E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

গ্রেফতার বাণিজ্যের সঙ্গে হত্যা বাণিজ্য চলছে 

২০১৮ মে ২৬ ১৩:০২:৫৬
গ্রেফতার বাণিজ্যের সঙ্গে হত্যা বাণিজ্য চলছে 

স্টাফ রিপোর্টার : মাদকবিরোধী অভিযানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেছেন, ‘বাতাসে বারুদের পোড়া গন্ধ ছড়িয়ে দিয়ে সরকার নিজের জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে আনবে।’

তিনি বলেন, ‘একদিকে জনগণকে ভয় পাইয়ে দিতে সরকারি চক্রান্ত বাস্তবায়ন হচ্ছে অন্যদিকে নিরীহ লোকদের ধরে হত্যা ও হত্যার ভয় দেখিয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর চলছে ঈদের আগে রমরমা বাণিজ্য। প্রত্যেক ঈদ মওসুমে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ধরনের রমরমা বাণিজ্য করার সুযোগ করে দেয়া হয়, এখন গ্রেফতার বাণিজ্যের পাশাপাশি হত্যা-বাণিজ্য চলছে।’

শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী আহমেদ বলেন, ‘এখন পর্যন্ত ৭৫ জনকে হত্যা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গতরাতেও পাঁচ জেলায় সাতজনকে ক্রসফায়ারে দেয়া হয়েছে। গোটা দেশকে হত্যার বধ্যভূমিতে পরিণত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে মাদক নির্মূলের নামে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। এভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যা সকলের জন্য রীতিমতো উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের কারণ হতে পারে। এখন ক্রমান্বয়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে এবং নতুন করে টার্গেট করা হচ্ছে। অনেক পরিবারের অভিযোগ, তুলে নেয়ার পর পুলিশের দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় রাতে বিচারবহির্ভূতভাবে নিরীহ লোকদের হত্যা করা হয়।’

তিনি বলেন, ‘এখন দেশজুড়ে মাদকবিরোধী যে অভিযান চলছে সেখানে পুলিশ তাদের ইচ্ছামতো সাধারণ মানুষদের বিশেষ করে কোথাও কোথাও বিএনপিসহ বিরোধী দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ধরে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করছে, হয়রানি করছে এবং দাবিকৃত টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হলে তাদেরকে নির্মমভাবে ক্রসফায়ারে হত্যা করা হচ্ছে, হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। যদিও বলা হচ্ছে তালিকা করে প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের ধরা হচ্ছে, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা। আসলে মাদক ব্যবসায় যারা গডফাদার তারা মূলত আওয়ামী লীগেরই লোক, আর সেই কারণেই তারা থাকছে ধরাছোঁয়ার বাইরে।’

রিজভী বলেন, ‘অবিলম্বে এসব নাটক বন্ধ করুন, মাদক নির্মূলের নামে বিএনপিসহ বিরোধীদলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ হত্যা বন্ধ করুন। আমরা বরাবরই বলে আসছি, বিএনপি মাদকবিরোধী অভিযানের বিরুদ্ধে নয়, আপনারা প্রকৃত মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা নয়। বিচারবহির্ভূত হত্যার এই মহৌৎসব আইনবিরোধী, নৈতিকতা বিরোধী ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’

স্থানীয় সরকার নির্বাচনে এমপিদের গণসংযোগের সুযোগ রেখে নির্বাচন আচরণবিধির যে সংশোধন হয়েছে তা নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সমালোচনায় মুখর হন রিজভী।

তিনি বলেন, ‘সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচার-প্রচারণায় অংশগ্রহণের সুযোগ দিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধিমালা সংশোধন করেছে ইসি, যা গভীর ষড়যন্ত্রমূলক এবং ভোটের ময়দান ধ্বংসের সামিল। এর ফলে ভোটের মাঠে সমান সুযোগ থাকবে না। এটি ভোটারদের প্রতি চরম বিশ্বাসঘাতকতা।’

রিজভী বলেন, ‘এটি নির্বাচনী রায়ের মধ্যদিয়ে জনগণের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেয়ার ক্ষমতাকে আটকে ফেলা হলো। ক্ষমতাসীন দলকে লাভবান করতেই ইসি নির্বাচনী এই আচরণবিধি সংশোধন করেছে। গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে- একজন নির্বাচন কমিশনার এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে নোট অব ডিসেন্ট দিলেও প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা সরকারি দলের নুন খাওয়ার অমর্যাদা করেননি। তিনি সরকারের এই ইচ্ছা পূরণের মধ্যদিয়ে সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন কমিশনকে শেখ হাসিনার আঁচলে বেঁধে দিলেন। তিনি বর্তমান নির্বাচনী ব্যবস্থাকে ক্ষমতাসীন দলের একচেটিয়া মাঠে পরিণত করতেই নীরবে-নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, অ্যাডভোকেট আবেদ রাজা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/মে ২৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

০৪ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test