E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

'আমাদের ইতিহাস একদিনের ইতিহাস নয়'

২০১৮ জানুয়ারি ২৪ ১৯:৫২:২৮
'আমাদের ইতিহাস একদিনের ইতিহাস নয়'

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, আমাদের ইতিহাস একদিনের ইতিহাস নয়। কোন একক সংগঠনের ইতিহাস নয়। এক ব্যক্তি বা এক দল বা এক মানুষের ইতিহাস নয়। এটি ছিল একটি সামষ্টিক আন্দোলন। যে আন্দোলন সকল স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল।

বুধবার বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডের কার্যালয় চত্বরে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি আয়োজিত ‘শহীদ আসাদ ও গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি একথা বলেন।

রাশেদ খান মেনন ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের পটভূমির বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে বলেন, ‘আমাদের ইতিহাসে তার জায়গা এবং উচ্চারণ খুবই ক্ষীণ অথবা একেবারেই নেই। তার (আসাদ) স্মৃতিস্তম্ভটি ধুলায় আচ্ছাদিত ও ভগ্ন অবস্থায় এখনো পড়ে আছে ঢাকা মেডিক্যালের সামনে।’

দিনটি নিয়ে খবরের কাগজও তেমন লেখালেখির মাধ্যমে তাকে স্মরণ করে না- সে বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মেনন বলেন, ‘আজকে সকালে খবরের কাগজ পড়ছিলাম। ডেইলি স্টার দ্বিতীয় পাতার এক কোণে এবং প্রথম আলো একটু বড় আকারে খবর দিয়েছে। কিন্তু সেই খবরের মধ্যেও দেখলাম ইতিহাসের ভুল। ওখানে বলা হয়েছে, ছয় দফার পরিপূরক হিসেবে ছাত্ররা ১১ দফা রচনা করেছিলেন। আমি খুব স্পষ্টভাবে বলতে চাই, ১১ দফা কোন দফার সম্পূরক নয়। ১১ দফা স্বয়ংসম্পূর্ণ।

সেই ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ২১ দফার লড়াই থেকে শুরু করে ছাত্রদের ১১ দফার লড়াই; এই সমস্তের বিস্তৃতি হয়েছে আমাদের সংবিধানে বলেও উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘গণআন্দোলনে মানুষ সচেতনভাবে নিজের প্রাণ দিতে প্রস্তুত হয়েছিল।’

ওই গণঅভ্যুত্থানের স্লোগানে দুটি ধারা ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটি হচ্ছে জাতীয়তাবাদী ধারা আরকটি হচ্ছে বামধারা। কিন্তু স্লোগান এক এবং এক মোহনায় মিলে যাচ্ছে; সেটি হচ্ছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের কারণে মুক্তিযুদ্ধে মানুষের অংশগ্রহণ সম্ভব হয়েছিল দাবি করে তিনি আরো বলেন, ‘আজকে যখন আমরা ইতিহাস পড়ি তখন আমাদের মনে হয় যেন সেই ১৯৫১ থেকে ৬০, ৬০ থেকে ৬৬, ৬৬ থেকে এক লাফে ৭০'র নির্বাচন আর মুক্তিযুদ্ধ; ঊনসত্তর হারিয়ে গেছে।’

কারো নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের হিরো কে ছিল? এর নায়ক কে ছিল? আমরা আমাদের নিজেদেরকে পরিচিত করি? আমাকে কমরেড মোস্তফা আলমগীর রতন বললেন, আমি নেতৃত্বদান করেছি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে! হয়ত আরেকজনকে কেউ দাবি করেন... বলেন; ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক। কেউ মহানায়ক নয়। আমরা কেউ নেতৃত্ব দেই নাই, সেদিন নেতৃত্বে ছিল জনগণ। জনগণ ছিল সেই আন্দোলনের হিরো। যে জনগণ সংগঠিত হয়েছিল ছাত্রদের ১১ দফায়। কারণ এই ১১ দফায় তাদের সম্পূর্ণ দাবির যে প্রকাশ সেই দাবির বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল।’

বাহাত্তরের সংবিধানের যে ভিত্তিভূমি সেগুলো ২১ দফা এবং ছয় দফার মধ্য দিয়েই রচিত হয়েছিল বলেও উল্লেখ করেন প্রবীণ এই বাম নেতা।

তিনি বলেন, ‘আমি আজকে ক্লাশ নিতে আসি নাই। আমি আজকে বলতে এসেছি, ইতিহাসের ধারাকে স্মরণ রাখতে হবে। ইতিহাসের ধারাকে চেতনার মধ্যে ধারণ করে ইতিহাসের ধারা উপলব্ধির মধ্যে নিয়ে আসুন। তাহলেই কাজে চিন্তা ভাবনায় একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে মানুষের কাছে যেতে পারবো।

জনগণই কেবল পারে আমাদের মুক্তি দিতে। দল নয়, ক্ষুদ্র গোষ্ঠী নয়। তাই আজকে সেই জনগণকে সংগঠিত করাই হচ্ছে মূল কাজ। সেটা নির্বাচনেই হোক, আন্দোলনেই হোক, সেটা বিপ্লবেই হোক। সবক্ষেত্রেই জনগণের উপর দাঁড়িয়ে আমাদের লড়াইটা করতে হবে।’

সভায় সভাপতিত্ব করেন কমরেড মাহমুদুল হাসান মানিক। এছাড়াও আলোচনায় অংশ নেন পলিট ব্যুরো সদস্য কামরুল আহসান ও নুরুল হাসান।

(ওএস/অ/জানুয়ারি ২৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৩ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test