E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

কুষ্টিয়ায় আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীকে হয়রানীর অভিযোগ

২০১৭ অক্টোবর ২৭ ১৪:০২:১১
কুষ্টিয়ায় আ.লীগ নেতার বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীকে হয়রানীর অভিযোগ

চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নানের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘু ব্যবসায়ীকে হয়রানীর অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : আব্দুল হান্নান মন্ডল। তিনি কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা ও তালবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান। তার বিরুদ্ধে রানাখড়িয়া এলাকায় এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বালু ব্যবসায়ীকে নানাভাবে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে।

চেয়ারম্যান দাবিকৃত টাকা না পেয়ে উজ্জল কুমার পাল নামের ওই বালু ব্যবসায়ীকে সবার সামনেই জুতা দিয়ে পিটিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ বিষয়ে মিরপুর থানায় সাধারন ডায়েরি করেছেন ব্যবসায়ী উজ্জল কুমার পাল। বিষয়টি তদন্ত করছেন মিরপুর থানার এসআই শাহাবুদ্দিন।

শুক্রবার(২৭ অক্টোবর) দুপুরে এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত মিরপুর থানা পুলিশ তদন্ত ছাড়া আর কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেনি।

জানা গেছে, রানাখড়িয়া এলাকার বালু ব্যবসায়ী উজ্জল কুমার পাল ব্যবসা করার জন্য একই এলাকার মৃত আবুল হোসেন মাষ্টারের ছেলে রবিউল করিমের কাছে নিজের ব্যাংক একাউন্টের চেক জামানত হিসেবে রেখে ৬ লাখ টাকা নেন। এ জন্য উজ্জল তাকে প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা করে সুদ দিয়ে আসছিলেন। এ জন্য রবিউলের কাছে এনসিসিবি ব্যাংকের একটি চেক দেন উজ্জল। বেশ কয়েক মাস পুর্বে রবিউল টাকা ফেরত চান উজ্জলের কাছে। উজ্জল টাকা দিলে রবিউল তার কাছে থাকা উজ্জলের দেয়া চেকটি তাকে ফেরৎ দেন।

উজ্জল থানায় যে জিডি করেছেন তাতে অভিযোগ করে বলেন, চেক ফেরৎ দেয়ার সময় রবিউল সু-কৌশলে ১০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে লিখে রাখে। পাশাপাশি চেকে আমার যে স্বাক্ষর ছিল তাও নকল করে স্বাক্ষর করে রাখে।


উজ্জল অভিযোগ করে জানান, ৬ লাখ টাকা ফেরৎ পাবার পর কিছুদিন পর রবিউল করিম তালবাড়িয়া ইউনিয়নে টাকা পাবে মর্মে আমার নামে অভিযোগ দায়ের করে। এরপর তালবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শালিস ডাকলে আমি সেখানে হাজির হয়। হাজির হওয়ার পর সে আগের দেয়া চেকটি দেখতে চান। এ সময় আমার কাছে থাকা চেকটি তাকে দেখতে দিলে সে ফেরৎ না দিয়ে রেখে দেয়। সে সময় স্থানীয় মেম্বাররাসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এরপর থেকে তিনি চেকটি ফেরৎ না দিয়ে তালবাহানা করতে থাকেন। এর মাঝে সে বিভিন্ন সময় আমার কাছে অর্থ দাবি করে। টাকা না দেয়ায় সে সবার সামনে আমাকে জুতা খুলেও পিটিয়েছে। আমি হিন্দু বলে সে আমার ওপর চরম নির্যাতন চালিয়েছে।
উজ্জল বলেন, চেয়ারম্যান হান্নান মন্ডল আমাকে বলেন দুই লাখ টাকা দে, সব ঠিকঠাক করে দিচ্ছি। আমি টাকা না দিতে চাইলে সে আমাকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলে বেশি বাড়াবাড়ি করলে খালি হাতে ভারতে চলে যেতে হবে। আমি শেষ পর্যন্ত না পেরে গত ১৮ অক্টোবর থানায় জিডি করেছি (জিডি নং-৭৯২)। এরপর থেকে সে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমাকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে।

এদিকে উজ্জল মিরপুর থানায় যে জিডি করেছেন তাতে স্বাক্ষী হয়েছেন হান্নানের চাচা ও চাচাতো ভাই। তারাও জিডির তদন্তে আসা দারাগোকে জানিয়েছেন, সবার সামনে আব্দুল হান্নান মন্ডল চেকটি মেম্বারসহ তাদের উপস্থিতিতে উজ্জলের কাছ থেকে নেন। এরপর নানাভাবে তাকে হয়রানী করে আসছেন।

এদিকে হান্নানের বিরুদ্ধে করা জিডির তদন্ত কর্মকর্তা এসআই শাহাবুদ্দিন জানান, দুই স্বাক্ষীর সাথে কথা বলেছি। এছাড়া ঘটনাস্থলেও গিয়েছিলাম। সবার সাথে বলে মনে হয়েছেন চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ইচ্ছাকৃতভাবে উজ্জলকে হয়রানী করে আসছে। রবিউল আলম টাকা পেয়ে চেকটি উজ্জলকে ফেরত দেয়। এরপর সবার সামনে স্বাক্ষর মেলানোর কথা বলে চেকটি নিয়ে নেন চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান। এরপর উজ্জলকে টাকার জন্য হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছেন।

এ বিষয়ে তালবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান মন্ডলের সাথে কথা হলে বলেন, উজ্জল কুমার পাল ও জিডির স্বাক্ষী রুহুল আমিন দু’জনই খারাপ মানুষ। উজ্জলের সব বিপদ-আপদে আমি তার পাশে থেকে সাহায্য করেছি। রুহুল আমিনের কাছেও রবিউল করিম ১০ লাখ টাকা পাবে। এ টাকা যাতে না দিতে হয় সে জন্য দুই চিটার হাত মিলিয়ে আমার নামে আজেবাজে কথা বলে বেড়াচ্ছে।

(কেকে/অ/অক্টোবর ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

২০ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test