E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

৩০ জেলায় নির্যাতনের যে চিত্র দিল ঐক্যফ্রন্ট

২০১৮ ডিসেম্বর ১৭ ১৬:২১:৫৩
৩০ জেলায় নির্যাতনের যে চিত্র দিল ঐক্যফ্রন্ট

স্টাফ রিপোর্টার : আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনার জন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। বৈঠকে ঢাকাসহ ৩০ জেলায় পুলিশি হয়রানি ও ‘আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের’ হাতে বিএনপি ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের নির্যাতন বন্ধে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) হস্তক্ষেপ চেয়ে চিঠি দিয়েছে ঐক্যফ্রন্ট।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত ৮ পৃষ্ঠার অভিযোগপত্রে বলা হয়, রবিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মহানগর কদমতলী বিএনপির সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি মীর হোসেন মীরুর বাড়িতে গোয়েন্দা বিভাগের একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারের নেতৃত্বে হানা দেয় ও খুঁজতে থাকে। এ সময় ধানের শীষে প্রচার চালানো যাবে না বলে হুমকি দেয় তারা। অন্য নেতাকর্মীদের বাসায়ও তল্লাশির নামে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে পুলিশ। এছাড়া আগামী নির্বাচনে ভোট থেকে বিরত রাখার জন্য পুলিশ অস্ত্রতুলে হুমকি দেয়।

ঢাকা-৯ সংসদীয় আসনে ধানের শীষের প্রার্থী আফরোজা আব্বাস ১২ ডিসেম্বর জনসংযোগে বের হলে আকস্মিক আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আক্রমণ চালায় ও ধানের শীষের লিফলেট কেড়ে নেয়া হয়। এবং তার গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। বিএনপি'র স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডাক্তার রফিকুল ইসলাম বিএনপি নেতা রিপন ও সিরাজসহ অনেকেই গুরুতর জখম হয়।

নিউমার্কেট থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারীকে সাদা পোশাকে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

একইভাবে মহানগর দক্ষিণের সভাপতি আবদুল হামিদের বাসায় তল্লাশির নামে হামলা চালায় পুলিশ। নির্বাচন কমিশন এসব দেখেও নীরব ভূমিকা পালন করছে। সুষ্ঠু নির্বাচন করার লক্ষ্যে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তাসহ সব থানার ওসিদের প্রত্যাহার করলে নির্বাচনের পরিবেশ ফিরে পাওয়া যাবে বলে চিঠিতে বলা হয়।

রবিবার চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানা বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষের প্রার্থী আবদুল মান্নানসহ বিএনপি নেতাকর্মীরা গণসংযোগ শেষে ফেরার পথে পুলিশ বাধা দেয়। এমনকি গুলিও করা হয়েছে বলে চিঠিতে বলা হয়।

কুমিল্লা জেলা শহরে বিএনপির নেতাকর্মীরা ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে শহরে বের হলে পুলিশসহ আওয়ামী লীগের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা তাদেরও বাধা দেয়। বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে। এতে বিএনপির পাঁচজন নেতাকর্মী গুরুতর জখম হন। এ সময় তিনজন সমর্থকের দোকানে ভাঙচুর করা হয়। আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য পুলিশকে অনুরোধ করা হলে, নৌকা মার্কা ছাড়া এলাকায় কেউ থাকতে পারবে না বলে পুলিশ সুপার অফিস থেকে জানানো হয়।

জামালপু-৩ আসনের প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলসহ নেতাকর্মীরা হযরত শাহ কামাল (রা.) এর মাজার জিয়ারত করতে গেলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ১০-১২ জন নেতাকর্মীকে গুরুতর জখম করে।

ভোলা-৪ আসনের প্রার্থী নাজিম উদ্দিন আলমের গাড়ি ভাঙচুর করে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা। সেখানে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করলে পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে।

চট্টগ্রাম জেলায় রোববার সন্ধ্যায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও চট্টগ্রাম জেলা বিএনপির প্রার্থী আসলাম চৌধুরীর বাড়িতে নির্বাচনী সভা চলছিল। সভা থেকে বের হওয়ার পর ২৫ জনের অধিক নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। চট্টগ্রাম-৭ আসনে বিএনপির প্রার্থীকে অবৈধ অস্ত্র দিয়ে গ্রেফতার করা হয়।

শেরপুর জেলার শ্রীবর্দী উপজেলা বিএনপির নির্বাচনী পথ সভায় পুলিশ আক্রমণ চালিয়ে পণ্ড করে দেয়। গতকাল ফরিদপুর শহরে ৪ জন নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। শহরের ২/৩ নং ওয়ার্ডে বিএনপির কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। এ ছাড়া একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুর, নেত্রকোনা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, ময়মনসিংহ, ঠাকুরগাঁও, নোয়াখালী, রাজশাহী, যশোর, বাগেরহাট, পটুয়াখালী, ঝিনাইদহ, নরসিংদী, নাটোর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, জয়পুরহাট, মেহেরপুর, রংপুর, পাবনা, সাতক্ষীরা, কিশোরগঞ্জ, ফেনী, সিরাজগঞ্জ ও হবিগঞ্জ জেলায়।

অভিযোগগুলোর বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য দাবি জানানো হয়। পাশাপাশি ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের’ বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ১৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

২৬ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test