E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

ইসলামী দলের কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে

২০১৪ এপ্রিল ২৫ ১২:৫৬:১৭
ইসলামী দলের কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে

স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘ দিন ধরে ইসলামপন্থী দলগুলোর কার্যক্রমে স্থবিরতা বিরাজ করছে। নেই কোন কর্মসূচি, নেই মাঠের তৎপরতা। বিভিন্ন ইস্যুতে এক বছর আগেও রাজপথে সোচ্চার ছিল ইসলামি দলগুলো। দলের এমন নিষ্ক্রিয়তায় নেতাদের মধ্যে সৃষ্টি হচ্ছে বহু ধারা। ফলে মাঠপর্যায়েরকর্মীদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে হতাশা।

অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে সাম্প্রতি দু’টি ইসলামি দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতার দলবদলের ঘটনা ঘটেছে। আরো দুয়েকটি দলে নেতাদের দলবদলের ঘটনা ঘটতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ইসলামি দলগুলোর নেতাকর্মীরা অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবির আন্দোলনের সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কারণে হেফাজতের আন্দোলন নিয়েও জনমনে নানা কানাঘুষা চলছে।

কয়েকটি ইসলামি দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতার সাথে কথা বলে জানা গেছে, দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে অস্পষ্টতার কারণে আন্দোলন প্রশ্নে ইসলামি দলগুলো সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। এরই সুবাদে সরকারের তরফে ইসলামি দলগুলোর সাথে নানাভাবে ঘনিষ্ঠতার চেষ্টাও হচ্ছে। একই সাথে আন্দোলন ও নীতির প্রশ্নে মতদ্বৈততা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সরকারের কোনো কোনো মহল নেপথ্যে ভূমিকা পালন করছে বলে গুঞ্জন রয়েছে।

সংবিধান থেকে আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস বাদ দেয়া, নারীনীতি থেকে ইসলামবিরোধী ধারা বাদ দেয়া, শিক্ষানীতিতে ধর্মীয় শিক্ষাকে সঙ্কুচিত করা, মহানবী সা. সম্পর্কে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তির ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্যসহ বিভিন্নধর্মীয় ইস্যুতে আন্দোলন করে আসছিল ইসলামি দলগুলো। এসব আন্দোলনে ১২টি সমমনা ও ইসলামী দলের একটি মোর্চাও গঠিত হয়েছিল। বাকিরা অভিন্ন ইস্যুতে পৃথক আন্দোলন করে আসছিল। বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও হরতালের মতো কর্মসূচিও পালন করেছে দলগুলো। এ ছাড়া জাতীয় প্রায় সব ইস্যুতে নানা কর্মসূচি পালন করেছে ইসলামী দলগুলো।

সর্বশেষ গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে গণজাগরণমঞ্চ হওয়ার পর হেফাজতে ইসলামের আন্দোলনের সূচনা হলে ইসলামী দলগুলোর ধর্মীয় ইস্যুগুলোও হেফাজতের ১৩ দফায় স্থান পায়। ফলে প্রায় সব ইসলামি দল হেফাজতের আন্দোলনের সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়। দলগুলোর নেতাদের একইভাবে হেফাজতে ইসলামের বিভিন্নপর্যায়ের নেতৃত্বে আনা হয়। গত বছরের ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ ও ৫ মে ঢাকা অবরোধের মতো সাড়া জাগানো কর্মসূচি পালিত হয় হেফাজতের নেতৃত্বে। ৫ মে রাতে শাপলা চত্বরে হেফাজতের অবস্থানের ওপর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান-পরবর্তী সরকার হেফাজতের ব্যাপারে কঠোর নীতি অবলম্বন শুরু করলে হেফাজতের পাশাপাশি ইসলামি দলগুলোও মাঠের কর্মসূচি থেকে সরে আসে।

এরপর থেকে গত এক বছরে হেফাজত যেমন বড় কোনো কর্মসূচি পালনে মাঠে নামেনি তেমনি ইসলামি দলগুলোরও বড় কোনো তৎপরতা ছিল না।

এ দিকে হেফাজতের সাথে সংশ্লিষ্ট অপর ইসলামি দল বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনও মাঠের কর্মসূচিতে নেই। তবে বিভিন্ন ইস্যুতে কামরাঙ্গীরচর কেন্দ্রিক কিছু কর্মসূচি পালন করে আসছে দলটি। এ ছাড়া ঘরোয়া কিছু কর্মসূচি মাঝে মধ্যে দলটিকে পালন করতে দেখা যায়।

চরমোনাই পীরের নেতৃত্বাধীন ইসলামী আন্দোলন হেফাজতের বাইরে এককভাবে অভিন্ন ধর্মীয় ইস্যুতে আন্দোলন করে আসছে। দলটিও আগের মতো ধর্মীয় ইস্যুতে বড় কোনো কর্মসূচিতে যাচ্ছে না। সর্বশেষ দলটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দুই দিনব্যাপী ওয়াজ মাহফিলের আদলে সম্মেলন করেছে। সেখান থেকেও ধর্মীয় ইস্যুতে জোরালো কোনো বক্তব্য আসেনি।

সম্মিলিত উলামা মাশায়েখ পরিষদসহ অরাজনৈতিক আরো কিছু সংগঠন ধর্মীয় ইস্যুতে ইতঃপূর্বে রাজপথে নানা কর্মসূচি পালন করলেও ওইসব সংগঠনও এখন অনেকটাই বিবৃতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

(ওএস/এটি/এপ্রিল ২৫, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

২৪ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test