E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

রংপুরে মুখোমুখি অবস্থানে জাপা, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

২০১৪ সেপ্টেম্বর ১৯ ১৫:৪৮:০৪
রংপুরে মুখোমুখি অবস্থানে জাপা, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা

রংপুর প্রতিনিধি : জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রংপুর। নবগঠিত জেলা ও মহানগর কমিটি এবং জাপা থেকে বহিষ্কৃত স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙার অনুসারীরা এখন মুখোমুখি অবস্থানে। যেকোনো মুহূর্তে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে সচেতন মহল।

নবগঠিত জাতীয় পার্টি রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় এরশাদ ভক্তদের নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও জমায়েতের ঘোষণা দেন। তবে বৃহস্পতিবার জামায়াতের হরতালের কারণে তা পিছিয়ে ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার সকাল ১১টায় স্থানীয় পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে করার ঘোষণা দিয়ে নগরীতে মাইকিংসহ স্থানীয় পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়।

এদিকে, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং রংপুর জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টি থেকে সদ্য অব্যাহতি পাওয়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙাকে পুনর্বহালের দাবিতে একই সময় একই স্থানে জমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল করার ঘোষণা দেন রাঙার অনুসারী নেতাকর্মীরা। ফলে যেকোনো সময় অনাকাঙ্খিত ঘটনার আশঙ্কায় আতঙ্কগ্রস্ত রংপুরবাসী।

এরশাদের পৈত্রিক বাসভবন 'লাঙ্গল ভবন' এ শুক্রবার সকালে জাতীয় পার্টি রংপুর জেলা ও মহানগর কমিটির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা দেওয়া হয়, আমরা সংঘর্ষ চাই না, শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করতে চাই। জাপা নেতারা সাংবাদিকদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেহেতু আমরা আগেই পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ ব্যবহারের জন্য অনুমতি নিয়েছি সেহেতু প্রশাসন সহযোগিতা করবে। আমরা আমাদের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালন করতে চাই। তবে প্রশাসন সহযোগিতা না করলে বিকল্পভাবে অন্যত্র কর্মসূচি পালন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা জাপার আহ্বায়ক সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন মাস্টার বলেন, জনগণ এরশাদকে চায়। জাপার বহিষ্কৃত নেতা ও মন্ত্রী উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে প্রশাসনের সহযোগিতায় জাপাকে হয়রানি করছে।

জেলা জাপার সদস্য সচিব সাবেক সংসদ সদস্য ও এরশাদের ভাতিজা এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আমরা আগেই জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ ব্যবহারের জন্য অনুমতি নিয়ে প্রচার প্রচারণা শুরু করেছি। কিন্তু জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কৃত রাঙার অনুসারীরা গোলযোগ করার জন্য একই সময় একই স্থানে সভা আহ্বান করায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

তিনি বলেন, মন্ত্রী প্রশাসনকে ব্যবহার করে ওই স্থানে ১৪৪ ধারা জারি করে আমাদের কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করতে চাইছে। আমরা সংঘাত চাই না। প্রয়োজনে আমরা অন্যস্থানে কর্মসূচি পালন করব।

জাপার মহানগর কমিটির আহ্বায়ক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, জাপা একটি শান্তিপ্রিয় দল। নতুন কমিটি দায়িত্ব পাবার পর দলকে সুসংগঠিত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে রাঙার অনুসারীরা তাকে পুনর্বহালের দাবিতে অপচেষ্টা চালাচ্ছে।

মোস্তফা মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা কোন ভেন্যুতে কর্মসূচি পালন করতে চান, আমাদের বলেন। প্রয়োজনে ওই স্থান আপনাদের জন্য ছেড়ে দেব। তবে দোহাই লাগে আমাদের কর্মসূচি পালন করতে বাধা দেবেন না।

জাপা মহানগর কমিটির সদস্য সচিব এইচ এম ইয়াসির সংবাদ সম্মেলনে সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, দোহাই লাগে আর এরশাদের জাতীয় পার্টিকে ভাঙবেন না। আপনারা যদি এরশাদের দলকে ভাঙার চেষ্টা চালাতে থাকেন তাহলে স্যারকে (এরশাদ) বলব আপনাদের কোনো ধরনের সহযোগিতা না করতে। এর আগে মন্ত্রী প্রশাসনকে ব্যবহার করে আমাদের হয়রানি করার জন্য বিস্ফোরক ও গাড়ি ভাঙ্গার মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। আবারও প্রশাসনকে ব্যবহার করে সেই কাজ চালাতে চাচ্ছেন।

অপরদিকে, জাপা থেকে সদ্য বহিষ্কৃত রাঙার অনুসারী বিদায়ী জেলা জাপার যুগ্ম সম্পাদক শামসুল আলম দাবি করেন, তারাই আগে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ ব্যবহারের জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন।

রংপুর কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী বলেন, জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিশেষ নজরদারি করা হচ্ছে। জনগণ যা চাবে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ওএস/এটিআর/সেপ্টেম্বর ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৭ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test