E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

বিএনপির শিক্ষার অভাবে ফের এক এগারোর শঙ্কায় কাদের

২০১৮ জানুয়ারি ১১ ১৫:১৬:২৫
বিএনপির শিক্ষার অভাবে ফের এক এগারোর শঙ্কায় কাদের

স্টাফ রিপোর্টার : ২০০৭ সালের ১১ জানুয়ারি জরুরি অবস্থা জারির মতো পরিস্থিতি এখনও রয়ে গেছে বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আর এ জন্য তিনি এক এগারো থেকে বিএনপির ‘শিক্ষা’ না নেয়াকে দায়ী করেন।

আরেকটি ওয়ান-ইলেভেন হওয়ার আশঙ্কা আছে কি না-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, ‘ওয়ান ইলেভেন থেকে আমরা শিক্ষা নিয়েছি কিন্তু বিএনপি নেয়নি। সে কারণে ভয় আছে। আশঙ্কা আছে।’

২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বিএনপি সরকারের আমলের রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন আহমেদকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগের বিরোধিতা করে আন্দোলনে ছিল আওয়ামী লীগ। এর আগে কে এম হাসানকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে মানা হবে না জানিয়ে আন্দোলনে ছিল বর্তমান ক্ষমতাসীন দল।

আর দুই প্রধান দলের মুখোমুখি অবস্থানে দেশে যখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ছড়াচ্ছে, তখন সেনপ্রধান মঈন উ আহমেদ রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ইয়াজউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে দেখা করেন। পরে প্রধান উপদেষ্টার পদ ছেড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন রাষ্ট্রপতি। আর প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পান বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ফখরুদ্দীন আহমেদ। বিএনপি সরকারের শেষ দিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সদস্য হিসেবে যারা নিয়োগ পেয়েছিলেন, তাদের সবাই পদত্যাগের গঠন করা হয় নতুন উপদেষ্টা পরিষদ।

ওই সরকারের প্রায় দুই বছরের শাসনামলে প্রথমে শেখ হাসিনা এবং পরে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। দুই নেত্রীকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেয়ার উদ্যোগও নেয় সেই সরকার, যা ব্যাপকভাবে পরিচিতি পায় ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ হিসেবে।

তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার শেষ পর্যন্ত ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’ কার্যকর করতে ব্যর্থ হয় এবং ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

এই সরকারের দুই বছরের শাসনামলে রাজনীতিক, ব্যবসায়ীসহ বহু মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং বিশেষ আদালতে সাজাও হয় অনেকের। এই শাসনামল নিয়ে সমালোচনায় মুখর আওয়ামী লীগ ও বিএনপি-দুই পক্ষই।

পাঁচ বছর পর বিএনপি-জামায়াত জোট নির্বাচন বর্জন করে ভোট ঠেকাতে সহিংস আন্দোলন করে। এবারও তাদের দাবি পূরণ না হলে আন্দোলনে যাওয়ার হুমকি দিচ্ছে দলটি। এই অবস্থায় ওবায়দুল কাদেরের কাছে একজন সাংবাদিকের প্রশ্ন ছিল ১১ বছর আগের মতো পরিস্থিতি আবার তৈরির আশঙ্কা তিনি করছেন কি না।

কাদের বলেন, ‘ বিএনপি তার বর্তমান অবস্থা জেনে গেছে। নির্বাচনের আগেই সারা দেশের আওয়ামী লীগের জোয়ার দেখে বিএনপি বুঝে গেঝে যে আগামী নির্বাচনে তাদের পরিণতি কী। ভোট পাওয়ার মতো কোনো কাজ করেনি। সে কারণে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার চেষ্টা করবে বিএনপি। কিন্তু আওয়ামী লীগ বিএনপির সেই দুরভিসন্ধিতা বাস্তবায়ন করতে দেবে না।’

বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন ওবায়দুল কাদের।

নিজেদের দল এবং সরকারের চার বছর নিয়ে সংকট বা ত্রুটি দেখেন কি না এমন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দলের ভেতরে ছোটখাটো সমস্যা থাকতেই পারে। সে কারণে কোথাও কোথাও সম্মেলন হয়নি। তবে দলকে আধুনিক এবং মাঠকে সুসংগঠিত করে শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই আগামী নির্বাচনে অংশ নেব।

‘ইতিমধ্যে আমাদের টিম নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রত্যেক্যের সাংগঠনিক এলাকায় তারা টিম ওয়ার্ক করে সমস্যা চিহ্নিত করে সমাধান নেবে।’

সরকারের সাফল্য-ব্যর্থতার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘এ নিয়ে ১২ তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে বলবেন। এরপর দলীয়ভাবে আমরা একটি সংবাদ সম্মেলনে আমরা আমাদের কথাগুলো বলব।’

‘আপাতত এতটুকু বলা যায়, আমাদের ত্রুটি নেই এমনটি বলব না, চাঁদেরও তো কলঙ্ক আছে। তাই বলে কি আলো থেমে থাকে? আমাদের অনেক সফলতা আছে, ত্রুটিও আছে। তাই বলে আমাদের উন্নয়নকে ঢেকে রাখা যাবে না।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আবদুর রহমান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক আহমদ হোসেন, এনামুল হক শামীম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদ, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুস সবুর, শিক্ষা ও মানব সম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রোকেয়া সুলতানা, উপ প্রচার আমিনুল ইসলাম, উপ দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/জানুয়ারি ১১, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test