E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খালেদার মুক্তির বিষয়ে হতাশ বিএনপি নেতারা

২০১৯ ফেব্রুয়ারি ১২ ১৪:৫২:৪৬
খালেদার মুক্তির বিষয়ে হতাশ বিএনপি নেতারা

স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন দলটির নেতারা। তারা মনে করছেন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে খালেদার মুক্তি চেয়ে কোনো লাভ নেই। আইনি প্রক্রিয়ায় তার মুক্তি সম্ভব নয়। খালেদার মুক্তির জন্য আন্দোলন জোরদার করার বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন তারা।

মঙ্গলবার বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সহ-সাধারণ সম্পাদক আরিফা সুলতানা রুমাসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তির দাবিতে ‘জাতীয়তাবাদী দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ শীর্ষক মানববন্ধনের আয়োজন করে দলটি। দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে বিএনপির নেতাদের বক্তব্যে এ বিষয়গুলো উঠে আসে।

দলটির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘সরকারের কাছে আমি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি কামনা করি না। আমি আমাদের অনেক নেতার কাছে শুনেছি এই সরকারের আমলে নাকি আইনি প্রক্রিয়ায় খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। তার মুক্তির জন্য দলকে আরও সুসংগঠিত হতে হবে।’

তবে মানবিক দিক বিবেচনা করে হলেও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে আমি কোনো দাবি দিতে চাই না। আমি মনে করি, বর্তমান সরকার প্রধান একজন নারী এবং আরেকজন সাবেক তিনবারের নারী প্রধানমন্ত্রী। মানবিক দিক থেকে বিবেচনা করে হলেও তাকে আজকে মুক্তি দেয়া উচিত। তার বিরুদ্ধে যত মামলা আছে সেগুলো চলতে পারে, জামিনের ব্যবস্থা করা হোক এবং তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক।’

তিনি বলেন, ‘অনেকদিন পরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য দাঁড়িয়েছি। আমি বুঝতে পারি না, আমার বোঝার হয়তো কিছুটা ভুল হতে পারে। জাতীয়তাবাদী দল একটি বৃহত্তম দল। যে দলের নেত্রী জেলে থাকা অবস্থায় বর্তমান সরকারের কথায় বিশ্বাস রেখে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। সেই ঐক্যফ্রন্ট অর্থাৎ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিএনপির একজন প্রার্থী আমি ছিলাম। বিগত দিনগুলোতে আমি কয়েকবার ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। সকল প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করেও কয়েকবার নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ লাভ করেছি ধানের শীষের কারণে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমি বুঝতে পারি না, এই সরকারের কাছে মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি কতটা হবে-সেটা আমি একজন বিএনপির কর্মী হিসেবে বিশ্বাস করি না। যে সরকার দিনের বেলার ভোট রাতের বেলায় করেছেন আমার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।’

কোনো দলীয় সরকারের আমলে নির্বাচন সুষ্ঠু হতে পারে না বলে মন্তব্য করেন জয়নুল আবদিন। তিনি বলেন, ‘১৯৭৩ সালের নির্বাচনেও এই ঘটনাই ঘটেছে। গত ২০১৪ সালের নির্বাচনে আমার দল অংশগ্রহণ করে নাই। সেই নির্বাচনও ভোটারবিহীন নির্বাচন ও পাঁচটি বছর অতিক্রম করেছে। আবার ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচন সে নির্বাচনের জন্য দায়ী এই নির্বাচন কমিশন। এই নির্বাচন কমিশনের অধীনে পুলিশ, বিজিবি ছিল, তাহলে কী করে দিনের বেলার ভোট রাতের বেলায় করলেন-এই বিষয়টা একটা তদন্তে আনা উচিত।’

প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি চেয়ারপারসনের আরেক উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, ‘শেখ হাসিনার কাছে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে কি কোনো লাভ আছে? তার কাছে মুক্তি চেয়ে কোনো লাভ হবে না, কারণ বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে নেয়া হয়েছে এই কারণে যে যাতে বিএনপি আবার ঘুরে দাঁড়াতে না পারে, নির্বাচনে জয় লাভ না করতে পারে এবং জনগণের সঙ্গে নিয়ে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারে। তাই এখন আমাদের আন্দোলন ছাড়া কোনো বিকল্প নাই। আন্দোলন গড়ে তুলতে হলে যে যেখানে আছেন সেখান থেকেই সংগঠিত হতে হবে।’

সুশীল সমাজ ও সাংবাদিকদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘দেশের সুশীল নাগরিক বুদ্ধিজীবী এবং কিছু কিছু সাংবাদিকরা কিছু কিছু সময় সরকারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বলেন, বিএনপি পারলে আন্দোলন করুক। আমি বলতে চাই- বিএনপি যদি আন্দোলন করে তাহলে বাধা আসবে আর বাধা আসলে তার প্রতিরোধ করবে বিএনপি। আর তখন যে আন্দোলন শুরু হবে তখন তো আবার বলবেন যে বিএনপির জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন, ধ্বংসাত্মক আন্দোলন শুরু করেছে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জিয়া নাগরিক ফোরামের সভাপতি লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, সংগঠনের প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ গোলাম সরোয়ার সরকার, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা নুরুজ্জামান সদরদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ১২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test