E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

দলের মালিকানা-রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আপনাদের : জি এম কাদের

২০১৯ ডিসেম্বর ২৮ ১৬:০৭:৫১
দলের মালিকানা-রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আপনাদের : জি এম কাদের

স্টাফ রিপোর্টার : দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, দলের মালিকানা আপনাদের। একে রক্ষণাবেক্ষণ ও প্রতিপালন করার দায়িত্ব আপনাদের। দলের ভালো হলে আপনাদের ভালো, দলের ক্ষতি হলে আপনারদের ক্ষতি; এ কথাটি অন্তরে ধারণ করবেন। যখন যেখানে যে অবস্থায় থাকবেন দলের কথা বলবেন। সবসময় দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবেন।

শনিবার রাজধানীর রমনায় ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন চত্বরে জাতীয় পার্টির নবম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জি এম কাদের বলেন, আমরা অনেক দুঃখ ও ভারাক্রান্ত মন নিয়েই এই সম্মেলনে সমবেত হয়েছি। জাতীয় পার্টির জন্মের পর এই প্রথম আমাদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা, ৯ বছরের সফল রাষ্ট্রনায়ক পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে ছাড়াই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই শূন্যতা শুধু এই সম্মেলনেই বিরাজ করছে না, গোটা দেশ ও জাতি তার অভাব অনুভব করছে।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টির প্রত্যেক নেতাকর্মী-সমর্থক পল্লীবন্ধুর শূন্যতাকে বুকের গভীরে ধারণ করে এই সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছেন। এই অনুভূতিকে সাংগঠনিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে পল্লীবন্ধু এরশাদের অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নের প্রয়াসই হবে এই সম্মেলনের অঙ্গীকার। আমাদের মহান নেতা পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমি আমার বক্তব্য শুরু করতে চাই।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, যিনি এই বাংলাদেশ সৃষ্টি করে আামদের একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে পরিচিত করেছেন। আমি স্মরণ করছি গণতন্ত্রের মানসপুত্র হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মজলুম জননেতা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নাম। যারা ছিলেন আমাদের পথপ্রদর্শক।

তিনি বলেন, আজ আমরা জাতীয় পার্টিকে নিয়ে রাজনৈতিক জীবনের ৩৪ বছর পার হয়ে এসেছি। ৩৪ বছর যৌবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়। কবির ভাষায় বলতে গেলে, ‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার শ্রেষ্ঠ সময় তার’। যুদ্ধে যাবার প্রয়োজন কেন হয়? যখন দেশ আক্রান্ত হয়, জাতি বিপন্ন হয় তখন রুখে দাঁড়াতে হয়। এই রুখে দাঁড়ানোর অপর নাম যুদ্ধ।

জি এম কাদের বলেন, আমরা স্বাধীনতার ৪৮ বছর পার করে এসেছি। এখনও স্বাধীনতার পূর্ণাঙ্গ সুফল মানুষ ভোগ করতে পারছে না। অর্থনৈতিক মুক্তি আসেনি, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়নি। সন্ত্রাস, দুর্নীতি ও মাদক এখনও সমাজজীবনকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে। সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণে এখনও অনেক ঘাটতি রয়ে গেছে। বেকারত্ব যুবসমাজকে হতাশাগ্রস্ত করে রেখেছে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বিরাজ করছে শূন্যতা। সহমর্মিতা ও সহনশীলতার রাজনৈতিক প্রবণতা ক্রমান্বয়ে ক্ষীণ হয়ে আসছে। মহান স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম মূলমন্ত্র ছিল বৈষম্যহীন ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। সেই লক্ষ্যের পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নই এখন আমাদের রাজনীতির লক্ষ্য।

তিনি আরও বলেন, এক ঐতিহাসিক প্রয়োজনে জাতীয় পার্টির জন্ম হয়েছিল। সে প্রেক্ষিতে এ মুহূর্তে দেশের জন্য ঐতিহাসিক দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে জাতীয় পার্টির প্রত্যেক নেতাকর্মী-সমর্থককে প্রস্তুত হতে হবে। সেই পথ চলার এক পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হলো এই সম্মেলন। এখান থেকে অঙ্গীকার নিয়ে দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়তে হবে। গোটা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, আমরা গতানুগতিক ধারায় কোনো নেতিবাচক রাজনীতি করি না। আমাদের অতীতের সফলতা এখনও জাতি স্মরণ করে। জনগণ বিশ্বাস করে, আমরা নিজেরা ঐক্যবদ্ধ, সংগঠিত ও সুশৃঙ্খল হতে পারলেই তাদের সকল প্রত্যাশা আমরা পূরণ করতে পারব। জাতি হতাশা থেকে মুক্তি চায়, জাতি স্থিতিশীলতা চায়, জাতি অর্থনৈতিক নিরাপত্তা চায়, জাতি সুস্থ্য-স্বাভাবিক সামাজিক পরিস্থিতি চায়। অধিকাংশ দেশবাসী মনে করে, তাদের এই প্রত্যাশা পূরণ করতে পারে জাতীয় পার্টি। অতীতের ৯ বছর আমরা তার প্রমাণ দিয়েছি। জাতীয় পার্টি দাবি করতে পারে তারা জনগণের পরীক্ষিত বন্ধু।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ২৮, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

২৫ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test