E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গড়াই বাঁচলে আমরা বাঁচবো, এলাকাবাসীর দাবি

২০১৭ আগস্ট ২৪ ২১:১১:৫৮
গড়াই বাঁচলে আমরা বাঁচবো, এলাকাবাসীর দাবি

মাগুরা প্রতিনিধি : শুষ্ক মৌসুমে যে দিকে তাকানো যায় মরুভূমির মত ধু-ধু বালু চর। বর্ষায় ভেসে প্লাবিত হচ্ছে ফসলী জমি পদ্মার প্রধান এ শাখা গড়াই। গড়াইয়ে দুই মৌসুমে এই বিপরীত রুপের কারনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক, জেলেসহ নদী পাড়ের হাজার-হাজার মানুষ। শুধু জীবন জীবিকার উপর নেতিবাচক প্রভাব নয়, বছরের অধিকাংশ সময় গোটা নদীর বুক জুড়ে বালু চর পড়ে থাকায় ধ্বংস হচ্ছে জীব বৈচিত্র। যে কারনে এলাকাবাসীর দাবী শ্রীপুরের রাজধরপুর থেকে দোরণনগর-লাঙ্গলবাধ হয়ে কুষ্টিয়া পর্যন্ত ডেজিং করে অথবা পরিকল্পিতভাবে নির্দিষ্ট চ্যানেল থেকে বালু কেটে সারা বছর বাচিয়ে রাখা হোক জেলার প্রধান এই নদীটিকে।

দোরণনগর গ্রামের মৃদুল কান্তি ঠাকুর জানান, শুস্ক মৌসুমে প্রায় ৮ মাস গড়াইয়ের বুক জুড়ে মরুভূমির মত ধু-ধু বালু চরের সৃষ্টি হয়। আবার বর্ষা মৌসুমে নদী ভরে প্লাবিত হয়ে ফসলী জমি তলিয়ে যায়। চলতি বর্ষায়ও নদী সংলগ্ন এলাকার বিঘার পর বিঘা ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে শত-শত কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। বর্তমানে তার নিজের এক বিঘা জমির ফসল পানিতে নষ্ট হচ্ছে। নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হওয়ায় অরো জমিতে তিনি চাষাবাদ করতে পারছেন না। গড়াই বাঁচলে আমরা বাঁচবো।

মৃদুল ঠাকুর জানান, শুধু কৃষকরাই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন না। এক সময় শ্রীপুরের রাজধরপুর থেকে দোরারনগর, আমলসার, লাঙ্গলবাধ এলাকার নদী তীরবর্তী কমপক্ষে ২০ গ্রামের জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু শুস্ক মৌসুমে বছরের কমপক্ষে ৮ মাস নদীর বুক জুড়ে মরুভূমির মত ধু-ধু বালু চরের সৃষ্টি হওয়ায় সে সব জেলেরা এখন বেকার হয়ে পড়েছেন।

দোরণনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সুভা বিশ্বাস জানান, তারা দীর্ঘদিন ধরে গড়াই নদী ড্রেজিং করার জন্য সংশ্লিষ্ট মহলের কাছে আবেদন নিবেদন করে আসছেন। তিনি বলেন, এক সময় দোরাণনগর, বিষ্ণুপুর এলাকায় ইজারাদার দিয়ে নির্দিষ্ট চর কেটে বালু অপসারণ করা হতো। এতে করে শুস্ক মৌসুমে অন্তত তাদের এলাকা দিয়ে প্রবাহিত নদীর পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকতো। তা হলে শুস্ক মৌসুমে কৃষকরা যেমন নদীর পানি সেচ হিসেবে ব্যবহার করে জমির ফসল ফলাতে পাতেন। অন্য দিকে জেলের মাছ শিকার করে জীবন সহজে জীবন ধারণ করতে পারতেন। কিন্তু অজ্ঞাত কারনে গত দুই বছর ধরে বালুর চর কাটাও বন্ধ রয়েছে।

এলাকাবাসী জিল্লুর রহমান অভিযোগ করেন, স্থানীয় কাদিরপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান হাইব্রিড আওয়ামীলীগার লিয়াকত আলী নিজে বালুর চর লিজ নিতে না পেরে বিভিন্ন মহলে নদী ভাঙ্গনের নামে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে বালু চর কাটা বন্ধ করে দিয়েছেন। জনপ্রতিনিধি হয়ে ব্যাক্তি স্বার্থে তিনি জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু এলাকাবাসীর দাবী ড্রেজিং বা ইজারার মাধ্যমে বালু কেটে নদীর পানি প্রবাহ স্বাভবিক রাখা হোক।

দোরাণনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ব্রজেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, গড়াই নদীর পলি আপসার অন্তত্য জরুরী। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, বর্ষা মৌসুমে অল্প সময়ের জন্য প্লাবিত হলেও বছরের অধিকাংশ সময় পলি পড়ে নদীর বুক জুড়ে বালু চরের সৃষ্টি হয়। অধিকাংশ সময় নদী পানি শুন্য থাকায় জেলে সম্প্রদায়ের মানুষ যেমন বেকার হয়ে পড়েছেন। অন্যদিকে নদীকে ঘীরে সৃষ্ট জীববৈচিত্র ধ্বংস হওয়ায় কারনে প্রকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল লতিফ গড়াই নদীর পলী পড়ার বিষয়টি শিকার করে বলেন, নদী বাঁচাতে ড্রেজিং বা নির্দিষ্ট চ্যানেল থেকে বালু অপসারণ প্রয়োজন। এতে করে ভাঙ্গন রক্ষা ও নদী বাঁচিয়ে রাখা সম্ভব হবে।

(ডিসি/এএস/আগস্ট ২৪, ২০১৭)


পাঠকের মতামত:

১৮ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test