E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

মানুষ সুদের টাকায় বাড়ি ভাড়া দিয়ে ঢাকা ছাড়ছে

২০২০ জুলাই ০৮ ১৫:৩০:৪৯
মানুষ সুদের টাকায় বাড়ি ভাড়া দিয়ে ঢাকা ছাড়ছে

স্টাফ রিপোর্টার : সুদে টাকা নিয়ে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ আর সরকারের মুখে উন্নয়নের জোয়ার বইছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ।

বুধবার (৮ জুলাই) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, কোটি কোটি মানুষ বেকার। সুদে টাকা নিয়ে বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ আর সরকারের মুখে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। যাদের জন্ম ঢাকায় তারাও এখন গ্রামে পাড়ি দিচ্ছে। নিন্ম আয়ের মানুষদের উপার্জন বন্ধ থাকায় বউ-বাচ্চাদের গ্রামে পাঠিয়ে দিচ্ছে। ক্ষমতাসীন মন্ত্রীরা বলছেন- বাংলাদেশ এখন সিঙ্গাপুরকে ছাড়িয়ে গেছে, এই উন্নয়ন গেল কোথায়?

তিনি বলেন, এই চাউলের মৌসুমেও মোটা চাউলের কেজি ৪০-৪৫ টাকা এবং শাক-সবজির দাম সম্পূর্ণভাবে স্বল্প আয়ের মানুষের নাগালের বাইরে। মানুষ অভুক্ত ও বিনা চিকিৎসায় ভুগছে। মানুষের ঘরে এখন খাদ্য নেই, চিকিৎসার সামর্থ্য নেই। ফলে ঋণ করে সুদে টাকা নিয়ে ঢাকা ছাড়ছে মানুষ। ইতোমধ্যে ৩০-৪০ শতাংশ মানুষ ঢাকা ছেড়ে দিয়েছে। এর ফলে বিপাকে পড়েছে বাড়ি ওয়ালারাও। রাষ্ট্রের মালিকানা এখন আর জনগণের কাছে নেই তা পুলিশের কাছে চলে গেছে বলেই বর্তমান ভয়াল দুর্যোগে সরকার বর্বর অহমিকায় ভুগছে। আর জনগণ বিপত্তির শিকার হচ্ছে। মানুষ কষ্ট-ক্লান্তির অনুভূতি নিয়ে দিন কাটাচ্ছে।

রিজভী বলেন, দেশে কোভিড-১৯ সংক্রমণের প্রবল স্রোতে মানুষ যখন ভীত ও উদ্বিগ্ন তারপরেও মানুষের মুখ বন্ধ করতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলার হিড়িক চলছে। বর্তমান নিপীড়ন মূলক এই মামলা দেশের ইতিহাসের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করছে। কোভিড-১৯ নিয়ে সরকারের ব্যর্থতার সমালোচনা করায় গত তিন মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, স্কুলের শিক্ষার্থী, নারীসহ প্রায় ২০০ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ভালুকার একজন ১০ম শ্রেণির কিশোর শিক্ষার্থীও রয়েছে। মানিকগঞ্জের বিএনপি নেতার কন্যা মাহমুদা পলিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কয়েক মাস ধরে কারাগারে আটক রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, দমন নীতির উত্থান প্রবল থেকে প্রবলতর হচ্ছে। সর্বত্রই দারিদ্র্য, দুর্দশা, ক্ষুধা, বিনা চিকিৎসা ও অসাম্যের করুণ কাহিনী। দেশবাসীর কোনো স্বাধীনতা নেই, তাদের নাগরিক স্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছে রাষ্ট্রশক্তি অপব্যবহাররের মাধ্যমে। মেঘনার মাঝিদের ঝড় বাদল যেমন নিত্যসহচর ঠিক তেমনি জনগণের নিত্যসহচর হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্তমান সরকার রচিত কালো আইনগুলো। প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রীরা বদমেজাজের ঘোরে দেশ চালাতে গিয়ে মত প্রকাশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে সকল কালো কানুন প্রয়োগ করছে। জনগণের প্রতি ক্রুদ্ধ সরকার যেন তাদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।

রিজভী আরও বলেন, তারা মনে করে আওয়ামী লীগ ও রাষ্ট্র অভিন্ন একটি সত্তা। তাদের বিরুদ্ধে সমালোচনা করলেই তারা মনে করে দেশের বিরুদ্ধে সমালোচনা করা। দেশটাকে পৈতৃক সম্পত্তি বলে তারা মনে করে। সেজন্য তারা দম্ভে ও গর্বে আত্মস্ফীত। তাই বাকশালের বেওয়ারিশ লাশকেই কাঁধে নিয়ে ঘুরে বেড়ায় তারা। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, সুশাসন, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর আওয়ামী লীগ একসঙ্গে চলতে পারে না।

তিনি বলেন, মূলত, দুর্নীতির বহুদৈত্যকার কেলেংকারির কথা যেন মানুষ জানতে না পারে এই জন্যই মুক্ত চিন্তার মানুষদের বিরুদ্ধে ঢালাওভাবে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রয়োগ করা হচ্ছে। শাসকের বিরোধিতা করার অর্থ রাষ্ট্রের বিরোধিতা করা নয়। আর এজন্য নিরাপরাধ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো ড্রাকোনিয়ান আইন প্রয়োগ করা গুরুতর অন্যায় ও পাপ।

(ওএস/এসপি/জুলাই ০৮, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test