E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

শিরোনাম:

মিয়ানমার ইস্যুতে বিএনপির নির্জলা মিথ্যাচার

২০২৪ ফেব্রুয়ারি ০৮ ১৮:২৮:৩৭
মিয়ানমার ইস্যুতে বিএনপির নির্জলা মিথ্যাচার

স্টাফ রিপোর্টার : মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ নিয়ে নির্জলা মিথ্যা ও অসত্য তথ্য তুলে ধরে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। 

বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে করে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে সাংবাদিকদের সামনে মিথ্যা ও অসত্য তথ্য তুলে ধরেন বিএনপি’র এইসিনিয়র নেতা।

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী অভিযোগ করেন, বাংলাদেশের নাইক্ষ্যংছড়িতে মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশী নাগরিকরা কেউই নিরাপদ নয়। নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পুরোপুরি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের চারপাশের সীমান্ত এলাকায় এখন রক্তক্ষয়ী খেলা চলছে। প্রতিবেশি দেশগুলোর অস্ত্রের আঘাতে মানুষের জীবনযাত্রা বিপন্ন। বাংলাদেশের মানুষের জীবন এবং ভূমি এখন অরক্ষিত। পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে দলে দলে মানুষ এবং অবৈধ অস্ত্র অনুপ্রবেশ হচ্ছে। এই অবস্থায় বাংলাদেশের সরকারের অভিসন্ধিমূলক নিরবতা মূলত দেশের মানুষকে নতজানু করার এক গভীর চক্রান্ত। প্রধানমন্ত্রীর শান্তির বাণী এখন দেশের সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলেছে। আমাদের সীমান্তরক্ষী বাহিনী প্রতিনিয়ত পিছু হঠছে আর তাতে করে বাংলাদেশের মানুষ প্রতিনিয়ত বিপদের সস্মুখীন হচ্ছে।

তিনি দাবি করেন, জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার আমলে বাংলাদেশের সীমান্ত ছিল সুরক্ষিত।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহসাচিব সংবাদ সম্মেলনে যে মিথ্যাচার ও অসত্য তুলে ধরেছেন তার বেশ কিছু দৃষ্টান্ত রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মিয়ানমারে যা ঘটছে তার সবই তাদের নিজেদের অভ্যন্তরীন বিষয়। বাংলাদেশের কূটনৈতিক নীতিঅনুযায়ী বাংলাদেশ কোনও রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীন বিষয় হস্তক্ষেপ করে না।

তবে যেহেতু বাংলাদেশ সীমান্তের কাছাকাছি আরাকান আর্মি ও দেশটির জান্তা সরকারের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সংঘাত চলছে, সঙ্গতকারণে বাংলাদেশেরসীমানার মধ্যে কিছু গুলি, মর্টারশেল এসে পড়ছে। এজন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমার সরকারকে কঠোর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
এর বাইরে বাংলাদেশ পুরো মিয়ানমার সীমান্তকে সীলগালা করেছে। মিয়ানমার থেকে কাউকে বাংলাদেশের ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়ার হচ্ছে না। বিশেষ করে রোহিঙ্গারা যাতে কোনোভাবেই বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে সে জন্য সীমান্তরক্ষীবাহিনী বিজিবি সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছে।

বিজিবির নতুন মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত এলাকা পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের বলেছেন, সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসছে। একইসঙ্গে তিনি বলেছেন, একজন রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না। সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত পুরোপুরি অরক্ষিত হয়ে পড়েছে বলে রিজভী যে অভিযোগ করেছেন তা ঢাহা মিথ্যা ও অসত্য। কারণ ওই সীমান্তে কঠোর নজরদারি রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত একজন রোহিঙ্গাও সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে ঢুকতে পারেনি।

বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীবাহিনী প্রতিনিয়ত পিছু হঠছে বলে রিজভী সংবাদ সম্মেলনে যে তথ্য তুলে ধরেছেন তারও কোনো ভিত্তি নেই। কারণ মিয়ানমার সীমান্তে বাংলাদেশের বডার গার্ড বাহিনী (বিজিবি) সার্বক্ষণিক সজাগ ও সতর্ক দৃষ্টি রেখে পাহাড়া দিচ্ছে। তাইপিঠু হটার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

জিয়াউর রহমান খালেদা জিয়ার শাসনামলে সীমান্ত সুরক্ষিত ছিলো বলে রিজভী যে দাবি করেছেন সেটিও নির্লজ্জ মিথ্যাচার। কারণ জিযাউর রহমানের শাসনামলেই বাংলাদেশে প্রথমবারের মত রোহিঙ্গারা প্রবেশ করে এবং সেই বোঝা এখনও বাংলাদেশকে বহন করতে হচ্ছে। আর খালেদা জিয়ার শাসনামল জুড়ে সীমান্তে ভারতীয় সশস্ত্র গোষ্ঠির উপস্থিতি বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকার জনপদের মানুষকে সার্বক্ষিণিক আতঙ্কের মধ্যে রেখেছিল।

রিজভী অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকায় রক্তক্ষয়ী খেলা চলছে। এই অভিযোগও ঢাহা মিথ্যা। কারণ সীমান্তের কোথাও এখন কোন সংঘাত-সংঘর্ষ চলছে না। এমন ঘটনা ঘটছেও না। মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতকে টেনে এনে বিএনপি শুধু মিথ্যাচার করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।

(ওএস/এসপি/ফেব্রুয়ারি ০৮, ২০২৪)

পাঠকের মতামত:

১৮ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test