E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

‘সংঘাতমূলক রাজনীতি গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের জন্য অশুভ’

২০১৫ জানুয়ারি ৩০ ১৫:২৪:৩৭
‘সংঘাতমূলক রাজনীতি গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের জন্য অশুভ’

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংঘাতমূলক রাজনীতি দেশের গণতন্ত্র ও সার্বভৌমত্বের জন্য অশুভ। তিনি বলেন, সংঘাতকারীদের ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিলে নাশকতার আগুন নিভে যাবে।

শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চিটাগং এর দ্বি বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজনীতিতে মানুষের ভালবাসা আছে। রাজনীতি করি জীবনের জন্য, জীবিকার জন্য নয়। আর রাজনীতি করে যদি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নেওয়া না যায় তবে সে রাজনীতি করে কোন লাভ নেই। আর সংঘাত মূলক রাজনীতি গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। রাজনৈতিক দল গুলোর মধ্যে দেওয়াল ভেঙ্গে সেতু তৈরি করতে হবে ।’

সেতুমন্ত্রী বলেন,দেশের যে অবস্থা চলছে তা রাজনীতি নয়। আর মানুষ পুড়িয়ে মারা আন্দোলনও নয়। রাজনীতি ও আন্দোলনের সংজ্ঞা অন্যরকম। কোন আন্দোলনে যদি জনগণের সম্পৃক্ততা থাকে তবে, সে আন্দোলন ঠিক আছে। কিন্তু বিএনপির আন্দোলনে জন সম্পৃক্ততা নেই। রাজনীতির নামে নাশকতা করা কোন বিবেকমান মানুষের কাছে কাম্য নয়।

একটি গোষ্ঠী দেশকে পাকিস্তানে পরিণত করতে চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশে যা চলছে তা পাকিস্তানে চলছে, তা ইরাকে চলছে। প্রতিদিন মানুষ মারা হচ্ছে। কিন্তু এ নিরীহ মানুষ গুলোর কি অপরাধ। রাজনৈতিক আন্দোলনকে আমরা সবাই সমর্থন করি কিন্তু বোমাবাজী করে পাকিস্তান রাষ্ট্রে পরিণত করার ষড়যন্ত্র সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে যারা এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ঘৃণার আগুন ছড়িয়ে দিতে হবে। নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে দল, মত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, চট্টগ্রামের উন্নয়ন ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন চিন্তা করা যায় না। তাই জাতীয় অর্থনীতির সুবিধার্থে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নে সজাগ দৃষ্টি রাখছেন। এ সরকারের সময়ে চট্টগ্রামের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আগামীতেও হবে।

আগামী জুন মাসের মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চারলেইন প্রকল্পের কাজ শেষ হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, জুনের পর থেকে চট্টগ্রাম থেকে মানুষ অল্প সময়ের মধ্যে ঢাকায় পৌঁছতে পারবে। আমরা দেশের চলমান পরিস্থিতিতেও এ মহাসড়কের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে কর্ণফুলি টানেলের চুক্তি এবং আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজও শুরু হবে।

তাছাড়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কটি চারলেইন, মিরসরাই থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত মেরিন ড্রাইভ সড়ক এবং চট্টগ্রামের সাথে চীনের সড়ক যোগাযোগসহ বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কথা ঘোষণা করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী।

ওবায়দুল কাদের বলেন, যেকোন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকেন সাংবাদিকরা। রাজনৈতিক দলের নেতারা আন্দোলনের ডাক দিয়ে ঘরে এসি রুমে বসে আরাম করেন। আর তাদের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা নাশকতা সৃষ্টি করে। রাজনৈতিক দলের নেতারা ঘরে বসে থাকলেও পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে সেখানে ছুটে যেতে হয় সাংবাদিক ভাইদের। যারা জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা না করে প্রতি মূহুর্তের খবর আমাদের কাছে পৌঁছে দেন। তাদের পরিবার আছে, সংসার আছে। তাই সরকারের উচিত তাদের ঝুঁকি ভাতা প্রদান করা। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলাপ করবেন এবং মন্ত্রী পরিষদের সভায়ও উত্থাপন করবেন বলেও জানান মন্ত্রী।

এ সরকারের আমলে দেশে সব ধরণের উন্নয়ন হচ্ছে উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, দেশে পদ্মাসেতু হচ্ছে,মেট্রোরেল হচ্ছে কিন্তু দুর্ঘটনা কমছে না। রাস্তায় এখন যানজটের চেয়ে জনজট বেশি। অসর্তক অবস্থায় রাস্তা অতিক্রম, মোবাইল ফোনে কথা বলে সড়ক অতিক্রম করার মাধ্যমে সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ছে। দুর্ঘটনা কমানোর জন্য সকলকে সচেতন হতে হবে।

জাতীয় সংসদের স্পিকারকে ধন্যবাদ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আমি কিছুদিন পূর্বে সংসদে বলেছি সংসদ সদস্যদের ভুয়া স্টিকার লাগিয়ে কিছু মানুষ ট্রাফিক আইন অমান্য করে গাড়ি চালাচ্ছে। এ কারণে দুর্ঘটনা বাড়ছে। স্পিকার এ ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। সংসদ সদস্যদের জন্য আলাদা স্টিকার তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

ভুয়া সংসদ সদস্যের মত ভুয়া সাংবাদিকও রয়েছে। ভুয়া সাংবাদিকরা বিভিন্ন স্টিকার লাগিয়ে আইন অমান্য করছে। তাদের সংখ্যা কম হলেও তারা সাংবাদিকতা পেশাকে কলুষিত করছে। তাই সাংবাদিকদেরকে এদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।

টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চিটাগং এর সভাপতি শামসুল হক হায়দরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ‍আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস,মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহনেওয়াজ । তাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন চিটাগং এর সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ। মন্ত্রী চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের উন্নয়নে আশ্বাস দেন এবং টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের কল্যাণ তহবিলে ২ লক্ষ টাকা অনুদান ঘোষণা করেন।

(ওএস/এএস/জানুয়ারি ৩০, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

১৭ মে ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test