E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Walton New
Mobile Version

‘ইইউর চাওয়া প্রসঙ্গে কাদেরের মন্তব্য ভণ্ডামি’

২০২৩ ডিসেম্বর ০১ ১৩:১৮:৫১
‘ইইউর চাওয়া প্রসঙ্গে কাদেরের মন্তব্য ভণ্ডামি’

স্টাফ রিপোর্টার : ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চাওয়া অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন, আওয়ামী লীগেরও চাওয়া একই, দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এমন মন্তব্যকে প্রতারণা এবং ভণ্ডামি ছাড়া কিছুই নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যে মন্তব্য করেছে তাদের কথার সঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে একমত। তারা (ইউরোপীয় ইউনিয়ন) শুধু আওয়ামী লীগের অংশগ্রহণে নির্বাচনের কথা না সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নির্বাচনের কথা বলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছে। তাহলে একমত হলেন কিভাবে? আপনারা তো কোনো প্রতিদ্বন্দ্বি না পেয়ে একজন আওয়ামী লীগের প্রার্থী আর একজন নৌকার প্রার্থী দিয়েছেন। এদের মাঝে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে এমন একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, এটা হচ্ছে মনোভাব। বড় বড় রাজনৈতিক দলের দরকার নেই প্রতিদ্বন্দ্বি হবে আওয়ামী লীগ এবং নৌকার এবং এটা হবে সুষ্ঠু নির্বাচন এই জন্য সবাইকে নমিনেশন জমা দিতে বলেছে তারা। এটাকে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিমত এবং তাদের একমত মনে করছে। এটা যে কতটুকু প্রতারণা এবং ভণ্ডামি সেটা দেশের মানুষ হারে হারে টের পাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) ভার্চুয়ালি সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দুঃসময়ে এদেশের মানুষ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। জীবন-জীবিকা, নিরাপত্তা, সাধারণ চলাফেরা সবকিছু এখন বিপদের মুখে। মানুষদের অতল গহ্বরের মুখে ঠেলে দিয়ে শেখ হাসিনা এবং ওবায়দুল কাদের সুস্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে। দেশের জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা ও আন্তর্জাতিক পর্যায় কোনো কিছুর তোয়াক্কা করছে না তারা। এর একটাই কারণ হলো, ১৫ বছরে তারা যে লুটপাট করেছে টাকা পাচার করেছে ইউরোপ আমেরিকায় পরিবার পাঠিয়ে বেগম পাড়া বানিয়েছে এই বাস্তবিক স্বপ্ন থেকে তারা বেরিয়ে আসতে চায় না।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বললেই তারা (আওয়ামী লীগ) তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে। কারণ তারা যে অবৈধ পথে সম্পদ অর্জন করেছে তারা মনে করে সেগুলো নিয়ে তারা থাকতে পারবে না। এই জন্য অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা উঠলেই তারা আঁতকে ওঠে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কড়া সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ওবায়দুল কাদের মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে বলেছে শিষ্টাচার মেনে চলতে আপনি (কাদের) সব শিষ্টাচার ধ্বংস করে শিষ্টাচারের কথা বলছেন এটা কি আপনার মুখে মানায়? আপনারা দেশের জনগণ ও বিরোধী দলের সঙ্গে যে শিষ্টাচার করছেন এগুলো কি আন্তর্জাতিক মহলের দৃষ্টির বাইরে? তারা তো শুধু অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছে এই বলাটাই শিষ্টাচারের বহির্ভূত বলে মনে করছে ওবায়দুল কাদের। আপনারা যে অত্যাচার নির্যাতন জুলুম করছেন এগুলো কি আন্তর্জাতিক বা বিভিন্ন দেশের নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত, সংগঠন আছে যারা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করে তারা কি জানে না? তারা এসব তথ্য সংগ্রহ করেই তারপরে তারা একটা মতামত দেয়। আর এই মতামত যদি সরকারবিরোধী হয় তাহলে তারা (সরকার) রাগান্বিত হয়।

বিএনপির এই নেতা বলেন, এই সরকার তার কর্তৃত্ববাদী শাসন এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে যে সরকারের বিরুদ্ধে টু শব্দ করলেও তার মহাবিপদ আছে।

তিনি আরও বলেন, কিছুদিন আগে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের এক প্রতিবেদনে বলেছে বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধী দল ও সমালোচকদের ওপর অব্যাহত আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে তাতে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজনটি অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর একটা এক তরফা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। আপনারা যে জাল জালিয়াতি করে নির্বাচন করছেন এটা পৃথিবীব্যাপী স্বীকৃত।

রিজভী অভিযোগ করে বলেন, বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের বিনা দোষে গ্রেফতার করেছে। নেতাকর্মীদের না পেলে তার ভাই বাবা-মা এমনকি স্ত্রীদেরকেও ধরে নিয়ে গেছে। পৃথিবীর কোনো দেশে সভ্যতা থাকলে কি এরকম করতে পারে? এটা করে ফ্যাসিস্ট ও নাৎসিরা।

তিনি আরও বলেন, অবরোধ ও হরতাল জনগণের সমর্থনে সফল হয়েছে। নেতাকর্মীরা তাদের জীবন বাজি রেখে রক্ষী সাঁড়াশি অভিযানের মুখেও রাস্তায় দাঁড়িয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবে অবরোধ পালন করেছে। সে জন্য তারেক রহমান নেতাকর্মীদের আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

(ওএস/এএস/ডিসেম্বর ০১, ২০২৩)

পাঠকের মতামত:

২৭ জুলাই ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test