E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘মাদক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা’ 

২০১৮ মে ২৫ ১৮:৫৯:২৩
‘মাদক নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে নির্বিচারে মানুষ হত্যা’ 

স্টাফ রিপোর্টার : সরকার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ হয়ে বেপরোয়াভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, মাদক ব্যবসায়ীদের তালিকা আছে তাদের কাছে আছে। তাহলে এই অভিযান আগে থেকে চালিয়ে মাদক নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেননি কেন এই প্রশ্নও রাখেন মওদুদ।

শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক প্রতিবাদী নাগরিক সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে এই সভার আয়োজন করে ‘খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ’ নামের একটি সংগঠন।

গত ৪ মে থেকে সারাদেশে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে ৭০ জনেরও বেশি মারা গেছে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, সন্দেহভাজনকে আটক করতে গেলে বা তাদেরকে নিয়ে অভিযানে বের হলে সন্দেহভাজন বা তার সহযোগীরা গুলি করে। আর পাল্টা গুলিতে নিহত হয়েছেন সন্দেহভাজন।

মওদুদ আহমদ বলেন, ‘মাদক নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারার কারণ হলো, এই মাদক ব্যবসায় তাদের নেতারা জড়িত। হাজার হাজার কোটি টাকা তারা এখান থেকে আয় করেছে। এখন নির্বিচারে মানুষ মারা শুরু করেছে। ৮ মে থেকে ২৫ মে ১৭ দিনে ৫৮ জন মানুষ মারা গেছে। মানুষের জীবনের কি কোনো মূল্য নেই?’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা চাই মাদক নির্মূল করা হোক। কিন্তু মানুষ মেরে নয়। তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। যাদেরকে হত্যা করা হচ্ছে এরা তো মালিক না, এরা তো বাহক। তারা বিক্রি করে মালিককেই দেয়। সেই মালিক কারা? তারা এই সরকারের মদদপুষ্ট। মাদক ব্যবসা উচ্ছেদ হোক। কিন্তু মানুষকে হত্যা করা যাবে না।’

মাদক নির্মূলের নামে বিরোধী দলকে উচ্ছেদ করতে চায় সরকার দাবি করে মওদুদ বলেন, ‘এর মাধ্যমে বিরোধী দলকে উচ্ছেদ করতে চায় সরকার। কিছু দিনের মধ্যেই দেখবেন বিরোধী দলের নেতাদের বন্দুকযুদ্ধের নামে হত্যা শুরু করবে।’

নির্বাচন বিষয়ে মওদুদ বলেন, ‘খুলনায় জনগণের নির্বাচন হয়নি, পুলিশি নির্বাচন হয়েছে। খুলনায় প্রায় ১০০ কেন্দ্রে আমাদের এজেন্টদের দাঁড়াতে দেয়া হয়নি। এখন তারা খুলনা স্টাইলে গাজীপুরেও নির্বাচন করতে চায়। কিন্তু তারা যদি সে চেষ্টা করে এবার আমরাও দেখবে তারা কীভাবে করে। আমরাও সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে প্রতিরোধ করবো।’

নির্বাচন কমিশনের কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘একটি তল্পিবাহক নির্বাচন কমিশন। সরকার যা চাইবে তাই করবে। তারা আচরণবিধি পরিবর্তন করছে। এখন সংসদ সদস্যরা প্রচার চালাতে পারবেন। সংসদ সদস্য মানে তো আওয়ামী লীগের। এরা যেন প্রচার চালাতে পারেন। এটি দূরভিসন্ধিমূলক লক্ষ্য আছে।’

মওদুদ বলেন, ‘এই সরকার আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে এটি করেছে। তারা সংসদ রেখে আগামী নির্বাচন করতে চায়। তাই এই নিয়ম রেখেছে। সংসদ সদস্য থেকেই নির্বাচনী প্রচারণা চালানোর জন্য করেছে। আচরণবিধি পরিবর্তন করা ষড়যন্ত্রের অংশ। এটি তারা এই জন্য করেছে ভবিষ্যৎ নির্বাচনে এমপিরা যেন সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে নিজের প্রচার চালাতে পারে। এভাবে হলে তো আমার পক্ষেও নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।’

খালেদা জিয়ার মুক্তি বিষয়ে মওদুদ বলেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত জামিন দেয়ার পর কি আর কোনো কথা থাকে? যদি কয়েকটি মামলা থেকেও থাকে, তাহলে দুয়েকদিনের মধ্যেই তার জামিন হয়ে যায়। কিন্তু হবে না। নিম্ন আদালতের বিচারকরা সরকার যা চাইবে তা করবে। নির্বাচন কমিশনও তাই করে।’

সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, ‘আইন আদালত ও শান্তিপূর্ণ কোনো কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার মুক্তি সম্ভব নয়। আন্দোলন ছাড়া জনগণের দাবি কোনোভাবে আদায় করা যায় না। রমজান মাসের পরে আমাদের কঠোর কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করে আনতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘আমরা আশা করবো প্রধানমন্ত্রী খালি হাতে ফিরবেন না। আমরা আশা করি তিনি তিস্তার পানি চুক্তি বাস্তবায়ন করেই ফিরবেন। আর না হলে আমরা বলবো তিনি ভারত সফরে ব্যর্থ হয়েছেন।’

খালেদা জিয়া মুক্তি পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত সভায় আরেও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/মে ২৫, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test