রাজনীতির ‘নেগেটিভ ব্রান্ড' রুহুল আমিন হাওলাদার
পটুয়াখালী প্রতিনিধি: বরিশালের বাকেরগঞ্জে পৈতৃক নিবাস তাঁর। পূর্বপুরুষের সহায় সম্পত্তি ছিল না খুব বেশি। নিজেও এক সময় ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মচারী পদে চাকরি করতেন। ছিলেন শ্রমিক নেতা।
কিন্তু জিয়াউর রহমানের আমলে বিএনপি এবং পরে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় থাকাবস্থায় জাতীয় পার্টিতে যোগ দিয়ে দিন পাল্টে ফেলেছেন এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। শত কোটি টাকার সম্পদের মালিক বনে গেছেন তিনি।
বাকেরগঞ্জের ভরপাশা গ্রামে রুহুল আমিন হাওলাদার গড়েছেন পল্লী ভবন। ঢাকার বুকে অভিজাত এলাকা গুলশানে বহুতলবিশিষ্ট একাধিক ভবনের মালিক তিনি। তেজগাঁওতে একটি ভবন আছে তাঁর। সমুদ্রকন্যা বলেখ্যাত পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় রুহুল আমিন হাওলাদারের আছে অর্ধশত একরের বেশি জমি। যার বাজার মূল্য প্রায় কয়েক শ কোটি টাকা। যেগুলো তাঁর মালিকানাধীন কে-আর ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনালের নামে কেনা। এছাড়া সমুদ্র সৈকত ঘেঁষে গড়ে তুলছেন বিলাসবহুল হোটেল। নিজ এলাকা পটুয়াখালীর দুমকির বাহেরচরে বাড়ি আছে হাওলাদারের। আছে জমিজমাও। স্ত্রী নাসরিন জাহান রত্নাও কম যাননি। তার নামেও কুয়াকাটায় আছে দুটি প্লট। একটি দুগ্ধ খামার। যার জায়গা আনুমানিক পাঁচ থেকে সাত একর।
অথচ দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেওয়া হলফনামায় এসব সম্পদের বেশির ভাগই গোপন করেছেন পটুয়াখালী-১ (সদর-মির্জাগঞ্জ ও দুমকি) আসনের সংসদ সদস্য রুহুল আমিন হাওলাদার। হলফনামায় রহুল আমিন হাওলাদার কৃষি জমির হিসাব দিয়েছেন ১৩২ দশমিক ৬৭ শতাংশ। পৈতৃক সূত্রে ৩০ কাঠা জমির মালিক হয়েছেন বলে উল্লেখ করেছেন। এছাড়া গুলশানে নিজের নামে ১২ দশমিক সাত কাঠার একটি প্লটের হিসাব দিয়েছেন। স্ত্রীর নামে ২০০৮ সালের নির্বাচনে কোনো জমিজমার হিসাব না দিলেও এবার পূর্বাচলে সাড়ে সাত কাঠার একটি প্লটের কথা বলেছেন।
কুয়াকাটার স্থানীয় সূত্র জানায়, হাওলাদারের স্ত্রী নাসরিন জাহানের নামে দীর্ঘ ১০ বছর আগে কুয়াকাটায় সড়কের পাশে জমি কেনা হয়েছে। যেখানে এখনও হোটেল হ্যানিমুন প্যালেসের সাইনবোর্ড ঝুলছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, জমিজমা নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমার সুযোগ নিয়ে অঢেল ভূসম্পদের মালিক বনেছেন রুহুল আমিন হাওলাদার। তাঁর দখলে নেওয়া বেশির ভাগ জমিই ভুয়া কাগজপত্রের কারণে মামলার বেড়াজালে জড়ানো। অনেক জমি বেচাকেনায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা অমান্য করে জমি কিনেছেন হাওলাদার। জোর করে দখলে নিতে রাতারাতি গড়ে তুলেছেন সীমানা প্রাচীর, কাঁটাতারের বেড়া। মামলার অজুহাতে নামমাত্র দামে এসব জমি কব্জা করেছেন রুহুল আমিন হাওলাদার। আবার কোনো কোনো ক্ষেত্রে মালিকের কাছ থেকে জোর করে দলিল আদায় করলেও সব টাকা পরিশোধ করেননি।
কুয়াকাটার পাঞ্জুপাড়ার বাসিন্দা আবু হানিফ বলেন, ‘রুহুল আমিন হাওলাদার এই অঞ্চলের আতঙ্কে পরিণত হয়েছেন। এখানে নামে-বেনামে তার অনেক জমি আছে। তিনি নিজের খেয়ালখুশি মতো জমি দখল করছেন। জমির মালিককে ঠিকমতো টাকাও দেননি। প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁর লোকজন এসে মারধর করে। অথচ কুয়াকাটা পৌর এলাকায় এখন প্রতি শতক জায়গার দাম তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা। এভাবে শত কোটি টাকার সম্পদ দখল করে নিয়েছেন তিনি।’
