E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিচার বিভাগকে প্রকল্প বানিয়েছে সরকার : খসরু

২০১৭ ডিসেম্বর ০৪ ১৬:২৭:৪৭
বিচার বিভাগকে প্রকল্প বানিয়েছে সরকার : খসরু

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, অবৈধ সরকারের সর্বশেষ বাধার জায়গা ছিল বিচার বিভাগ। সেটা বুঝতে পেরে সরকার বিচার বিভাগকে একটা প্রকল্প হিসেবে নিয়েছে। প্রকল্পটা হচ্ছে পুরো বিচার বিভাগকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে।

সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের তৃতীয় তলার কনফারেন্স লাউঞ্জে 'বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি' শীর্ষক নাগরিক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। স্বাধীনতা অধিকার আন্দোলন এ সভার আয়োজন করে।

আমীর খসরু বলেন, দেশে আইনের শাসন নেই, শাসকের আইন চলছে। অর্থাৎ শাসক যেটা বলছে সেটাই আইন। শাসক তার ইচ্ছামত, সুবিধামত, আইন তৈরি করছে এবং প্রয়োগও করছে। এ অনির্বাচিত সরকার তাদের নিজেদের আইন প্রয়োগের জন্য সংবিধান পরিবর্তন করেছে। বিভিন্ন আইন করেছে অনির্বাচিত সংসদের মাধ্যমে। প্রতিনিয়ত দেশ বিরোধী আইনগুলো জনগণের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে। আমি বলব এটা সরকারের একটি প্রকল্প।

বেগম জিয়া ও সাবেক বিচারপতি এস কে সিনহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা এবং এস কে সিনহার বিদায়, এর মধ্যে একটা সম্পর্ক আছে। এটা একটি পরিকল্পিত বিষয়। প্রধান বিচারপতি দেশে ন্যায়বিচার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য কাজ করছিলেন।

তিনি আরও বলেন, এস কে সিনহা বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য, অনির্বাচিত সরকারের হাত থেকে দেশকে বাঁচানোর জন্য ষোড়শ সংশোধনী বাতিলের রায় দিয়েছেন, যা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা কোনো ব্যক্তি বিশেষের ব্যাপার নয়, এটা দেশের আইনের শাসন থাকবে নাকি শাসকের আইন থাকবে এটা পরিষ্কার করার জন্য। যে কারণে প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। পদত্যাগ করতে হয়েছে।

অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকতে সরকারে বাধার জায়গা ছিল বিচার বিভাগ মন্তব্য করে সাবেক এ মন্ত্রী বলেন, 'একটা পর্যায় এই অবৈধ সরকার সর্বশেষ বাধার জায়গা ছিল বিচার বিভাগ। সেটা তারা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছে। যে কারণে তারা বিচার বিভাগকে একটা প্রকল্প হিসেবে নিয়েছে। প্রকল্পটা হচ্ছে পুরো বিচার বিভাগকে তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে। যার কারণে নিম্ন আদালত নির্বাহী বিভাগের অধীনে থাকবে অর্থাৎ শাসকের অধীনে থাকবে। উচ্চ আদালতের বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সংসদে ষোড়শ সংসধনী করেছিল, বিচারকদের তাদের উপর নির্ভরশীল করার জন্য। যেটা ষোড়শ সংসধনী বাতিলের মাধ্যমে (এস কে সিনহা) তিনি মুক্ত করার চেষ্টা করেছেন। সেটা তারা (সরকার) বুঝতে পেরে (এসকে সিনহা) তাকে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে, পদত্যাগ করতে করতে বাধ্য করেছে। এটাই হচ্ছে দেশের বর্তমান বিচার বিভাগের অবস্থা।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এই অবস্থার পিছনে যে চিন্তা ছিল তার শিকার হয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। এসব পরিকল্পনার পিছনে উদ্দেশ্য ছিল খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়াকে আগামী নির্বাচনে বাধাগ্রস্ত করবে, নির্বাচনে বাধাগ্রস্ত করে নির্বাচনী ফসল তারা ঘরে তুলে নিয়ে যাবে। একটা বৃহত্তর পরিকল্পনা করে তারা এগুলো করছে। কিন্তু আমরাও পরিষ্কার করে বলতে চাই এভাবে ফসল ঘরে তোলার কোনো সুযোগ নাই। ফসলতো তুলতেই পারবেন না, বরং এটার জন্য অনেক বড় মূল্য দিয়ে আপনাদের (আওয়ামী লীগ) বিদায় নিতে হবে। আমরা চাই না সেভাবে আপনারা বিদায় হন। আপনারা রাজনীতিতে থাকুন। এজন্য একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন।'

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি যে চুক্তি হয়েছে তা কখনও বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। এই চুক্তি করা হয়েছে জনগণকে ধোকা দেয়ার জন্য।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ড. কাজী মনিরুজ্জামান মনিরের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, নির্বাহী সদস্য আবু নাসের মো. রহমাতুল্লাহ, জিনাপের সভাপতি মিয়া মোহাম্মাদ আনোয়ার প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test