E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শোক দিবসে সংঘর্ষ : ছাত্রলীগের ৬ জনকে বহিষ্কার

২০১৭ আগস্ট ১৬ ১৩:১৭:৫৫
শোক দিবসে সংঘর্ষ : ছাত্রলীগের ৬ জনকে বহিষ্কার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর সরকারী কলেজে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক সহ ৬ নেতা-কর্মীকে বহিস্কার করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। একই ঘটনায় ১৪ জনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। এদের মধ্যে ৪ জনকে আটক করেছে পুলিশ। সন্ত্রাসীদের দল থেকে বহিস্কার করায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সাধুবাদ জানিয়েছেন শরীয়তপুরের সুশীল সমাজের লোকেরা।  

শরীয়তপুর কলেজ শাখা ছাত্রলীগ ও পালং মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার (১৫ আগষ্ট) দুপুর ২টার দিকে শরীয়তপুর সরকারী কলেজে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে তুচ্ছ বিষয় নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মহসনি মাদবর ও যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল হোসেন টিপু কোতোয়ালের সমর্থকদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক সময় বিষয়টি হাতাহাতি পর্যায় পৌছায়। এরপর টিপু সমর্থকরা কলেজ হোষ্টেল থেকে দেশীয় অস্ত্র শস্ত্র এনে মোহসীন সমর্থকদের উপর হামলা চালায়। এতে রামদার কোপে কলেজ ছাত্রলীগের নেতা সোহান হাওলাদার গুরুতর জঘমসহ আরো ৫ জন আহত হয়। ঘটনা কিছুক্ষনর পরে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতার বাসভবন থেকে টিপু কোতোয়ালসহ ৪ জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। এদিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতেই ঢাকা পাঠানো হয়েছে সন্ত্রাসী হামলার শিকার সোহানকে।

সংঘর্ষের ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হবার পরে মঙ্গলবার রাতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত আলাদা দুটি চিঠিতে শরীয়তপুর সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছগীর হাওলাদার, সদস্য রাসেল সরদার, জাহিদ হাসান বাপ্পী, কলেজ শাখার সদস্য রাজীব দেওয়ান ও অনিক মাদবরকে স্থায়ী বহিস্কার করেন। এছারাও জেলার যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল হোসেন টিপু কোতোয়ালকে দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে সাময়িকভাবে বহিস্কার করেন। দলীয় শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে কেন তাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কার করা হবেনা মর্মে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে কারণ দর্শাতে বলে নোটিশ দিয়েছেন। একই অপরাধে শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মোহসীন মাদবরকেও কেন তাকে দল থেকে বহিস্কার করা হবেনা মর্মে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে জবাব চেয়ে কারণ দর্শানো হয়েছে।

সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে আহত সোহানের বাবা স্কুল শিক্ষক হারুন অর রশিদ হাওলাদার বাদী হয়ে ১৪ জনের বিরুদ্ধে পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। আসামীরা হলেন, জেলা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক (আসামী অনিক মাদবরের বাবা) আলী আজ্জম মাদবর (৪৮), জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল হোসেন টিপু (২৫) দিপু কোতোয়াল (২২), জাহিদ হাসান বাপ্পি (২৩), রাজিব দেওয়ান (৩০), অনিক মাদবর (২০), ইমন মাদবর (১৯), মিজান মুন্সী (২০), জাহাঙ্গীর আলম মাদবর (৩৫), আল আমিন (২১), বাহাদুর শিকদার (২৩), জাকির সরদার (৪২), সোহাগ মাল (২৪) ও রাজু শরীফ (১৯)।

এদের মধ্যে আলী আজ্জম মাদবর (৪৮), জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়ক ইকবাল হোসেন টিপু, জাহিদ হাসান বাপ্পি ও রাজিব দেওয়ানকে আটক করে পুলিশ বুধবার আদালতে হাজির করলে বিচারক তাদের কারাগারে প্রেরণ করেন।

শরীয়তপুর জেলা ছাত্রলীগের আহবায়ক মহসিন মাদবর বলেন, আমি কোন গ্রুপিং করিনা। আমাকেও সন্ত্রাসীরা গত বছর কলেজ ক্যাম্পাসে কুপিয়ে জখম করেছিল। মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় আমি কলেজে ছিলামনা। সদর উপজেলা অডিটরিয়ামে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শোক দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলাম। পরে জানতে পারি কলেজের আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে সামনের চেয়ারে বসাকে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়রদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে টিপু কোতোয়ালের নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের উপর দেশীয় অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে সোহান হাওলাদার সহ আরো ৫ জন আহত হয়েছে। শোক দিবসের অনুষ্ঠানে যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছিএবং এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

পালং মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান বলেন, শরীয়তপুর সরকারী কলেজে শোক দিবসের অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় একজনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। এ ঘটনায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ৪ আসামীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে।

(কেএনআই/এসপি/আগস্ট ১৬, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test