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাওলাদারের হাত থেকে রেহাই পায়নি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সরকারি খাসজমিও। পাউবোর জমিতে বসবাস করা সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের বেশকিছু পরিবারকে উচ্ছেদ করে জমি দখলে নিয়েছেন সাংসদ রুহুল আমিন হাওলাদার। তাঁর ক্ষমতা আর রক্তচক্ষুর কাছে যেন প্রশাসনও অসহায়। নিজেদের অধিগ্রহণ করা জমি দিনেদুপুরে দখল করে নিলেও টুঁ-শব্দটি করতে পারেনি পাউবো। দখলদারিত্ব কায়েমে একটি পেটোয়াবাহিনী পুষছেন হাওলাদার। যাদের দাপটে মুখ খুলতে সাহস করে না কুয়াকাটার মানুষ। এসব কারণে কুয়াকাটায় অনেকে হাওলাদারকে ‘ভূমিদস্যু’ নামে আখ্যায়িত করেছেন।
‘জাল’ দলিলে কেনা জমিতে হোটেল, ব্যাংক ঋণ
কুয়াকাটার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি সড়ক ধরে এগিয়ে গেলে চোখে পড়বে উঁচু দেয়ালের সীমানা প্রাচীর। প্রাচীরের ভেতরে পুরোদমে চলছে হোটেল নির্মাণের কাজ। এখানেই হচ্ছে রুহুল আমিন হাওলাদারের কুয়াকাটা গ্র্যান্ড হোটেল অ্যান্ড সি-রিসোর্স। এই হোটেলটি নির্মিত হচ্ছে প্রায় ১৪ একর জমিতে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দেয়ালে ঘেরা বিশাল এলাকায় নির্মাণ শ্রমিকরা কয়েকভাগে কাজ করছেন। চলছে প্রকল্পের ভেতরে সড়ক নির্মাণের কাজ। মূল ফটকের কাছে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। ফটকের কাছে যেতেই বন্দুক হাতে ছুটে আসেন আনসার সদস্য নবীন চন্দ্র। তিনি এখানে আসার কারণ জানতে চান। ‘দেখার জন্য এসেছি।’ জবাবে বলেন, ‘দেখাদেখির কাম নাই। এইখান থাইক্যা ভাগেন।’ এসময় এগিয়ে আসা অপর এক আনসার সদস্য বলেন, ‘ভাই, কথা না বাড়িয়ে চলে যান। জানেন না এটা হাওলাদার সাহেবের প্রজেক্ট। কেউ ভেতরে ঢুকলে গুলি করার নির্দেশ আছে’ বলে কোমরে লাগানো বুলেটের ব্যাগটি দেখান ওই সদস্য।
খানিকক্ষণ বাদে আবার গিয়ে কথা হয় এক নির্মাণ শ্রমিকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘হাওলাদার সাহেব এইহানে হোডোল (হোটেল) বানাইতাছে। দুই বছরের বেশি সময় কাম চলে। তয় হুনছি জায়গা নিয়া কাউল (ঝামেলা) আছে। মামলা চলতে আছে। হের (হাওলাদার) নামে নাহি দুদক তদন্তে নামছে। তাই বেশি লোকজনকে এইহানে আইতে দেয় না। আমাগোও কথা বলতে মানা হরছে।’
জমির মালিকদের সঙ্গে কথা বলে ও সংশ্লিষ্ট সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুয়াকাটা পৌরসভার লতাচাপলী মৌজার ওই জমিটি বেচাকেনা হয়েছে ‘জাল’ দলিলের মাধ্যমে। জমিটির এসএ খতিয়ান নম্বর ৯৭৪। এই খতিয়ানের ৫৩৮৭/৫৩৮৯/৫৩৯০ নম্বর দাগ থেকে খেপুপাড়া সাব রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে ১৯৬৩ সালের ৫ এপ্রিল ৯৪৮ নম্বর দলিলের মাধ্যমে মো. সিরাজুল হক ও মো. সেকান্দার আলী সিকদার যৌথভাবে পাঁচ একর ৩২ শতাংশ জমি কিনেছেন বলে দেখানো হয়। জমির দাতার নামের তালিকায় ছিল চিং চা মং, লা মো ফুরু এবং মন ফুরু।
অথচ সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ৯৪৮ নম্বর দলিলটির কোনো ভিত্তি নেই। এই দলিলের প্রথম পাতার বিপরীতে বৃদ্ধাঙ্গুলির তিনটি ছাপ রয়েছে বিক্রেতাদের। যার নম্বর যথাক্রমে ৯৮১, ৯৮২ এবং ৯৮৩। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে এই তিনটি বৃদ্ধাঙ্গুলির ছাপ নম্বরও সঠিক নয়। ৯৮১ ও ৯৮২ নম্বর ছাপটির প্রকৃত দলিল নম্বর ৯৪৮। ছাপদাতাদের নাম চিং চা মং মগ এবং নিং সোমানীয় মগনী এবং ৯৮৩ নম্বর ছাপের দলিল নম্বর ৯৫১। এর ছাপদাতার নাম নিং আছমত আলী। আদিবাসীদের জমি বেচাকেনার ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসকের যে অনুমতিপত্র ৯৪৮ নম্বর দলিলে উল্লেখ করা হয়েছে তা হলো ৩০৬/৬৩-৬৪। কিন্তু জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওই অনুমতিপত্রটি শিমাফ্রু মগনীর নামে দেওয়া হয়েছে।
