E Paper Of Daily Bangla 71
World Vision
Technomedia Limited
Mobile Version

খালেদার ‘নাশকতার নির্দেশ’ (অডিওসহ)

২০১৫ ফেব্রুয়ারি ০২ ১৬:১৭:৪৬
খালেদার ‘নাশকতার নির্দেশ’ (অডিওসহ)

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা : বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মোবাইলে গোপন কথোপকথন নিয়ে মন্ত্রিসভায় তোলপাড় হয়েছে।

সোমবার সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে খালেদা জিয়ার বেশ কয়েকটি মোবাইলে গোপন কথোপকথনের অডিও বার্তা শোনানো হয়।

এক অডিওতে খালেদা জিয়া মোবাইলে চট্টগ্রামের এক নেতাকে বলেন, ‘আপনার এটা করেন, খসরুর বাধা শোনবেন না। বাধা দিলে তাকে বের করে দেবো।’ এ অডিও রেকর্ডসহ খালেদা জিয়ার আরো কিছু দিকনির্দেশনামূলক মোবাইল কথোপকথন মন্ত্রিসভায় বাজিয়ে শোনানো হয়।

তবে খালেদা জিয়ার এসব কথোপকথন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোনো মন্তব্য না করলেও, মন্ত্রিসভার অনেক সদস্যই বলেছেন- ‘এটি চিহ্নিত করা উচিৎ।’

বাংলা লিকস নামের একটি একাউন্ট থেকে আপলোড করা এসব কথোপকথন সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। খালেদার এসব নির্দেশ নাশকতা ঘটনোর উদ্দেশ্যেই-এমন কথা রয়েছে অডিও ফাইলগুলোর শিরোনামে।

বাংলা লিকস খালেদার যে পাঁচটি কথোপকথন প্রকাশ করেছে, তার চারটিই ওই সমাবেশ শুরুর আগে কয়েকজন নেতার সঙ্গে খালেদার কথোপকথন শোনা যায়।

কথোপকথন ১-অন্য প্রান্ত থেকে খালেদা জিয়ার কাছে জানতে চাওয়া হয়- “ম্যাডাম, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রোগ্রামটা কি অন থাকবে?”

তখন খালেদাকে বলতে শোনা যায়- “এখন পর্যন্ত অন থাকবে। কিন্তু ওখানে কেউ থাকবে না। ছেলে-পেলেরা সব রাস্তায় থাকবে। ভেতরে কাউকে আমি দেখতে চাই না। ছেলেরা সব রাস্তায় যাবে।”

ঢাকা মহানগর বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক সাদেক হোসেন খোকা ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালামকে ‘লোক নামানোর’ নির্দেশও দিতে শোনা যায় খালেদাকে।

“খোকা আর সালামকে বলে দেন, বেশি করে লোক নামাতে। ওরা যদি লোক নামাতে না পারে, দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নিক। আমি রাস্তায় লোক দেখতে চাই।”

এরপর খালেদাকে বলতে শোনা যায়- “আপনি কি ওদের সঙ্গে কথা বলেছেন।”

অন্য প্রান্ত থেকে যখন ‘জ্বি’ বলে আরও কিছু বলা শুরু হয়, তখন তাকে থামিয়ে দেন বিএনপি চেয়ারপারসন।

“না না, ওই যে, অন্যদের, আপনি যাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওরা এখনো নামেনি কেন?...আরও নামাতে বলেন।

“আমাদের লোকজনদের বল, সব প্রেস ক্লাব ও ইঞ্জিনিয়ার (ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন) ছেড়ে রাস্তায় চলে যাও। কাউকে আমি ওখানে দেখতে চাই না। ওখানে শুধু মুক্তিযোদ্ধা যেগুলো আসছে, ওগুলো থাকবে। আর সব রাস্তায়।”

কথোপকথন ২-তৎকালীন মহানগর বিএনপি সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালামকে খালেদা বলেন, “তাড়াতাড়ি করে যত পার পাঠাও লোক। দেরি করো না, দেরি করলে অসুবিধা হয়ে যাবে। বুঝছ।”

কথোপকথন ৩-বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীকে সক্রিয় করতে একজনকে নির্দেশ দেন খালেদা।

“জামায়াতকে বলেন, ওদের লোকজন নামাই দিতে বলেন। শুধু ঢাকায় না, সব জায়গায়।... আর মৃদুলকে বলেন যে ও ওর জায়গাটা ভাল করে করতে।”

কথোপকথন ৪-কথোপকথনটি খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাদেক হোসেন খোকার।

খালেদা বলেন, “আপনার কমিশনারদের বলুন, যার যার এলাকায় নিয়ে যাক। রাস্তাগুলো ব্লক করে দিক আর কী।...এলাকা ভিত্তিক।”

কথোপকথন ৫-চট্টগ্রামের গোলাম আকবর খন্দকারের সঙ্গে চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি নিয়ে কথা বলেন, যাতে নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেনের নাম এসেছে।

ডা. শাহাদাত দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত।

খালেদাকে বলতে শোনা যায়, “শাহাদাতকে বলেছি, একটা কাজের দায়িত্ব দিয়েছি। খসরু যেন কোনো কাজে বাধা না দেয়, তাকে এই মেসেজ দেন।”

অন্য প্রান্ত থেকে কিছু বলতে চাইলে খালেদা বেশ জোরের সঙ্গে বলেন, “সে বাধা দিচ্ছে, আপনি তাকে বলে দেন। বলে দেন যে কোনো কাজে বাধা দেবে না। বাধা দিলে আমি ইমিডিয়েটলি রিমুভ করব তাকে।

এক পর্যায়ে অন্য প্রান্তের ব্যক্তির ওপর বিরক্ত হয়ে খালেদা বলেন, “আপনি ডিপ্লোমেট (গোলাম আকবর খন্দকার খালেদার শাসনামলে ওমানের রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন) ছিলেন, বাট ইউ ডোন্ট নো হাউ টু টক।

“আপনি ইমিডিয়েটলি খসরুকে বলেন, কোনো বাধা দেবে না, বুঝছেন কি না।”

খালেদা ছাড়াও বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান, সাদেক হোসেন খোকা, মারুফ কামাল খানখালেদা জিয়ার কার্যালয়ের দুজন কর্মচারীকেও টেলিফোনের অন্যপ্রান্তে নাশকতা চালানোর নির্দেশ দেওয়া সম্বলিত কথোপকথন পাওয়া যাচ্ছে ইউটিউবটির ওই একাউন্টে।


(এসএস/অ/ফেব্রুয়ারি ০২, ২০১৫)

পাঠকের মতামত:

২০ এপ্রিল ২০২৪

এ পাতার আরও সংবাদ

উপরে
Website Security Test