E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জঙ্গল নাকি চিড়িয়াখানা!

২০১৭ সেপ্টেম্বর ০৭ ১৮:৪৩:১২
জঙ্গল নাকি চিড়িয়াখানা!

হুমায়ুন কবির জীবন, কুমিল্লা : ১৩ বছর ধরে বেহাল দশায় কুমিল্লার মানুষের একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র চিড়িয়াখানা ও বোটানিক্যাল গার্ডেন। নেই কোন দেখার মতো আকর্ষনীয় পশু। পুরো চিড়িয়াখানার ভেতরের চিত্র এখন জঙ্গলে পরিনত হয়েছে। যে স্থানগুলো দর্শনার্থীদের সমাগম ছিলো, সেসব স্থানগুলো অযত্ন অবহেলায় এখন ভাগাড়ে রূপ নিয়েছে। এই চিড়িয়াখানার একমাত্র আকর্ষনীয় প্রাণী যুবরাজ সিংহ থাকলেও ১২ বছর ধরে অসুস্থ্য অবস্থায় রয়েছে। উঠে দাড়াবার শক্তিটুকু অবশিষ্ট নেই তার। বর্তমানে এই প্রাণীটি তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে কিছুদিন আগে বিশাল অজগর সাপটিও মারা যায়। আর ১৪ বছর আগে মারা যায় একমাত্র বাঘ রয়েল বেঙ্গল টাইগার। বর্তমানে এই চিড়িয়াখানায় আট-দশটি বানর, দু’টি হরিন, দু’টি ঘোড়া ছাড়া আর কিছুই নেই। সবগুলো খাঁচাই এখন শুণ্য অবস্থায় রয়েছে।

বৃহস্পতিবার কুমিল্লা চিড়িয়াখানা ঘুরে দেখা যায় সব জায়গার জরাজীর্ণ অবস্থা। ডোবা আর আগাছায় পূর্ণ হয়ে আছে দর্শনীয় স্থানগুলো। নেই কোন দর্শনার্থী। বিশেষ দিনগুলোতোও বিনোদন প্রেমীদের আনাগোনা দেখা যায় না। দুর দূরান্ত থেকে আসা বিনোদনপ্রেমীরা টিকেট কেটে ঢুকলেও হতাশ হয়ে ফিরে যেতে দেখা যায়। অনেককে দেখা গেছে দূর্গন্ধে মুখে কাপড় দিয়ে হাটতে। সব মিলিয়ে চিড়িয়াখানার অবস্থা এখন নাজেহাল।

ঘুরতে আসা সদর দক্ষিণের আবদুল জলিল বলেন, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আসলাম চিড়িয়াখানায়, অথচ এখানে দেখার মতো কিছুই নেই। কোন পশু প্রাণী দেখতে পেলাম না। সিংহটা যাও দেখলাম তাও অসুস্থ্য। পুরো চিড়িয়াখানা জংগলের মতো দেখা যায়। টিকেট কাটার টাকাটাই বিফলে।

ঘুরতে আসা আরেক দর্শনার্থী পুতুল আক্তার বলেন, ছোটবেলায় এসে অনেক কিছু দেখতাম, আনন্দ লাগতো। আর এখন কিছুই নেই। খুবই অবাক হলাম, এতো সুন্দর চিড়িয়াখানা কিভাবে এই অবস্থা হলো। বাচ্চাদেও নিয়ে দীর্ঘদিন পর আসলাম। বাচ্চাদের মন খারাপ হয়ে গেলো।

কুমিল্লা চিড়িয়াখানার ইজারাদার মামুনুর রহমান পাটোয়ারী জানান, চিড়িয়াখানাটি অনেক বেহাল অবস্থায় রয়েছে। আগের মতো এখন আর নেই। দর্শনার্থীদের অনেক অভিযোগ শুনতে হয়। একমাত্র অসুস্থ্য সিংহ আর কয়েকটি বানর-হরিন ছাড়া নেই কোন পশু পাখি। সব জায়গা ভাঙ্গা চোরা অবস্থায় রয়েছে। বেশিরবাগ খাঁচা ফাঁকা অবস্থায় পরে রয়েছে। রাস্তার অবস্থাও অনেক খারাপ ছিল, তবে সম্প্রতি নতুন করে রাস্তা করা হয়েছে। সীমানা প্রাচীর ভেঙে গেছে। জেলা পরিষদ উদ্যোগ নিয়েছে নতুন করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণের। যদি কুমিল্লা জেলা পরিষদ থেকে চিড়িয়াখানার উন্নয়ন করা হয় তবে আবারো এখানে দর্শনার্থীরা আসতে শুরু করবে।

(এইচকেজে/এএস/সেপ্টেম্বর ০৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

১৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test