তথ্যানুন্ধানে জানা গেছে, এসএ ৯৭৪ নম্বর খতিয়ানের ওই জমির প্রকৃত মালিক ছিলেন লাথফ্রু মগ এবং ইয়াছেনা মগনী। ওই দলিল দিয়েই ২০০৬ সালে ৩ আগস্ট সিক্স স্টার গ্রুপের কাছে জমিটি বিক্রি করে সিরাজুল হক। যার দলির নম্বর ৩৪৪১। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জাল দলিলের কারণে বিপাকে পরে সিক্স স্টার গ্রুপ। এক পর্যায়ে তারাও ২০১০ সালের ২৩ মার্চ জায়গাটি বিক্রি করে দেয় কে-আর ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনালের কাছে। যার দলিল নম্বর ৩৫৮৭। অভিযোগ আছে, কেনা অংশের বাইরেও বড় একটি অংশ দখল করে রেখেছে কে-আর ফ্যাশন। একই এসএ খতিয়ান নম্বরের আরেক জমির মালিক মনির আহমেদ ভূঁইয়া জাল দলিলের অভিযোগ এনে মামলা (৯০/২০০৮) ঠুকে দেন। তার অভিযোগ জাল দলিলের মাধ্যমে তার জমি দখল করা হয়েছে। এখনও মামলা চলছে। জাল দলিল ও মামলা চলা অবস্থাতেই এসএ ৯৭৪ নম্বর খতিয়ানে রুহুল আমিন হাওলাদারের কেনা সাড়ে চার একর জমির বিপরীতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক (এসআইবি) ঢাকার গুলশান শাখা থেকে সাত কোটি টাকা ঋণ নিয়েছেন।
হোটেল নির্মাণ প্রকল্প এলাকায় কথা হয় জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে। তিনি নিজেকে রুহুল আমিন হাওলাদারের ভাগিনা বলে পরিচয় দেন। এই প্রতিবেদককে দেখে তিনি এখানে আসার কারণ জানতে চান। পরে পরিদর্শক পরিচয় দিলে জাহাঙ্গীর বলেন, ‘সাংবাদিকরা ইদানীং খুব বাড়াবাড়ি করতাছে। হাওলাদার সাহেব এনিয়া বড় টেনশনে আছে। তাই বলছে এইখানে কোনো সাংবাদিক আইলে পুলিশে দিতে।’ পরে তিনি এই প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন, ‘ভাই আপনি আবার সাংবাদিক না তো? দেইখ্যান কিন্তু, আমাকে বিপদে ফালাইয়েন না।’ শুধু হোটেল নয়, হোটেল প্রকল্প এলাকা সংলগ্ন জায়গায় রুহুল আমিন হাওলাদার নির্মাণ করছেন একটি ফার্ম হাউজও।
পাউবোর জমি দখলের মচ্ছব
শুধু স্থানীয় ভূমির মালিকই নন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জমি বেদখলের অভিযোগ আছে কে-আর ফ্যাশনের বিরুদ্ধে। কুয়াকাটা পুলিশ ফাঁড়ি সড়ক দিয়ে গেলেই পাঞ্জুপাড়া। এখানে হোটেল ঘোষ ইন্টারন্যাশনালের সীমানা প্রাচীর ঘেঁষেই গড়ে তোলা হয়েছে উঁচু দেয়াল। ঘিরে রাখা জায়গার ভেতরে ঢুকতেই চোখে পড়ে কে-আর ফ্যাশনের সাইনবোর্ড। যেখানে লেখা এসএ খতিয়ান নম্বর ১২০৩। দাগ নম্বর ৫৩৮৭ এবং ৫৩৯০। এখানে জমির পরিমাণ ১০ একর। এই সীমানার দক্ষিণ দিকে একটি দিঘি। এই দিঘির ওপার থেকে বেড়িবাঁধ থেকে পাউবোর জায়গা। যেটি জোর করে দখলে রেখেছেন রুহুল আমিন হাওলাদার। মূলত ওই জমির প্রকৃত নম্বর এসএ খতিয়ান নম্বর ৬৬২। মো. শাহআলম ও তাঁর ভাইবোনেরা উত্তরাধিকার সূত্রে ওই খতিয়ানের ২২ একর ১৬ শতক জমির মধ্যে ১৮ একর ৮৩ শতক জমির প্রকৃত মালিক ছিলেন। তা থেকে নয় একর তিন শতাংশ জমি পাউবো অধিগ্রহণ করে। বিনিময়ে টাকাও পেয়েছেন তারা। এছাড়া জনৈক দবির আহমেদ ভূঁইয়ার পরিবার এবং অন্যদের কাছে পাঁচ একর জমি বিক্রি করেন শাহআলম ও তাঁর ভাইবোনেরা।
বাকি চার একর ৮০ শতাংশ জমির মালিক এখনও তাঁরা। অভিযোগ আছে, লতাচাপলী মৌজার এসএ ৬৬২ নম্বর খতিয়ান থেকে ১৯৬৮-৬৯ সালে ৩৬৫ নম্বর নামজারি কেসের মাধ্যমে ১১ একর আট শতক জমি হাতিয়ে নেয় জনৈক সেরাজুল হক (পিতা-গোলাম হায়দার মিয়া)। এ সময় খোলা হয় ১২০৩ নম্বর একটি লুজ খতিয়ান। অথচ লতাচাপলী মৌজায় প্রিন্টের আরএস খতিয়ানের সংখ্যা সর্বমোট ৭১৫টি এবং এসএ খতিয়ান আছে ১১৫৭টি। পরে ২০০৯ সালে ভুয়া এই খতিয়ানটি বাতিল করা হয়। কিন্তু কে-আর ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনালের নামে প্রতিষ্ঠানটি পরবর্তী সময়ে একটি নামজারি কেস (৪১৯-কে/ ১০-১১) তৈরি করে প্রায় আট একর জমির মালিক বনে যায়। এর মধ্যে পাউবোর প্রায় এক একর জমি আছে।
