E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

নির্বাচনের শেষটা দেখে নেব, জনগণই আমাদের আস্থা

২০১৯ ডিসেম্বর ৩১ ১৫:৩৮:০৬
নির্বাচনের শেষটা দেখে নেব, জনগণই আমাদের আস্থা

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিএনপির মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল বলেছেন, জনগণের প্রতি আস্থা রেখে এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কারণ জনগণ বারবার বিএনপিকে ভোট দিতে চেয়েছিল। সেই জনগণকে নিয়েই আমরা মাঠে নেমেছি।

মেয়রপ্রার্থী হিসেবে মঙ্গলবার ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাসেমের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান, আপনাদের নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা নেই, সরকারের প্রতি আস্থা নেই, প্রশাসনের প্রতি আস্থা নেই- তাহলে কাদের ওপর ভরসা করে এ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন? জবাবে তাবিথ বলেন, ‘শুধু আমাদের নয়, জনগণেরও এ তিনটি সংস্থার প্রতি কোনো আস্থা নেই। তবে আমরা নিজেদের এবং জনগণের প্রতি আস্থা রেখে এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। কারণ জনগণ বারবার বিএনপিকে ভোট দিতে চেয়েছিল। সেই জনগণকে নিয়েই আমরা মাঠে নেমেছি।’

‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি বিশ্বাস রেখে আমরা এ নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। তারপরও আমরা আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় কি-না, আমরা সন্দিহান।’

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ঢাকা উত্তরের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল কাশেমের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেন তাবিথ আউয়াল। এর আগে, ডিএনসিসি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম মনোনয়নপত্র জমা দেন। পরে তিনি বলেন, পুনরায় নির্বাচিত হলে ৩৬৫ দিনই আমরা ডেঙ্গু নিয়ে কাজ করব।

অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাজধানীর গোপীবাগে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়রপ্রার্থী ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস মনোনয়নপত্র জমা দেন।

তাবিথ আউয়াল বলেন, এখানে সন্দেহ শুধু আমাদের একার নয়, সাধারণ জনগণ এ সন্দেহ করছেন। জনগণ নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন কি-না, আর ভোট দিতে পারলেও তা ঠিকভাবে গণনা করা হবে কি-না, জনগণের এ সন্দেহ আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে তুলে ধরেছি। আমরা আরও বলেছি, অতীতে একটি বিতর্কিত নির্বাচন হয়েছে, সেই বিতর্ক আর না বাড়িয়ে ইভিএম যাতে এ নির্বাচনে ব্যবহার করা না হয়। কারণ ইভিএম নিয়ে অনেক বিতর্কের সুযোগ আছে।

তিনি বলেন, ইভিএমের প্রযুক্তি নিয়েও আমাদের অনেক প্রশ্ন রয়েছে। এ নিয়ে আমরা নির্বাচন কমিশনেও সংলাপ করব, কথা বলব। নির্বাচনে যত সমস্যা আসুক না কেন সব সমস্যা অতিক্রম করে আমরা শেষপর্যন্ত নির্বাচনের মাঠে থাকব। তার মানে এই নয় যে, আমরা যে আশঙ্কাগুলো করছি, সেগুলো বহাল থাকলে আমরা তা মেনে নেব। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের পক্ষে। আশা করছি, আসন্ন নির্বাচন সংলাপের মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।

তিনি আরও বলেন, গত মেয়র নির্বাচনের পরও অনেক নির্বাচন হয়েছে। সে নির্বাচনগুলোতে আমরা শেষপর্যন্ত ছিলাম। মাঠে থাকা অবস্থায় আমরা অনেকগুলো অভিযোগ করেছিলাম। সেগুলোর কোনোটি আমলে নেয়া হয়নি। তদন্ত করা হয়নি। গত একাদশ সংসদ নির্বাচন যেটা ২৯ এবং ৩০ ডিসেম্বর হয়েছিল সেখানে আমরা শেষপর্যন্ত ছিলাম। সেখানে তো ভোট হয়নি, তাই গণনার দরকার হয়নি। সুষ্ঠু হবে না জেনেও গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা রেখে আমরা চেষ্টা করেছি নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য।

আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি করব, তারা যেন আমাদের অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেয়।

গত মেয়র নির্বাচনের দিন বিএনপি নির্বাচন থেকে মাঝপথে সরে দাঁড়ায় অথচ জনগণ আপনাদের প্রতি আস্থা রেখে তিন লাখ ভোট দিয়েছিল, সেই জনগণকে এবারও আপনারা হতাশ করবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তার প্রতিবাদে আমরা নির্বাচন বর্জন করেছিলাম। আমরা চেষ্টা করেছিলাম শেষপর্যন্ত নির্বাচনে থাকার জন্য। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। তবে আমরা এবার শেষপর্যন্ত নির্বাচনে থাকব এবং নির্বাচনের শেষটা দেখে নেব।’

নির্বাচনে শেষপর্যন্ত ইভিএম ব্যবহার হলে সিদ্ধান্তের কোনো পরিবর্তন হবে কি-না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ইভিএম নিয়ে আমরা আমাদের আশঙ্কার কথা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে তুলে ধরেছি। আশা করি সংলাপের মাধ্যমে তাদের বুঝাতে পারব, যাতে ইভিএম ব্যবহার করা না হয়।’

ইভিএম ব্যবহারে বদ্ধপরিকর ইসি- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এমনও কিন্তু বলেছে যে, সব দল যদি না চায় ইভিএম ব্যবহার করা হবে না। আমরা এখনও আশাবাদী। এর মাধ্যমে ইভিএম থেকে সরে আসার একটি সুযোগ রয়েছে।’

তিনি বলেন, ২০১০ সাল থেকেই আমরা ইভিএম নিয়ে ইসির সঙ্গে কথা বলে আসছি। আমরা কারিগরি দল নিয়ে এসেছিলাম, তারপরও এটির সমাধান হয়নি। এবারও আমরা সেই চেষ্টা করব।

আওয়ামী লীগ দাবি করছে, জনগণ উন্নয়ন দেখে তাদের ভোট দেবে। তাহলে আপনাদের জনগণ কেন ভোট দেবে- এমন প্রশ্নের জবাবে তাবিথ আউয়াল বলেন, জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকার ফেরত পাওয়ার জন্য বিএনপিকে ভোট দেবে। তারা ভয়-ভীতির মধ্যে রয়েছে। তারা মুক্তি চায়। ভোটের অধিকার ফেরত চায়। জনগণ বিশ্বাস করে, খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে রাখা হয়েছে। এসব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য জনগণ বিএনপিকে অর্থাৎ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে।

ইসি ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৯ জানুয়ারি এবং প্রতীক বরাদ্দ হবে ১০ জানুয়ারি। ভোটগ্রহণ ৩০ জানুয়ারি।

(ওএস/এসপি/ডিসেম্বর ৩১, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

১৯ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test