E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

জাতীয় কবি হিসাবে নজরুলের সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই

২০১৯ মে ২৫ ১৫:৩০:৪৭
জাতীয় কবি হিসাবে নজরুলের সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই

স্টাফ রিপোর্টার : কাজী নজরুল ইসলামকে ‘জাতীয় কবি’র সাংবিধানিক স্বীকৃতি না দিয়ে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠী জাতির সঙ্গে প্রতারণা করছে বলে মন্তব্য করেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া।

তিনি বলেন, তার অসামান্য ও ব্যতিক্রম সৃষ্টিধারা ও উজ্জ্বল কর্মপ্রবাহ বাংলা সাহিত্যকে যেমন দিয়েছে সমৃদ্ধ সংযোজন তেমনি বাঙালি জাতিকে দিয়েছে গভীর প্রণোদনা শক্তি। নজরুল চেতনা ও তার দর্শন দিয়েছে নব নব পথের সন্ধান। জাতীয় কবি হিসাবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি আজ সময়ের দাবি। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পূরণের প্রাক্কালে সরকার জাতীয় কবিকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

তিনি বলেন, ‘দ্রোহ’ যেমন দিয়েছে তাকে বিদ্রোহীর অপরাজেয় মুকুট, তেমনি বাংলা তথা ভারতবাসীর অন্তরস্থিত চেতনায় দারুণ আলোড়ন সৃষ্টি করে যা উদ্দীপনার উৎস রূপে প্রতিভাত হয়। কাজী নজরুল সাম্রাজ্যবাদের ঔপনিবেশিক শক্তির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তার রচনা ও তার সৃষ্টিশীল কর্মতৎপরতার মধ্যে বিদেশি শক্তির শোষণ ও দুঃশাসন থেকে মুক্তিই ছিল প্রধান লক্ষ্য।

শনিবার নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১২০তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি- বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম সাম্রাজ্যবাদরে কালো থাবা থেকে মুক্তির জন্য সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। কলম হয়েছিল তার অস্ত্র। ইংরেজদের শোষণ-অপশাসন জাতির অবস্থাকে বিপন্ন করে তুলেছিল। ইংরেজদের মূল লক্ষ্য সমস্ত অর্থ ও সম্পদ লুট এবং নিজ দেশে পাচার করা। নবযুগে কাজ করার সময় নজরুলের রাজনৈতিক চিন্তার পরিপক্কতা তৈরি হয়। বিস্তার ঘটে রাজনৈতিক চিন্তার। ভারতে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনি মুজফ্ফর আহমেদের সঙ্গী হন। আগ্নেয়গিরির উদগীরণের মতো বিস্ফোরিত নজরুলের ‘বিদ্রোহী কবিতা’। তিনি এমনই বিদ্রোহী, বলেন, ‘বিশ্ব চাড়ায়ে উঠিয়াছি একা, আমি চির উন্নত শির’।

ন্যাপ মহাসচিব বলেন, ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি এর আগে কোনো কবি-সাহিত্যিক তো দূরের কথা কোনো রাজনৈতিক নেতাও করার সাহস করেননি। তিনি ধূমকেতু পত্রিকায় ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি করেন। তখন স্বরাজ নিয়ে ছিল নেতাদের মতবিরোধ। নজরুল ধূমকেতু’র ১৩শ সংখ্যায় ১৩ অক্টোবর ১৯২২-এ ভারতের জন্য পূর্ণ স্বাধীনতার দাবি উত্থাপন করেন। বলেন, ‘স্বরাজ-টরাজ বুঝি না, কেননা, ও কথাটার মানে এক এক মহারথী এ এক করে থাকেন। ভারতবর্ষের এক পরমাণু অংশ বিদেশিদের অধীনে থাকবে না। ভারতবর্ষের সম্পূর্ণ দায়িত্ব, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা রক্ষা, শাসনভার সমস্ত থাকবে ভারতের হাতে।’

তিনি বলেন, ভারতের স্বাধীনতায় যেমন কাজী নজরুল ইসলামের অবদান রয়েছে তেমনি পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের অভ্যুদয়ে কবি হয়েছেন প্রণোদনা শক্তি। ভীত-সন্ত্রস্ত হয়েছে ব্রিটিশ সরকার। দ্রোহের কবি, সাম্যের কবি, সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, ঔপনিবেশিক শোষণ-শাসনের বিরুদ্ধে জ্বলন্ত প্রতিবাদ কাজী নজরুল ইসলাম।

ন্যাপ ঢাকা মহানগর সভাপতি মো. শহীদুননবী ডাবলুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন এনডিপি প্রেসিডিয়াম সদস্য মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান স্বপন কুমার সাহা, যুগ্ম মহাসচিব মো. নুরুল আমান চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. কামাল ভূইয়া প্রমুখ।

(ওএস/এসপি/মে ২৫, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test