জানতে চাইলে জমির মালিক শাহআলম বলেন, ‘বানোয়াট আরএস, এসএ খতিয়ান দিয়ে কে-আর ফ্যাশনের কাছে জমি বিক্রি করায় সেরাজুল হকের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। মামলা এখনও চলছে।’ জানতে চাইলে পটুয়াখালীর কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফি উদ্দিন বলেন, ‘পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৪৮ নম্বর পোল্ডারের ৩০তম কিলোমিটার অংশের অধিগ্রহণ করা এক একর জমি রুহুল আমিন হাওলাদার সীমানা দিয়ে রেখেছেন। সেখানে আমাদের সাইনবোর্ড ছিল। কিন্তু কারা যেন এটি সরিয়ে ফেলেছে।’ জমি উদ্ধারে কী ব্যবস্থা নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সরকারের সম্পদ উদ্ধারের জন্য তো লাঠিয়াল বাহিনী নেই, আমরা তো আর মারামারি করতে পারি না। পুলিশই আমাদের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনের কাছ থেকে আমরা পর্যাপ্ত সহযোগিতা পাচ্ছি না। তাই জমি উদ্ধার করা যাচ্ছে না।’
নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ‘এতদিন তিনি সরকারের সঙ্গে জোটে ছিলেন। আবার জাতীয় পার্টির মহাসচিব ছিলেন। তাই চাইলেও অনেক ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। এখন যেহেতু সরকারের সঙ্গেও নেই আবার মহাসচিব পদও হারিয়েছেন, তাই আবারও জমি উদ্ধারে নতুন করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য সাংসদ রুহুল আমিন হাওলাদারের সঙ্গে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি মুঠোফোনটি ধরেননি। পরে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও তিনি কোনো সাড়া দেননি।
সংখ্যালঘুদের উচ্ছেদ
হাওলাদারের দখলে রাখা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অধিগ্রহণ করা জমিতে বসবাস করত ১১টি পরিবার। অভিযোগ আছে, এর মধ্যে সাতটি পরিবার উচ্ছেদ করে দিয়েছিল হাওলাদারের লোকজন। সেখানে বসবাস করতেন বসন্ত কুমার। ৬০ বছর ধরে সেখানে বসবাস করে আসছিলেন তারা। কিন্তু ওই পরিবারটিও রেহাই পায়নি হাওলাদারের লোকজনের হাত থেকে। ওই পরিবারটি কুয়াকাটার মম্বিপাড়ায় বসবাস করছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন ঢাকাটাইমস টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ‘হাওলাদারের লোকজন বসন্ত কুমারকে জোর করে মেরে তাড়িয়ে দিয়েছে। বসন্ত কুমার এখনও শয্যাশায়ী।’
খাসজমি দখল
কুয়াকাটার নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি সড়কের শেষ দিকে ইকোপার্কের কাছে চার একরের একটি প্লট। যেখানে বাঁশের খুঁটিতে ভর করে দাঁড়িয়ে আছে কে-আর ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনালের সাইনবোর্ড। স্বত্বাধিকারী রুহুল আমিন হাওলাদার। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে এবং সংশ্লিষ্ট সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসএ ১২৭৮ নম্বর লুজ খতিয়ান দেখিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা সেরাজুল হক (পিতা-আব্দুর রহমান) জমিটি হাওলাদারের কাছে বিক্রি করেছেন। অথচ এটি সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত জমি। আর ওই খতিয়ানটিও জাল। এটি করা হয়েছিল খাজনা অনাদায়ে ২৫৯১/৬০-৬১ নম্বর (নিলাম) সনদের ভিত্তিতে। ওই নিলামটিও ছিল বানোয়াট।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এ জমিটি নিয়ে আদিবাসী রাখাইনদের সঙ্গে সরকারের মামলা চলছে। আদিবাসীদের দাবি, ১৯৪৭ ও ’৪৮ সালে ৪ ও ২ খে (খেপুপাড়া) স্যাটেলমেন্টের মাধ্যমে জমিটির মালিক হয়েছেন তারা। এ দাবিতে ১৯৭৫ সালে জমিতে বসবাসকারীরা আদালতে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করে। অথচ ভূমি কার্যালয়ের তথ্য মতে, জমিটি খাস জমি। যার দাগ নম্বর ৬৩৬৩ এবং ৬৩৬৪। স্থানীয় বাসিন্দা মাসুদুল ইসলাম বলেন, ‘সেরাজুল হক এলাকায় খুব প্রভাবশালী ব্যক্তি। তিনি বিভিন্ন ভুয়া দলিলের মাধ্যমে রুহুল আমিন হাওলাদারের কাছে অনেক জমি বিক্রি করেছেন। অথচ এসব জমি অধিকাংশই সরকারি খাস ও আদিবাসীদের সম্পদ।’
