E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘বাকশালী ব্যবস্থা জনগণ মানবে না’

২০১৪ সেপ্টেম্বর ০৬ ১৮:১৩:৫০
‘বাকশালী ব্যবস্থা জনগণ মানবে না’

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি : বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও শ্রমিক দলের প্রধান উপদেষ্টা নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, আইন করে নয় কৌশলে ৭৫ সালের মতো আরেকটা বাকশালী ব্যবস্থা দেশের জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ সেই বাকশাল মানে নাই এই বাকশালও মানবে না।   শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউজ সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের বৃহত্তর ময়মনসিংহের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, এ সরকার দুর্নীতি অনাচার গুম খুনের ঘটনায় আকণ্ঠ নিমজ্জিত। তারা জনগণকে ভয় পায়। টকশোতে যাতে কেউ কোনো কথা বলতে না পারে সেজন্য নতুন সম্প্রচার নীতিমালা করছে। এই নীতিমালায় সমালোচনার করার কোনো সুযোগ থাকবে না। বিবেকবান মানুষ সত্য কথা বা আর কোনো সমালোচনা করতে পারবে না। কেউ কিছু বললে তাদের বিরুদ্ধে বেআইনী কার্যক্রমের অপরাধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন, এমনকি বিচার বিভাগকে তাদের অধিনস্ত করার লক্ষ্যে বিচারকদের অভিসংশন বা চাকরিচ্যূত করার ক্ষমতা এই অনির্বিাচিত সংসদের হাতে দিতে চায়। যে সংসদে নিজেরা আর মামারা ছাড়া আর কেউ নেই।

নজরুল ইসলাম খান আরো বলেন, তারা সংবাদ মাধ্যমকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিবে না। এমনকি বিচার বিভাগকেও তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে দিবে না। এই ব্যবস্থার নাম হলো স্বৈরাচারী ব্যবস্থা। এটাই বাকশালী ব্যবস্থা। তারা আইন করে নয় কৌশলে ৭৫ সালের মতো আরেকটা বাকশালী ব্যবস্থা দেশের জনগণের ওপর চাপিয়ে দিতে চায়। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সেই বাকশাল মানে নাই এই বাকশালও মানবে না ইনশাল্লাহ।

তিনি বলেন, দেশে যদি গণতন্ত্র না থাকে তাহলে শ্রমিক আন্দোলন চলতে পারে না। শ্রমিক আন্দোলন বাঁচে গণতন্ত্রের মধ্যে। কিন্তু দেশে আজ গণতন্ত্র নেই। দেশে আজ কোনো নির্বাচিত সরকার নাই। যারা সরকারে আসীন তাদেরকে দেশের মানুষ ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে নাই। কাজেই অনির্বাচিত সরকার জনগণের হতে পারে না। জনগণের কল্যাণে তাদের আগ্রহ থাকে না। শ্রমজীবী মানুষ আজ তাই কষ্টে আছেন। মানুষ এর প্রতিবাদ করতে পারছে না। বিরোধীদলকে মিটিং মিছিল করতে বাঁধা দেয়া হচ্ছে। মানববন্ধন পর্যন্ত করতে দেয়া হচ্ছে না। এটা অগণতান্ত্রিক আচরণ।

স্বৈরাচার বিরোধী আপোষহীন আন্দোলনে খালেদা জিয়ার ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ৯ বছর স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন করে খালেদা জিয়া দেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। আবার তার নেতৃত্বে দেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এইবারও তিনি নব্বইয়ের মতোই জিতবেন ইনশাল্লাহ। সেই আন্দোলনে জেতার লড়াইয়ে সংঘবদ্ধ শক্তি হিসেবে শ্রমজীবী মানুষকে সামনের কাতারে থাকতে হবে।

তিনি হলমার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, ইউনিপেটুসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শতশত কোটি টাকা লুট করা হলেও কোনো বিচার হচ্ছে না। শেয়ার মার্কেট লুট করে ফেলা হয়েছে। দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হলে কেউ বিনিয়োগ করে না। কল-কারখানা না হলে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয় না। ধনীরা কেউ চাকরি খোঁজে না। কাজেই দেশের অথনৈতিক উন্নয়ন শ্রমজীবী মানুষের জন্য খুবই জরুরি। শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে সবশ্রেণী পেশার মানুষকে নিয়ে আন্দোলন জোরদার করতে হবে।

শ্রমিকদলের বৃহত্তর ময়মনসিংহের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির সমন্বয়ক ও জেলা সভাপতি মোহাম্মদ আবু সাঈদের সভাপতিত্বে এবং প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব ও জেলা সাধারণ সম্পাদক মফিদুল ইসলাম মোহনের পরিচালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন। প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম খান।

বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব) মাহমুদুল হাসান, ড. ওসমান ফারুক, অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা সভাপতি সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সহ-প্রচার সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মেহেদী আলী খান, অর্থ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, শ্রমিকদলের টাঙ্গাইল জেলা সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, জামালপুর জেলা সভাপতি আব্দুল জব্বার, কিশোরগঞ্জ জেলা সভাপতি জামাল আবু নাসের হিলালী মিণ্টু, নেত্রকোনা জেলা আহবায়ক সৈয়দ আব্দুল মোতালিব, শেরপুর জেলা আহবায়ক শওকত হোসেন।

এ সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ডা. মাহবুবুর রহমান লিটন, শাহ নুরুল কবির শাহীন ও ফকরুদ্দিন আহমেদ বাচ্চু, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুল ইসলাম ওয়ালিদ, মুক্তাগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান জাকারিয়া হারুন, তারাকান্দা উপজেলা চেয়ারম্যান মোতাহার হোসেন তালুকদারসহ বিএনপির ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরআগে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ও কবুতর উড়িয়ে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।

(এসএএস/এএস/সেপ্টেম্বর ০৬, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test