, ফিরোজ আহমেদ মিয়া, দেলোয়ার হোসেন মোল্যা, মনজুর হোসেন, এমএম ইয়াউদ হোসেন, শেখ নূর মোহাম্মদ, শেখ মোশারফ হোসেন, শেখ কিউবার হোসেন, ইকরাম হোসেনসহ বিভিন্ন এলাকার ১১ জন সহযোদ্ধা আতিয়ার রহমানকে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে অপপ্রচার করায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

মুক্তিযোদ্ধা সংসদ লোহাগড়া উপজেলা কমান্ডার ফকির মফিজুল হক বলেন, আতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে যে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, তা মিথ্যা।

যোগাযোগ করা হলে, মহিষাপাড়ার মোশারেফ হোসেন মন্টুসহ অভিযুক্তরা জানান, আতিয়ার রহমান ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা। বিষয়টি প্রমাণের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।

এলাকাবাসী জানান, ২০০১ সালের ২০ ডিসেম্বর মহিষাপাড়ার আব্দুল ওহাব শেখকে (৬৫) কুপিয়ে জখম করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৩ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় আতিয়ার রহমানের পরিবারের সদস্যসহ মহিষাপাড়ার ২০ জনকে আসামি করা হয়। নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় ২০১০ সালের ৪ মে নড়াইলের একটি আদালত আসামিদের খালাস দেন।

এরপর থেকে মোশারেফ হোসেন মন্টুসহ বাদীপক্ষের সঙ্গে আতিয়ার রহমানের দ্বন্দ্ব চলে আসছে। ওই দ্বন্দ্বের জের ধরে আতিয়ার রহমানের বিরুদ্ধে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

(ওএস/এসপি/জুলাই ১৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৯ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test