১২ একর জমি কিনে ১৮ একরে কাঁটাতার
কুয়াকাটা যেতেই তুলাতলী হাসপাতাল লাগোয়া মহাসড়কের পাশে বিশাল এলাকা ঘিরে রাখা হয়েছে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে। কদিন আগে জমিতে ধান ছিল। এখন পড়ে আছে নাড়া। সরেজমিনে গেলে চোখে পড়ে বিশাল এই জমির মাঝখানে শোভা পাচ্ছে রুহুল আমিন হাওলাদারের প্রতিষ্ঠান কে-আর ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনালের সাইনবোর্ড। যেখানে লেখা জমির এসএ খতিয়ান নম্বর ৯৬৪। দাগ নম্বর ৩১৯৭, ৩১৯৯, ৩২২৬, ৩২২৮, ৫৬২৩, ৩৬২৮, ৫৬২৮, ৫৬২৯, ৫৬৩০। কোথাও জমির পরিমাণ লেখা নেই। তবে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এখানে ১২ একর জমি কিনেছেন রুহুল আমিন হাওলাদার। যার বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা। জমির পরিমাণ উল্লেখ করে একটি বিশাল সাইনবোর্ডও ছিল। কিন্তু কদিন আগে রাতের আঁধারে আনসার পাহারায় হাওলাদারের লোকজন ওই সাইনবোর্ডটি তুলে ফেলে নতুন এই সাইনবোর্ডটি লাগিয়েছে। ঘটনার সত্যতা পাওয়া যায় ওই সাইনবোর্ডের পাশে খুঁড়ে রাখা মাটি দেখে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, কাগজে-কলমে ১২ একর জমি কিনলেও ১৮ একর এলাকা নিয়ে কাঁটাতারের সীমানা নির্মাণ করেছেন রুহুল আমিন হাওলাদার। এই জমির মালিক দাবিদার দুই পক্ষের মধ্যে আদালতে এখনও মামলা চলছে। মামলা চলা অবস্থাতেই একটি পক্ষ সুযোগ বুঝে হাওলাদারের কাছে জমিটি বিক্রি করে দিয়েছে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উত্তরাধিকার সূত্রে এসএ ৯৬৪ নম্বর খতিয়ানে মোট ২২ একর ৮৪ শতাংশ জমি ছিল। যার প্রকৃত মালিক ছিলেন কচ্ছপখালীর বাসিন্দা আব্দুর রশিদ মোল্লা। পরবতী সময়ে রশিদ মোল্লা ওই জমির বেশকিছু বিক্রিও করেছিলেন।
জানতে চাইলে আব্দুর রশিদ মোল্লার ছেলে সিদ্দিক মোল্লা বলেন, ‘আমরা জন্মের পর থেকেই দেখে আসছি এই জমি আমাদের। আমরাই এটার ভোগ দখলে ছিলাম। আমাদের দলিলপত্রও আছে। কিন্তু হঠাৎ করে আলীপুরের সাত্তার ফরাজী, কালাম ফরাজী গং ভুয়া ডিক্রির মাধ্যমে জমির মালিকানা দাবি করে বসে। এ নিয়ে ২০১০ সালে আমরা আদালতে মামলা (১২৮/১০) করি। মামলাটি এখনও চলছে। কিন্তু মামলা চলা অবস্থায় ২০১০ সালের শুরুর দিকে তারা ভুয়া ডিক্রি (৫০/৮১) মূলে জমিটি রুহুল আমিন হাওলাদারের কাছে বিক্রি করে দেয়।’
আব্দুর রশিদ মোল্লা জানান, নিজেদের জমি ফিরে পেতে মামলা করলেও প্রতিপক্ষ বারবার নানাভাবে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এমনকি তাদের হয়রানি করতে বিভিন্ন ধরনের মামলা দিচ্ছে। এ মামলায় জেল খেটেছেন ইউনুস ফরাজী নামে এক জমির মালিক। তিনি বলেন, ‘এসএ ৯৬৪ নম্বর খতিয়ানে আমারও জমি ছিল। এখন সাত্তার ফরাজীর লোকজন আমার জমিও অন্যায়ভাবে হাওলাদারের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। প্রতিবাদ করায় মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাকে ১৯ দিন জেল খাটিয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দা ও সাত্তার ফরাজীর বোনের জামাই আব্দুল মজিদ বলেন, ‘সাত্তার ফরাজীরা জালিয়াতির মাধ্যমে রুহুল আমিন হাওলাদারের কাছে জমি বিক্রি করেছে। অথচ এই জমির মধ্যে চারজনের বসতবাড়ি আছে। যারা রশিদ মোল্লার কাছ থেকে জমি কিনেছিলেন। কোনো ধরনের টাকা-পয়সা না দিয়ে তাদের জমিও দখল করে নেওয়া হয়েছে। তারা এখন পথে পথে ঘুরছে।’ কাঁটাতারে ঘেরা এলাকায় চারটি বাড়ি আছে। একটির মালিক মো. জসিম। তিনি পেশায় শ্রমিক। প্রায় ৩৫ বছর আগে জমিটি কিনেছিলেন তিনি। বাড়ি হারিয়ে এখন তার দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। তাজাম্মুল মীরের বাড়িও পড়েছে সীমানার মধ্যে। তিনি বন থেকে কাঠ কুড়িয়ে বিক্রি করেন। তিনিও ১০ থেকে ১২ বছর যাবৎ ওই বাড়িতে বসবাস করছেন। চাঁন মিয়া শেখ ১০ থেকে ১১ বছর আগে জমি কিনে সেখানে বাড়ি করেন। কিন্তু এখন হাওলাদারের লোকজনের তোপের মুখে বাড়িছাড়া। মুরগি বিক্রেতা শাহজালালও বাড়ি হারিয়েছেন জালিয়াতির মুখে। অথচ প্রায় ৭ বছর আগে এখানে ঘর তুলেছিলেন তিনি।
হাওলাদারের আরও যত জমি
কুয়াকাটা প্রেসক্লাব সড়ক দিয়ে এগোলেই হাতের বামে চলে গেলে প্রায় সাতফিট প্রশস্ত কাঁচা রাস্তা। হীড বাংলাদেশের কার্যালয় ঘেঁষা এই সড়ক গিয়ে মিশেছে সোজা পশ্চিমের আরেকটি সড়কে। যেটি পাকা করার কাজ চলছে। এই সড়কে উঠে হাতের ডান দিকে তাকালেই চোখে পড়বে কে-আর ফ্যাশন ইন্টারন্যাশনালের প্রমাণ আকৃতির সাইনবোর্ড। এই জমির আরএস খতিয়ান নম্বর ১৮৬। এসএ খতিয়ান নম্বর ৭৭১। জমির কাছেই কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা আজমত আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘হুনছি জমিডার লাইয়্যা মামলা চলতে আছে। মামলা করুক আর যাই করুক হাওলাদারের লগে পারবে কেউ? হে তো মন্ত্রী ছেলো। ক্ষমতা বলতে একটা কথা তো আছে।’ সাইনবোর্ড ঝুলানোর বাইরেও কুয়াকাটার বিভিন্ন জায়গায় রুহুল আমিন হাওলাদারের নামে-বেনামে একাধিক প্লট রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা আবু নাসির বলেন, ‘কুয়াকাটায় এমন জায়গা নাই যেখানে হাওলাদারের জমি নাই। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি যে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তা অবিশ্বাস্য। আবার অনেক ক্ষেত্রে এক একর জমি কিনলে দখল করেছেন তিন একর। এমন ঘটনাও আছে।’
হাওলাদারের সহযোগীরা
কুয়াকাটার আনোয়ার হোসেন হাওলাদার ওরফে লম্বা আনোয়ার রুহুল আমিন হাওলাদারের খুব ঘনিষ্ঠ। তাঁর তত্ত্বাবধায়নেই জায়গা-জমি বেচাকেনা করেন হাওলাদার। এছাড়া কুয়াকাটায় হাওলাদারের সব প্রকল্পের দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন মো. ডালিম। তার বাড়ি হাওলাদারের নির্বাচনী এলাকা পটুয়াখালীর দুমকিতে। তিনিও জমিদখলসহ সব ধরনের কাজের সহযোগী। এছাড়া পটুয়াখালী সদরের মামুন কমিশনার, গলাচিপার বশির উদ্দিন আহমেদও হাওলাদারের সহযোগী হিসেবে পরিচিত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুয়াকাটার এক বাসিন্দা বলেন, ‘কেউ অন্যায়ের প্রতিবাদ করলেই তাকে মারধর করে হাওলাদারের লোকজন। এজন্য জমিজমা দখল করলেও চুপ হয়ে থাকেন অনেকে।’
রত্নার হোটেল হানিমুন প্যালেস
কুয়াকাটা সৈকতে যাওয়ার আগে ওয়াপদা সড়কের পাশেই বড় বড় গাছের বাগান। এর মধ্যেই লাগানো আছে হোটেল হানিমুন প্যালেসের সাইনবোর্ড। হোটেল নির্মাণের নির্ধারিত জায়গা এটি। যার মালিকের নাম নাসরিন জাহান রত্মা। তিনি রুহুল আমিন হাওলাদারের স্ত্রী। এখানে বসবাস করেন নুরুল ইসলামের পরিবার। মূলত জায়গাটি দেখাশোনার জন্য রাখা হয়েছে তাদের।
জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রায় ১০ বছর ধইর্যা এইহানে থাহি। রত্মা মেডামের জায়গা। হুনছি হোডোল (হোটেল) করবে।’ জানা গেছে, কুয়াকাটায় রত্নার মালিকানাধীন একটি দুগ্ধ খামারও আছে।
হাওলাদারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে দুদক
রুহুল আমিন হাওলাদারের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের সহকারী পরিচালক হামিদুর হাসানকে অনুসন্ধানের কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হলফনামার বাইরে হাওলাদারের অঢেল সম্পদের তথ্য দুদকের কাছে আছে। এছাড়া তিনি বিদেশি ব্যাংকে কোনো টাকা পাচার করেছেন কি না তাও খতিয়ে দেখবে দুদক।
এই হাওলাদার, সেই হাওলাদার
বিএনপির সঙ্গে রাজনীতিতে পথচলা শুরু রুহুল আমিন হাওলাদারের। পরবর্তী সময়ে যোগ দেন জাতীয় পার্টিতে। ১৯৭৯ সালে হন সংসদ সদস্য। ১৯৮১ থেকে ’৮২ সাল পর্যন্ত বিএনপি সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী ছিলেন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে জাতীয় পার্টি থেকে সাংসদ হন হাওলাদার। পরে তাকে জাতীয় সংসদের হুইপ করা হয়। ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। পরে কৃষি ও স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান হাওলাদার। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাটমন্ত্রী ছিলেন। জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্বও পেয়েছিলেন তিনি। ভাইস চেয়ারম্যান থেকে প্রেসিডিয়াম সদস্য হয়ে দুই মেয়াদে মোট ১২ বছর জাপার মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি মহাসচিব পদ হারান তিনি।
শিক্ষাগত যোগ্যতাতেও ঘাপলা
এমবিএ এই ডিগ্রির প্রতি হঠাৎ আগ্রহী হয়েছেন এম বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামায় এমবিএ পড়ছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। অবশ্য এমবিএ পড়ার জন্য স্নাতক ডিগ্রি থাকা বাধ্যতামূলক হলেও এই রাজনীতিবিদ এর আগে কখনও তার সেই যোগ্যতার প্রমাণ দেখাতে পারেননি। বারবার নোটিশ করা হলেও এই শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ তিনি জমা দিতে পারেননি নির্বাচন কমিশনে। ২০০৮ সালের নির্বাচনী হলফনামায় তিনি লিখেছিলেন তিনি বিএ (সম্মান) লোক প্রশাসন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। অথচ এর স্বপক্ষে নির্বাচন কমিশনে কোনো সনদ দিতে পারেননি হাওলাদার।
(ওএস/এটিিএপ্রিল ২২, ২০১৪)
পাঠকের মতামত:
- মহম্মদপুরে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হলেন মুনমুন খান
- হিলিতে গরুবোঝাই নছিমনের ধাক্কায় ২ মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
- মোবাইল ইন্টারনেটের গতিতে ৬ ধাপ পিছিয়েছে বাংলাদেশ
- বাগেরহাটে গাছচাপা পড়ে মুয়াজ্জিনের মৃত্যু
- গরমে সবজির দাম আরও বেড়েছে
- বাগেরহাটে জমি সংক্রান্ত বিরোধে কৃষককে পিটিকে হত্যা
- স্মার্ট সুদহারে বিপাকে ব্যবসায়ীরা
- আবারও ঢাকার সিনেমায় পাওলি দাম
- ‘গরমে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে সমাবেশ করা তামাশা’
- ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে বিএনপির শিক্ষা নেওয়া উচিত’
- ‘এসটিপি প্ল্যান্ট ছাড়া নতুন ভবনের অনুমোদন নয়’
- আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায়ের ঘোষণা মার্তার
- রিমান্ড শেষে কেএনএফের ২ সদস্য কারাগারে
- ‘দিল্লির দাসত্ব গ্রহণের জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি’
- চিকিৎসা খাতে থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ চাইলেন প্রধানমন্ত্রী
- দ্বিপক্ষীয় ৫ নথিতে সই করল ঢাকা-ব্যাংকক
- সান্তাহারে তীব্র গরমে পথচারীদের লেবুর শরবত বিতরণ
- ওয়ালটন এসি কিনে ৩৪তম মিলিয়নিয়ার হলেন গাজীপুরের ব্যবসায়ী আব্দুল আলী
- বাওড়ে গোসলে নেমে নিখোঁজ ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
- শ্রীনগরে ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ফিরুজা বেগমের গণসংযোগ অব্যাহত
- যেকোন দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত আছি : ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
- তীব্র তাপপ্রবাহের মধ্যেও ঈশ্বরদীতে বন্ধ নেই প্রাইভেট-কোচিং
- বিশ্ব বাজারে বাড়লো জ্বালানি তেলের দাম
- টাঙ্গাইলে প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করছেন মাটি ব্যবসায়ীরা
- বিলেতের বুকে স্বদেশের মুখ উজ্জ্বল করা ৭ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে মৌলভীবাজার পৌরসভার সংবর্ধনা
- জাতির পিতার সমাধিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপ-উপাচার্যের শ্রদ্ধা
- দিনাজপুরে দুই ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ২
- গাজীপুরে কভার্ডভ্যান-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৪
- জাতীয় গণসংগীত উৎসব শুরু
- দিনাজপুরে ফিলিং স্টেশনে অগ্নিকাণ্ড, ফায়ার সার্ভিসের দুই কর্মীসহ আহত ৪
- গাজীপুরে ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার
- ভারী বর্ষণে তানজানিয়ায় ১৫৫ জনের প্রাণহানি
- থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে শেখ হাসিনাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
- ডিএমপির মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার ৩৯
- ৪৬তম বিসিএস প্রিলি পরীক্ষা আজ
- পাকিস্তানকে হারিয়ে এগিয়ে গেল নিউজিল্যান্ড
- ‘পাকিস্তান যতই অটল থাক, শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ স্বাধীন হবেই’
- ডুমাইনের ঘটনার দোষীদের বিচারের দাবিতে ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের শান্তি মিছিল
- ‘লাল কার্ড প্রদর্শনের মাধ্যমে বেইমানদের শিক্ষা দেবে জনগণ’
- ৩ দিনব্যাপী জালাল মেলার উদ্বোধন, দর্শক ও ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়
- নড়াইলে মাদক মামলায় ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
- অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা
- ২৮ এপ্রিল খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শনিবারও চলবে ক্লাস
- ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রফিকুল আলম রকেট আর নেই
- বাগেরহাটে ডায়রিয়ার প্রকোপ, স্কুল শিক্ষকের মৃত্যু
- নড়াইলে নবগঙ্গা নদী থেকে প্রতিবন্ধী যুবকের মরদেহ উদ্ধার
- গাজীপুর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের সাব স্টেশনে অগ্নিকাণ্ড
- টাঙ্গাইলে পচা মাংস বিক্রি করায় জরিমানা
- ‘এক শ্রেণিতে ৫৫ জনের বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি নয়’
- টাঙ্গাইল কেন্দ্রীয় ঈদগাঁ মাঠে ইস্তিকার নামাজ আদায়
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- জেনে নিন কে এই 'প্রিন্স ড. মুসা বিন শমসের' !
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- এবারও মেডিকেল ভর্তি কোচিংয়ের ফাঁদে শিক্ষার্থীরা
- সিলেটের ভ্রমণ কাহিনী
- শুধু প্রভাবশালীদের পক্ষেই আইন!
- অম্ল-মধুর যন্ত্রণায় অপু বিশ্বাস
- লাইন ধরে খেতে হয় লিখনের জগা খিচুড়ি !
- আমার বোন শেখ হাসিনাকে খোলা চিঠি : চিনে নিন কে এই বরকত!
- 'ইতিহাসের ইতিহাস'
- ধনী হওয়ার আট কার্যকর উপায়
- মেয়ে পটানোর কৌশল!
- লক্ষাধিক রাখাইন জনগোষ্ঠী আড়াই হাজারে নেমে এসেছে
- উত্তরাধিকার ৭১ নিউজের নতুন যাত্রা ১ বৈশাখ
- লোভী মানুষ চেনার সহজ উপায়
- আমায় ক্ষমা কর পিতা : পর্ব ১৪'তোমার সহজাত উদারতা তোমাকে আকাশের সীমানায় উন্নীত করলেও তোমার ঘনিষ্ঠ অনেকের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ তোমার নৃশংস মৃত্যুর পথে কোনই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি'
- বাংলা বই পড়ার ওয়েবসাইট
- শাকিবের নায়িকা শ্রাবন্তী, অপুর নায়ক জিৎ
- মঠবাড়িয়ায় ৯ বছরের শিশুকে পাশবিক নির্যাতনের পর হত্যা
- হুমায়ূনের মৃত্যুর কারণ মদের পার্টি !
- দেশে ফিরছেন তারেকস্ত্রী জোবায়দা রহমান
- বোরকা পরা মেয়ের গণধর্ষণের ভিডিও নিয়ে সিলেটে তোলপাড়
- ইউটিউবে নায়লার আত্মপ্রকাশ
- নেপালের ভূমিকম্প প্রাকৃতিক নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সৃষ্টি !
- বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে !
২৬ এপ্রিল ২০২৪
- ‘গরমে জনগণের পাশে না দাঁড়িয়ে সমাবেশ করা তামাশা’
- ‘পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে বিএনপির শিক্ষা নেওয়া উচিত’
- ‘দিল্লির দাসত্ব গ্রহণের জন্য দেশ স্বাধীন হয়নি’